ভারত মহাসাগরে চিনের খবরদারি রুখতে অস্ত্রভাণ্ডারে নতুন করে শান দিচ্ছে ভারত। নির্ভুল নিশানা, ক্ষিপ্র গতি এবং এক ধাক্কায় শত্রুর ডুবোজাহাজকে তছনছ করে দিতে অত্যাধুনিক এক হেলিকপ্টার এ বার দেখা যাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে। আমেরিকার থেকে এই হেলিকপ্টার কেনার জন্য অনেকদিন ধরেই চেষ্টা চরিত্র করছিল ভারত। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকও হয়। অবশেষে ভারতকে এই হেলিকপ্টার বিক্রি করতে সায় দিল আমেরিকা।
এম এইচ ৬০ রোমিও, এই হেলিকপ্টার বানায় মার্কিন সংস্থা লখিড মার্টিন। আমেরিকার থেকে ২৪টি এই রকম ক্ষমতাশালী হেলিকপ্টার কেনার জন্য চুক্তি করেছে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সূত্রের খবর, খরচ পড়বে প্রায় ১৭, ৭৯৮ কোটি টাকা।
এম এইচ ৬০ রোমিও সংক্ষেপে রোমিও হেলিকপ্টারের গুণ অনেক। নির্ভুল নিশানায় এটি শত্রু সাবমেরিনকে ধ্বংস করতে পারে নিমেষেই। সমুদ্রে নজরদারি চালাতেও এর জুরি মেলা ভার। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, এই হেলিকপ্টার ব্যবহার করা যায় বিনাশকারী বা ডেস্ট্রয়ার হিসেবেও, পাশাপাশি ক্রুজার এবং বিমানবাহী রণতরী থেকেও এটি সহজেই ব্যবহার করতে পারবে ভারতীয় নৌসেনা। ক্ষেপণাস্ত্র বহনকারী এই হেলিকপ্টার থেকে প্রয়োগ করা যাবে ১০ রকম হেলফায়ার মিসাইল, ৩৮ রকমের উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্রবাহী রকেট, এবং ৩০টি এমকে ৫৪ টর্পেডো। ভারত মহাসাগরে চিনের বাড়তে থাকা প্রতিপত্তি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই চপার ভারতীয় নৌসেনার অন্যতম অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভারত ও আমেরিকার মধ্যে সামরিক ক্ষেত্রে বোঝাপড়া অনেক বেড়েছে। মার্কিন ডিফেন্স সিকিউরিটি কর্পোরেশন এজেন্সি (DSCA) বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘‘সামরিক ক্ষেত্রে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে এই নতুন চুক্তি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করে তুলবে। শুধু সামরিক ক্ষেত্রই নয়, রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা, অর্থনীতি, এবং ব্যবসাবাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়েও দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক অনেক দৃঢ় হবে।’’
গত বছর সিঙ্গাপুরে একটি সম্মেলন চলাকালীন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সঙ্গে এই হেলিকপ্টার কেনার ব্যাপারে প্রথম কথা হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। তার পর থেকে একটু একটু করে গতি পেতে থাকে এই অস্ত্র-চুক্তি। ভারত মহাসাগরে চিনা প্রতিপত্তির বাড়বাড়ন্ত রুখতে জরুরি ভিত্তিতে রোমিও হেলিকপ্টার কেনা প্রয়োজন বলে ভারতের তরফে চিঠিও যায় আমেরিকায়। মার্কিন নৌসেনার কাছেও এম এইচ ৬০ রোমিও চপার রয়েছে। ডিএসডিএ সূত্রে খবর, ভারতের হাতে এই হেলিকপ্টার থাকলে ভারত মহাসাগর এলাকা এবং দক্ষিণ এশিয়ার উপকূলেও ভারতের প্রতিপত্তি অনেকটাই বাড়বে।