নকুলদানা যে ঠাকুরের থালা থেকে ভোটের ময়দানে আসতে পারে, তা বোধহয় অনুব্রত মণ্ডল না থাকলে জানাই যেত না। এ বার ভোটের বাজারে সেই নকুলদানার পাল্টা হিসেবে বিজেপি আনল মোয়া।
বুধবার হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি পার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মনোনয়ন ছিল। সেই উপলক্ষেই হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়াতে মোয়া বিলি করলেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। চিঁড়ের মোয়া, মুড়ির মোয়া বানিয়ে এনে তা দেওয়া হল পথ চলতি মানুষ এবং স্থানীয় দোকানদের। এমনকী বাদ গেলেন পুলিশকর্মীও। দেখা যায় এক মহিলা পুলিশকর্মীকে মোয়া দিচ্ছেন এক গেরুয়া শিবিরের কর্মী। প্রথমটা না না করলেও, পরে তা নিয়েই ফেলেন ওই পুলিশকর্মী। যে সে মোয়া নয়, এক্কেবারে কিং সাইজ মোয়া।
বিপুল জমায়েত নিয়ে এ দিন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেনারেল)-এর কাছে মনোনয়ন জমা দেন রাজ্য বিজেপি-র মহিলা মোর্চার সভানেত্রী। ঢাক বাজিয়ে, গানের তালে নাচতে নাচতে বর্ণাঢ্য মিছিল হয় এ দিন। আগামী ৬ মে ভোটগ্রহণ হবে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে। লকেটের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের রত্না দে নাগ। গত দশ বছরের সাংসদও তিনি।
যদিও মোয়াকে নকুলদানার পাল্টা হিসেবে দেখাতে চাননি লকেট। তাঁর কথায়, “বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে মোয়ার একটা যোগ রয়েছে। এখন তো বাংলা মানেই সন্ত্রাস আর গুন্ডামি। আমরা মোয়া বিলি করে সেটাকেই পাল্টানোর বার্তা দিয়েছি মাত্র।” প্রার্থী মুখে এ কথা বললেও বিজেপি কর্মীরা অবশ্য অনুব্রতর দাওয়াইয়ের পাল্টা হিসেবেই মোয়াকে ব্যাখ্যা করছেন। চুঁচুড়া মণ্ডলের এক বিজেপি নেতার কথায়, “একেকটা মোয়ার যা সাইজ, তাঁর ধারেকাছে নকুলদানা আসবে না।”
এমনিতেই প্রচারে ঝড় তুলেছেন লকেট। শেষ তিন চার দিনে তৃণমূল প্রার্থী রোড শো বা প্রকাশ্য প্রচার শুরু করলেও, এতদিন তিনি ভিতরকার কোন্দল মেটাতেই ব্যস্ত ছিলেন। তার মধ্যেই সিঙ্গুর, ধনেখালি, পাণ্ডুয়া, বলাগড় সহ লোকসভা কেন্দ্রের সবকটি বিধানসভা চষে ফেলেছেন।
লকেটের মোয়া বিতরণে অবশ্য খুব একটা পাত্তা দিচ্ছে না তৃণমূল। শাসক দলের এক নেতার কথায়, “ওরা জানে জিতিবে না। তাই আগেই মিষ্টি মুখ করে নিচ্ছে। আমাদের উৎসব তো ২৩ মে। সে দিন দেখবেন ওদের আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।”