১৯৫১ সাল থেকে প্রতিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে শ্যামশরণ নেগি। ইনিই ভারতের প্রবীণতম ভোটার। এখন বয়স ১০২। হিমাচল প্রদেশের বরফে ঢাকা কল্প গ্রামের বাসিন্দা নেগি আজ পর্যন্ত কোনও বার কোনও ভোট দানে বিরত থাকেননি। ১ থেকে শুরু করা ভোটার ১৭তম সাধারণ নির্বাচনে অংশ নিতে তৈরি।
১৯৫১ সালে হিমাচলের কিন্নৌর অঞ্চলে একটি নির্বাচনে প্রথম অংশ নেন তিনি। এর পরে প্রথম সাধারণ নির্বাচন ১৯৫২ সালে। আর কোনও বিরতি নেই। বয়স হওয়ার জন্য ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময়ে তিনি ‘এটাই হয়তো শেষ ভোট’ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু না। বয়সের ভারকে হারিয়ে ফের ভোট দেওয়ার জন্য তৈরি নির্বাচন কমিশনের তালিকা অনুযায়ী দেশের প্রবীণতম ভোটার।
২০১৪-র ভোটে নির্বাচন কমিশন বিশেষ ব্যবস্থাও করেছিল শ্যামশরণ নেগির জন্য। রেড কার্পেট বেছানো হয়েছিল ভোটকেন্দ্রে। স্থানীয় বাদ্যযন্ত্রে বুথে স্বাগত জানানো হয়েছিল নেগিকে। ফুলের মালা নিয়ে হাজির ছিলেন জেলার রিটার্নিং অফিসার। বাড়ি থেকে বুথ এবং ভোটদান গোটা প্রক্রিয়া ভিডিও রেকর্ড করেও রাখা হয়।
নিজের একটা দু’কামরার পাথর আর কাঠের তৈরি ঘর। বেশির ভাগ সময়ে সেই বাড়ির ছাদেই বসে থাকেন নেগি। পছন্দের খাবার ঘন দুধের খুব মিষ্টি চা। শীতের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে বছরের পর বছর একটা ব্রাউন রঙের উলের কোট। এক সময়ে স্থানীয় স্কুলের শিক্ষক গান্ধীজির ভক্ত নেগি নিজের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে চরকা কাটতেন। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সেটা চলেছে। এখন অবশ্য নাতি নাতনিদের নিয়ে ভরা সংসারে অবসর যাপন করেন তিনি। ভোট দিতে যাবেন কলেজ পড়ুয়া নাতনি আর স্ত্রীকে নিয়ে।
গোড়া থেকে ভারতীয় গণতন্ত্র ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সাক্ষী শ্যামশরন নেগি বরাবর কংগ্রেস সমর্থক ছিলেন। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই নরেন্দ্র মোদীর ভক্ত হয়ে ওঠেন। ২০১৪ সালে তিনি বলেছিলেন, “জানি না, এটাই আমার শেষ ভোট কিনা! তবে তার আগে নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী দেখে যেতে চাই।”
২০১০ সালে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী প্রবীণতম এই ভোটারের বাড়িতে যান তৎকালীন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নবীন চাওলা। ২০১০ সালে গুগল ইন্ডিয়া এখনও জীবিত স্বাধীন ভারতের প্রথম ভোটারকে সম্মান জানাতে একটি ভিডিও তৈরি করে। দেখুন সেই ভিডিও।