লোকসভার প্রথম দফার ভোটের আগে শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত সরকার-বিরোধী সব দলই। নিজের দলকে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী দলের খামতি বের করে এনে লাগাতার প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি-কংগ্রেস। এরই মধ্যে মহারাষ্ট্রের নান্দেদে এক প্রচার সভায় কংগ্রেসকে টাইটানিকের সঙ্গে তুলনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, টাইটানিকের মতোই একদিন ডুবে যাবে কংগ্রেস। সেইসঙ্গে মোদী এও বলেন, যারা কংগ্রেসের সঙ্গে আছে, তারাও নিজেদের বাঁচানোর পথ পাবে না।
মহারাষ্ট্রের এই জনসভা থেকে মোদী বলেন, “কংগ্রেসের অবস্থা হয়েছে ঠিক টাইটানিকের মতো। প্রতিদিন একটু একটু করে ডুবে যাচ্ছে দলটা। আর যারা কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে, তারাও ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টির মতো ডুবে যাবে, নইলে প্রাণ বাঁচাতে ছুটবে। কিন্তু ছুটেও কোনও লাভ হবে না। শেষ পর্যন্ত ডুবেই যাবে।” চোদ্দর লোকসভায় মাত্র ৪৪টি আসন জিতেছিল কংগ্রেস। সেই পরিসংখ্যান তুলে এনে মোদী বলেন, গতবারের থেকে এ বার আরও খারাপ অবস্থা কংগ্রেসের। আর তাই কংগ্রেসের জোটসঙ্গীদের মধ্যে শরদ পাওয়ার, প্রফুল পটেল, রাজীব সাতাভের মতো নেতারা ভোটেও দাঁড়াননি, এমনটাই মত প্রধানমন্ত্রীর।
এরপরেই কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মোদী। মোদীর মতে, অমেঠীতে জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত নয় বলেই কেরলের ওয়ানাড়ে দাঁড়িয়েছেন রাহুল। তিনি বলেন, “সম্প্রতি অমেঠীতে একটি সভা করেছেন রাহুল গান্ধী। সেখানে কংগ্রেসের একটা পতাকাও দেখা যায়নি। আর তাই ভয় পেয়েই তড়িঘড়ি এমন জায়গায় দাঁড়ালেন রাহুল, যেখানে জেতার কিছুটা হলেও সম্ভাবনা আছে। তিনি এমন একটি জায়গায় দাঁড়িয়েছেন ( কেরলের ওয়ানাড় ), যেখানে দেশের সংখ্যাগুরুরা ( হিন্দু ) সংখ্যালঘু।” তবে সেখানেও যে তিনি জিতবেন, তা নিশ্চিত নয়। আর তাই রাহুল বলতে বাধ্য হচ্ছেন, সিপিএম-এর বিরুদ্ধে কোনও খারাপ কথা বলবেন না তিনি। মোদী আরও বলেন, কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের সুরে কথা বলছে কংগ্রেস। বালাকোটের বায়ুসেনা হামলার প্রমাণ চেয়ে কংগ্রেস প্রমাণ করে দিয়েছে, কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে কতটা উদ্যোগী তারা।
মহারাষ্ট্রের এই সভা থেকে কাশ্মীরের ন্যাশনাল কনফারেন্সের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন মোদী। সম্প্রতি কাশ্মীরে একটি জনসভায় কাশ্মীরের জন্য পৃথক প্রধানমন্ত্রীর দাবি তুলেছিলেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। একই সুরে শনিবার মোদী ও বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তাঁর বাবা ফারুক আবদুল্লাহ। জবাবে মোদী বলেন, “ফারুক আবদুল্লাহ ও তাঁর ছেলে ওমর আবদুল্লাহ কাশ্মীরের জন্য আলাদা প্রধানমন্ত্রী চান। আমি আপনাদের জিজ্ঞাসা করছি, এটা কি মেনে নেওয়া যায়? আমার প্রশ্নের এত জোরে উত্তর দিন যে তার আওয়াজ কাশ্মীর পর্যন্ত পৌঁছয়।”
তবে মোদীর এই সভার পর মহারাষ্ট্রের এক কংগ্রেস নেতা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পেরেছেন উনিশের লোকসভায় তাঁর দলের অবস্থাই টাইটানিকের মতো হবে। আর এটা বুঝতে পেরেই ধর্মের জিগির তুলে ভোট কেনার চেষ্টা করছেন মোদী। কিন্তু এ ভাবে কোনও লাভ নেই। ২৩ মে সব হিসেব পেয়ে যাবেন মোদী।”