মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) পালঘর এলাকায় সাধু হত্যার প্রতিবাদে ফুঁসছে সারা বিশ্বের সমস্ত হিন্দু ধর্মাবলম্বীগণ।এই হত্যাকান্ডের সুবিচার চেয়ে সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে সম্প্রতি চিঠি পাঠিয়েছে মহারাষ্ট্রেরই একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ” দ্য ইন্ডিক কালেকটিভ ট্রাস্ট (The Indic Collective Trust)”।
ট্রাস্টটি ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।হিন্দু ধর্ম এবং হিন্দুদের ওপর যে-কোনো অবিচারের পক্ষে আইনি সহায়তা,প্রতিরোধ ও প্রতিকারের জন্যই এই ট্রাস্ট সর্বোত ভাবে এগিয়ে যায় বলে ঐ চিঠিতে তারা উল্লেখ করেছেন।
সারাদেশ যখন করোনার আতঙ্কগ্রস্ত,মানুষ গৃহবন্দি,রুজিরোজগার বন্ধ সেই পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্রে এই মর্মান্তিক হত্যাকান্ড ঘটে গত ১৬ এপ্রিল।সারাবিশ্বের মানুষ স্তম্ভিত হয়ে যায় এই ভয়াল হত্যাকান্ডের ভিডিও দেখে।প্রায় দুশ উন্মত্ত দুষ্কৃতি সাধুদের গাড়ি থেকে নামিয়ে তাঁদের পিটিয়ে হত্যা করে।লকডাউনের সময় রাস্তায় পুলিস ছিল।তাঁদের কাছে সাধুরা সাহায্য চান।অথচ সেই পুলিসকর্মীরা হাত ছাড়িয়ে পালিয়ে যায়।
সেদিন মহারাষ্ট্রের জুনাগড় আখড়ার চিকন মহারাজ কল্পবৃক্ষ গিরি (৭০),সুশীল গিরি মহারাজ (৩৫) একটি চার চাকার গাড়িতে চড়ে তাঁদের গুরুদেবের সৎকারে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন।পথে পালঘর এলাকায় তাঁদের গাড়িটি বিকল হয়ে পড়ে ।তখনই দুষ্কৃতিরা লাঠি-রড ইত্যাদি নিয়ে ছুটে আসে এবং প্রচন্ড ভাবে
পিটিয়ে হত্যা করে।তাঁদের গাড়ির চালক নীলেশ তেলগানেকেও হত্যা করে।
এই ঘটনার সুবিচার চেয়ে ট্রাস্ট গত ২৭ এপ্রিল মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে চিঠি দিয়েছে।ট্রাস্ট উদ্ধবের স্বর্গীয় পিতার কথা উল্লেখ করে ন্যায় বিচার,দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি-সহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে :-
১) সাধু-সহ চালক হত্যার জন্য CBI তদন্ত।
২) ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিসকর্মী-আধিকারিকদের অবিলম্বে কাজ থেকে বরখাস্ত করা।তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত করে শাস্তি বিধান করা।
৩) তাঁদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ এনে ফাস্ট ট্রাক কোর্টে মামলা দায়ের করা।
৪) ঘটনাস্থলে নিহত সাধুদের স্মৃতি রক্ষার্থে সেখানে স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করা।
৫) সুপ্রীম কোর্ট অথবা বোম্বে হাইকোর্টের কোনো বিচারপতির নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিসন গঠন করা।এই কমিসন ঘটনার অনুপুঙ্খ তদন্ত করে দুষ্কর্মের শিকড়ে পৌঁছবে।
৬) এই জাতীয় ঘটনা আটকানো ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিবিধানের জন্য আইন তৈরি করা।
৭) সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা গিয়েছে জুনা আখড়ার ঐতিহ্য মেনে লকডাউন উঠে গেলে,আখড়ার অন্যান্য সাধুগণ নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে "আত্ম বলিদান স্থল"-এ যাবেন।সেই সময় সাধুদের পূর্ণ পুলিসি নিরাপত্তা দিতে হবে।
সুজিত চক্রবর্তী