ভোটের আগে রেপো রেট কমাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের আর্থিক নীতি সংক্রান্ত কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমানো হবে। অর্থনীতিবিদরা আশা করেছিলেন, রেপো রেট কমতে চলেছে। সুদ কমার আশায় কয়েকদিন ধরে চাঙ্গা হয়েছিল শেয়ার বাজারও। বৃহস্পতিবার সেই আশা পূরণ হল। এখন রেপো রেট হয়েছে ছয় শতাংশ।
এর ফলে গৃহঋণে সুদের হার কমতে পারে। একই সঙ্গে কমতে পারে গাড়ি কেনা বাবদ ঋণে সুদের হারও। কারণ রেপো রেট কমার ফলে ব্যাঙ্কগুলির মার্জিনাল কস্ট অব ফান্ডস বেসড লেন্ডিং রেট (এমসিএলআর) কমবে। ব্যাঙ্কগুলি সেই সুবিধা ভাগ করে নিতে পারবে গৃহঋণ গ্রহীতাদের সঙ্গে।
উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, যে ব্যক্তি নয় শতাংশ হারে, ১৫ বছরে শোধ করার শর্তে গৃহঋণ নিয়েছেন, তাঁকে এক লক্ষ টাকা পিছু সুদ দিতে হয় ১০১৪ টাকা। কিন্তু রেপো রেট যদি ১০০ বেসিস পয়েন্ট বা এক শতাংশ কমে, তাহলে এক লক্ষ টাকা পিছু ইএম আই দাঁড়াবে ৯৫৬ টাকা। অর্থাৎ সুদ কমবে ৫৮ টাকা অথবা ছয় শতাংশ। কেউ যদি ৩০ লক্ষ টাকা ঋণ নেন, সুদ এক শতাংশ কমে যাওয়ার অর্থ তাঁকে প্রতি মাসে ইএমআই কম দিতে হবে প্রায় ১৭৪০ টাকা।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অন্যান্য ব্যাঙ্কে যে সুদের হারে টাকা ধার দেয়, তাকে বলে রেপো রেট। এর সাহায্যে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। যখন বাজারে মুদ্রাস্ফীতি গুরুতর আকার নেয়, তখন রেপো রেট বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ব্যাঙ্কগুলি যাতে বেশি ঋণ না নেয়, সেজন্যই বাড়ানো হয় সুদের হার। এর ফলে বাজারে টাকার সরবরাহ কমে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
অন্যদিকে বাজারে যখন চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকে তখন রেপো রেট কমানো হয়। তাতে ব্যাঙ্কগুলি ঋণ নিতে উৎসাহী হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক এদিন জানিয়েছে, ২০১৯-২০ সালের আর্থিক বছরে জিডিপি বা মোট জাতীয় উৎপাদন বাড়বে ৭.২ শতাংশ। চলতি আর্থিক বছরের প্রথমার্ধে জিডিপি বাড়বে ৬.৮ থেকে ৭.১ শতাংশ হারে। দ্বিতীয়ার্ধে বাড়বে ৭.৩ থেকে ৭.৪ শতাংশ হারে।
গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরে জিডিপি বৃদ্ধির হার কমে হয়েছিল ৬.৬ শতাংশ। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকের পর জিডিপি বৃদ্ধির হার আর কখনও এত কমেনি। গত ফেব্রুয়ারিতে ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ২.৫৭ শতাংশ হারে। জানুয়ারিতে মুল্যবৃদ্ধির হার ছিল ১.৯৭ শতাংশ। তা ছিল আগের নম মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম।