পাহাড়ের জনসভায় বিজেপিকে কীভাবে আক্রমণ করবেন, তা নিয়ে যেন বিব্রত দেখাল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে! দার্জিলিং-এর মোটরস্ট্যান্ডের সভা থেকে তৃণমূল নেত্রী কখনও আক্রমণ করেন নরেন্দ্র মোদিকে, কখনও সুরিন্দর সিংহ আলুওয়ালিয়াকে। আবার কখনও টেনে আনলেন এনআরসি প্রসঙ্গ। কীসের বিনিময়ে তিনি পাহাড়ের মানুষের ভোট চান, তাও স্পষ্ট করতে পারলেন না মমতা!
এদিন মমতা বলেন, ‘বিজেপি গত পাঁচ বছরে কিছুই করেনি। এখানকার সাংসদ জেতার পর এক বারও দার্জিলিং আসেননি।’’ আচমকাই তিনি বলেন, ‘‘কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু চাকরি তো হয়ইনি, উল্টে বহু লোক চাকরি খুইয়েছেন।’’ অসমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী হওয়ায় বহু মানুষ যে বিপদে পড়েছেন, সে-কথা স্মরণ করিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘এ রাজ্যে কিছুতেই নাগরিকপঞ্জী করতে দেব না।’’ মোদিকে খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘‘আগে দিল্লি সামলান, তারপর বাংলার কথা ভাববেন।’’ এদিন অমিত শাহ-র সভা ছিল কালিম্পং-এ, সে কথা তুলে মমতা বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে এক বারও দেখা যায়নি, এখন কালিম্পং-এ এসে বড় বড় কথা বলছেন।’’ এদিনের সভায় মমতার বারবার বক্তৃতার খেই হারানোর যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলেই মনে করছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল।
উল্লেখ্য, পাহাড়বাসীর দাবি মেনে সুরিন্দর সিংহ আলুওয়ালিয়ার বদলে বিজেপি প্রার্থী করেছে বছর ৪২-এর যুবক রাজু সিংহ বিস্তকে। মুখ বদলের পাশাপাশি, রাজু সিংহ বিস্তকে সমর্থন করেছে মোর্চার বিমল গুরুঙ্গ গোষ্ঠী। সঙ্গে সুবাস ঘিসিং-এর পুত্র মন ঘিসিং-এর নেতৃত্বে জিএনএলএফ-এর সমর্থনও রয়েছে বিজেপি প্রার্থীর দিকেই। অনেক আশা নিয়ে ঘুঁটি সাজালেও দার্জিলিং-এর ফের হারের সম্মুখীন হতে হবে তৃণমূলকে, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সেই ভাবনা থেকেই এদিন বক্তব্যে বারবার খেই হারিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে সমর্থন করেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিনয় তামাং গোষ্ঠী। এই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী করেছে শঙ্কর মালাকারকে।
অন্যদিকে দার্জিলিং-এ এবার তৃণমূলের প্রার্থী অমর সিংহ রাই। তাঁকে সমর্থন করেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিনয় তামাং গোষ্ঠী। বামেদের হয়ে দাঁড়িয়েছেন সিপিএমের সমন পাঠক। দার্জিলিং কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে দ্বিতীয় দফায়, আগামী ১৮ এপ্রিল। তার সঙ্গে ওই দিন এ-রাজ্যের জলপাইগুড়ি এবং রায়গঞ্জের আসনেরও ভোটগ্রহণ রয়েছে।