দুদিন আগে কোচবিহারের জনসভা থেকে রাজ্যের ছাত্র এবং যুব সমাজকে এক হতে বলেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। তাঁর সাথে উনি বিজেপিকে ছাত্র খুনি বলেও আখ্যা দিয়েছিলেন তিনি। বিজেপির বিরুদ্ধে ছাত্র খুনের অভিযোগ তুলে ‘ ছাত্র মেরে ছাত্র প্রেম, বিজেপি শেম শেম ” এর স্লোগানও তুলেছিলেন মাননীয়া মমতা ব্যানার্জী।
তিনি কোচবিহারের সভা থেকে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন যে, তিনি এবং ওনার দল তৃণমূল ছাত্র প্রেমী। কিন্তু এই তৃণমূলের হাতই বহু ছাত্রের রক্তে রাঙা, সেটা তিনি ভহুলে গেছেন। এর আগে বিভিন্ন কলেজে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আর তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের আক্রমণে রাজ্যে অনেক ছাত্রকে প্রাণ হারাতে হয়েছে। তা ছাড়াও রাজ্যের কলেজ গুলোতে ভর্তির দিনে ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে তোলা তোলারও প্রচুর অভিযোগ রয়েছে এই তৃণমূলের বিরুদ্ধেই। আর এরপরেও মমতা ব্যানার্জী নিজেকে ছাত্র প্রেমী প্রমাণ করতে ব্যাস্ত।
এরকম আরেকটি তৃণমূলের নৃশংসতার ঘটনা সামনে এলো তারকেশ্বরের বালিগোড়ি ১ নম্বর পঞ্চায়েতের বাসুদেবপুর গ্রাম থেকে। অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে ঝড় বৃষ্টির সময় বাসুদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা অরূপ পাত্রের বাড়িতে বিদ্যুতের তার ছিড়ে পড়ে।
বিদ্যুৎ দফতরে ফোন করে কোন জবাব না পেলে, অবশেষে তিনি নিজেই বিদ্যুৎ দফতরে জান। বিপদের আশঙ্কায় তিনি নিজেই ট্র্যান্সফার্মারে গিয়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে ট্র্যান্সফার্মারে তালা লাগিয়ে দেন।
ট্র্যান্সফারে তালা ঝোলা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ওই অঞ্চলের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী রাজেশ দাস ও দেওর বিশ্বজিত্ দাস। ক্ষোভের চোটে তাঁরা অরুপ পাত্রের বাড়িতে গিয়ে হামলাও চালায়। মারধর করা হয় অরুপ পাত্রকে।
বাবাকে লোকের হাতে মার খেতে দেখে এগিয়ে আসে দশম শ্রেণীতে পাঠ্যরত অরুপ পাত্রের ছেলে সৌরভ। অভিযোগ, তৃণমূলের দুই নেতা অরুপ পাত্রের সাথে সাথে তাঁর ওই বাচ্চা ছেলেটিকেও মারধর করে। তৃণমূল নেতাদের হাতের মার সহ্য হয়নি ছোট্ট সৌরভের। ঘটনাস্থলেই অচৈতন্য হয়ে পড়ে সে। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা সৌরভকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
অরুপ পাত্রের পরিবার থেকে তৃণমূলে ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে তারকেশ্বর থানার পুলিশ। এই ঘটনার পর আবারও তৃণমূলের ছাত্র প্রেম এবং মানবতার মুখোশ সবার সামনে খুলে গেলো!