লোকসভা ভোট শুরু হতে বাকি তিনদিন। কয়েকদিন আগেই ইস্তাহার প্রকাশ করেছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। সোমবার ইস্তাহার প্রকাশ করল কেন্দ্রে শাসক দল বিজেপি। ইস্তাহারের নাম সংকল্প পত্র। তাতে কৃষকদের রোজগার দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সেনাবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করে তোলা, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি ও সন্ত্রাসবাদ দমনের কথাও বলা হয়েছে।
ইস্তাহার প্রকাশের সময় বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ বলেন, ভারত এখন বিশ্বে এক মহাশক্তি। ২০০৪ থেকে ’১৪ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের সম্মান কমে গিয়েছিল। কিন্তু এখন আমাদের দেশ বিশ্বের প্রধান ছ’টি অর্থনীতির অন্যতম। অমিতের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সমাজের প্রতিটি অংশের প্রতি ন্যায়বিচার করেছেন। তিনি গ্রামে রান্নার গ্যাস পৌঁছে দিয়েছেন, সবার জন্য সস্তায় স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা করেছেন, কৃষকদের জন্য কল্যাণমূলক প্রকল্প এনেছেন।
দুর্নীতি দমন ও সন্ত্রাসবাদ বিরোধিতার কথাও তুলেছেন অমিত। তিনি বলেন, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তোলার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী একটা দুর্নীতিও হতে দেননি। সন্ত্রাসবাদের মূলে আঘাত করেছেন তিনি। সারা বিশ্বকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, সীমান্তের ওপার থেকে যদি কেউ অশান্তি ছড়াতে চেষ্টা করে, পার পাবে না।
মোদী বলেন, জাতীয়তাবাদ আমাদের প্রেরণা, সমাজের দুর্বল অংশের ক্ষমতায়ন আমাদের লক্ষ, সুশাসন আমাদের মন্ত্র।
ইস্তাহারে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য দ্রুত প্রতিরক্ষার সরঞ্জাম কেনা হবে। সন্ত্রাসবাদের প্রতি জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হবে। নিরাপত্তা রক্ষীদের আগের মতোই অবাধ স্বাধীনতা দেওয়া হবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দফায় দফায় জাতীয় নাগরিকপঞ্জি করা হবে। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে অনুপ্রবেশ বন্ধের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। সংবিধানের ৩৭০ ধারার বিলোপ করা হবে।
কৃষকরা সুদ ছাড়াই ঋণ পাবেন। তাঁদের এক থেকে পাঁচ বছরের মেয়াদে বিনা সুদে ঋণ দেওয়া হবে। ২০২২ সালের মধ্যে সব পরিবারের জন্য পাকা বাড়ির ব্যবস্থা করা হবে।
ইস্তাহার প্রকাশের সময় মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন অমিত শাহ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। অমিত শাহের দাবি, গত পাঁচ বছরে প্রধানমন্ত্রী দেশের স্বার্থে ৫০ টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সংকল্প পত্র তৈরির জন্য বিজেপি ছ’কোটি মানুষের পরামর্শ নিয়েছে।
রাজনাথ সিং বলেন, রাজনৈতিক দলগুলি তাদের ইস্তাহারে বড় বড় প্রতিশ্রুতি দেয়। পরে পালন করে না। তাদের কেউ বিশ্বাস করে না। আমরা এই অবিশ্বাসের মনোভাব কাটিয়ে তুলতে অনেকাংশে সফল হয়েছি।
তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, ক্ষমতায় এলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রামমন্দির নির্মাণের চেষ্টা করবেন।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির দাবি, আমাদের সরকার অনেক কাজ করেছে। ২০১৪ সালে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা পূরণ করেছি। এদিন এমন এক সরকার ইস্তাহার প্রকাশ করছে যারা অতীতে প্রতিশ্রুতি পালন করেছে। ‘টুকড়ে টুকড়ে’ মানসিকতা নিয়ে এই ইস্তাহার প্রকাশ করা হয়নি।