ক্রমে ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে আমফান। যা গতিবিধি ঝড়ের মনে করা হচ্ছে উত্তরবঙ্গেও এর প্রভাব ফেলবে। পথ অনুযায়ী প্রথম থেকে এর দিকে নজর ছিল আবহাওয়াবিদদের। তখন মনে হয়নি এই ঝড় উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত যেতে পারে। কিন্তু যত সময় এগিয়েছে ততও এর গতিপথ বাংলার দিকে হয়েছে। বাঁক নিয়ে আসার পর এর আসল পরিবর্তনটি হয়েছে।
সদ্য আলিপুর আবহাওয়া দফতরের (Alipore weather Report)যে আপডেট সেখানে দেখা যাচ্ছে ঝড় কোচবিহারের গা ঘেঁষে যেতে পারে। যে সবুজ লাইন দিয়ে আমফানের গতিপথ দেখিয়েছে হাওয়া সেই পথই এবার উত্তরবঙ্গকেও ভয় দেখাচ্ছে। এর পড়ে যদি পাহাড়েও গিয়ে হালকা ছোবল মারে সাগরের ঘূর্ণিঝড় তাতেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ গতিপথ এবং আমফানের দূরত্ব ‘কভার; করার প্রবণতা সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। সমগ্র পশ্চিমবঙ্গেই এই ঝড় প্রভাব ফেলতে পারে।
আপাতত সাইক্লোনের মূল টার্গেট কলকাতা। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, দিঘা ও হাতিয়া দ্বীপের মাঝে আছড়ে পড়ার পর এই ঝড় ক্রমে এগিয়ে যাবে উত্তর ও উত্তর পূর্ব দিকে। যা আসবে কলকাতার পাশ দিয়েই। দিঘা থেকে এখন এর দূরত্ব ১২৫ কিলোমিটার দূরে আমফান , কলকাতা থেকে ২২০ কিলোমিটার। এত দূরত্ব অতিক্রম করেও এর তীব্রতা খুব একটা কমেনি। এমনটাই জানাচ্ছে হাওয়া অফিসের তথ্য।
শেষ ঘন্টা মাফিক আপডেট অনুযায়ী ঝড়ের গতিবেগ ১৫৫-১৬৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টাই রয়েছে। ১৮৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা এর সর্বোচ্চ গতি। কলকাতার উপর দিয়ে সর্বোচ্চ ১৩০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে৷ এর ফলে কলকাতাকেও লন্ডভন্ড করতে পারে ঘূর্ণিঝড়৷ শহরের বিপজ্জনক বাড়ি ও প্রচুর গাছ ভেঙ্গে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা ৷ তাই বিপজ্জনক বাড়ি থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে৷ এছাড়া বুধবার বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, কলকাতা-সহ ৭ জেলাকে লন্ডভন্ড করতে পারে ঘূর্ণিঝড়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে দুই ২৪ পরগনা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে পূর্ব মেদিনীপুর। কলকাতা ও উপকূলবর্তী জেলায় বইছে ঝোড়ো হাওয়া৷
এদিকে রীতিমত জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে দিঘায়। বড় বড় ঢেউ চোখে পড়ছে সেখানে। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, এর জেরে সব ধরনের কাঁচা বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। পুরনো বাড়িগুলিরও কিছু ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি যোগাযোগ ও বিদ্যুতের খুঁটিগুলি উপড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ব্যাপক ঘূর্ণিঝড়ে বিভিন্ন স্থানে রেল লাইন ও রাস্তা সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকছে বলে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ফসল ও বাগানেরও ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খেজুর এবং নারকেল গাছ বেঁকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে। বড় বড় গাছও উপড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।