পুলওয়ামা হানায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল আমারও। একথা জানাল জঙ্গি সংগঠন জইশ ই মহম্মদের কম্যান্ডার নিসার আহমেদ তন্ত্রে। গত রবিবারই সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে বন্দি করে আনা হয়েছে তাকে। জেরায় নিসার বলেছে, ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় যে হামলা হবে সে জানত। ওই হামলার মূল চক্রী মুদাসির খান তাকে বলেছিল, ভারতে এক ‘চমকপ্রদ’ আক্রমণের ছক কষা হচ্ছে। পাকিস্তানে জইশ ই মহম্মদের কর্তারা ওই আক্রমণ চালাতে নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলওয়ামা হানায় তাকেও যুক্ত হতে বলা হয়েছিল বলে জানিয়েছে নিসার। এই প্রথমবার কোনও জইশ নেতা স্বীকার করল, পুলওয়ামা হানার ষড়যন্ত্র করেছিল তারাই। সেই ষড়যন্ত্র কার্যকর করার দায়িত্বে ছিল মুদাসির খান। এর আগে ভারতের গোয়েন্দারা গোপন সূত্র থেকে খবর পেয়েছিলেন, ওই হামলার পিছনে আছে জইশ। জঙ্গি সংগঠনের নিচুতলার কয়েকজনকে জেরা করেও একই কথা জানা গিয়েছিল।
নাসিরের দাদা নুর আহমেদ তন্ত্রেও জইশের জঙ্গি ছিল। সে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মারা যায়। নাসির নিজে গত ১ ফেব্রুয়ারি ভারত ছেড়ে পালায়। নির্দিষ্ট সূত্রে খবর, কাশ্মীর উপত্যকায় যুবকদের ওপরে নাসিরের ভালো প্রভাব ছিল। ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর লেথপোরার সিআরপিএফ ক্যাম্পে হামলার প্রধান চক্রী ছিল সে।
জেরায় নাসির বলেছে, মুদাসির খান সোস্যাল মিডিয়ার অ্যাপ ব্যবহার করে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাকে জানায়, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পুলওয়ামার কোথাও বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি নিয়ে হামলা চালানো হবে। নিরাপত্তারক্ষীদের কোনও কনভয় হবে তাদের লক্ষ।
বিস্ফোরণের উপযোগী যন্ত্রপাতি যোগাড় করে দেওয়ার জন্য নাসিরকে বলে মুদাসির। সে বলে, তুমি যদি এই ছক কার্যকর করতে উদ্যোগ নাও তাহলে ভালো হয়। তোমাকে দেখে ছেলেরা উৎসাহ পাবে।
নাসিরের দাবি, সে মুদাসিরের কথা শোনেনি। পুলওয়ামা হামলার সময় সে ছিল দুবাইয়ে। যদিও তার কথা বিশ্বাস করছেন না তদন্তকারীরা। তাকে আরও কয়েকদিন জেরা করা হবে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জাতীয় সড়কের ওপর বিস্ফোরক ভর্তি ট্রাক নিয়ে সিআরপিএফ কনভয়ে ধাক্কা মারে এক আত্মঘাতী জঙ্গি। ৪০ জনের বেশি সিআরপিএফ কর্মী নিহত হন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বাধার উপক্রম হয়।
ভারতের বায়ুসেনা পাকিস্তানের সীমা অতিক্রম করে বালাকোটে জঙ্গি ঘাঁটিতে বোমাবর্ষণ করে আসে। পরদিন ভারতে ঢুকে পড়ে পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান। তাদের আক্রমণ করতে গিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে যান মিরাজ বিমানের চালক, উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। তাঁর বিমান ধ্বংস হয়। তিনি পাকিস্তানের জওয়ানদের হাতে বন্দি হন। চাপের মুখে তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান।