লোকসভা নির্বাচন শুরুর ক’দিন আগেই দেশ জুড়ে বিরোধীদের বন্ধু-আত্মীয়দের বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে আয়কর দফতর। বিরোধীরা একবাক্যে অভিযোগ করেছেন, তাঁদের হেনস্থা করার জন্য আয়কর দফতরকে কাজে লাগানো হচ্ছে। মোদী সরকারের উদ্দেশ্য বিরোধীদের প্রচারে বাধা দেওয়া।
গত রবিবার নির্বাচন কমিশন রাজস্ব দফতরকে চিঠি দিয়ে বলে, আয়কর হানার পিছনে যেন রাজনীতি না থাকে। আয়কর অফিসাররা যেন তল্লাশির আগে আমাদের খবর দেন। রাজস্ব দফতর থেকে চিঠির জবাবে বলা হয়েছে, আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সহমত যে, রাজনীতি নির্বিশেষে তল্লাশি করা উচিত। কিন্তু তল্লাশির আগে নির্বাচন কমিশনকে কি জানানো হবে? এ ব্যাপারে চিঠিতে একটিও কথা নেই।
নির্বাচন কমিশন এই আয়কর হানার বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য আয়কর দফতরের প্রধান ও রাজস্ব সচিবকে ডেকে পাঠিয়েছে। মঙ্গলবারই তাঁরা আলোচনায় বসতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে। বিরোধীরা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত যাঁদের বাড়ি বা অফিসে আয়কর তল্লাশি হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আছেন বহুজন সমাজ পার্টির প্রধান মায়াবতী, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী এবং মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের ঘনিষ্ঠরা। রাজস্ব সচিব এ বি পান্ডে ও সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডায়রেক্ট ট্যাক্সেসের চেয়ারম্যান পি সি মোদী নির্বাচন কমিশনের কাছে ব্যাখ্যা করবেন, কেন ওই ব্যক্তিদের বাড়িতে বা অফিসে তল্লাশি করা জরুরি ছিল।
রাজস্ব দফতর থেকে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে ইতিমধ্যে বলা হয়েছে, গোয়েন্দাদের দেওয়া নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আমরা তল্লাশি করি। আমরা জানি ‘নিরপেক্ষ’ শব্দটির অর্থ কী। কারও বাড়িতে বা অফিসে তলাশির আগে আমরা রাজনীতির রং দেখি না।
রাজস্ব দফতর থেকে নির্বাচন কমিশনকে বলা হয়েছে, আপনাদের ফিল্ড অফিসাররা যদি ভোটে বেআইনি অর্থের লেনদেন নিয়ে কোনও তথ্য পান, আমাদের যেন জানিয়ে দেন। তবেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
এর মধ্যে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, তিনি আশঙ্কা করছেন, শিবগঙ্গায় তাঁর বাড়িতে শীঘ্র হানা দেবেন আয়কর দফতরের অফিসাররা। কারণ ওই লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন তাঁর ছেলে কার্তি চিদম্বরম। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী টুইট করেন, আমি শুনেছি, চেন্নাইয়ের শিবগঙ্গায় আমার বাড়িতে আয়কর হানার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আমরা তদন্তকারীদের স্বাগত জানাব।
আয়কর দফতর থেকে বলা হয়েছে, তল্লাশির সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। রাজনীতিকরা যেন এই ধরনের ভিত্তিহীন মন্তব্য না করেন।