তাদভী ভিল আদিবাসী মুসলিম”, মূলত বাস মহারাষ্ট্র, গুজরাট-মহারাষ্ট্র সীমান্ত, এছাড়া মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে! ভারতের অনেকগুলি ট্রাইবাল মুসলিমের মধ্যে একটি (যেমন বাংলার লোধা আদিবাসী মুসলিম সম্প্রদায়), যাইহোক পালঘরের খাসা অঞ্চল যেখানে সাধু হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে সেটি তাদভী ভিল অধ্যুষিত একটি স্বাভাবিক অঞ্চল, আশপাশের গ্রামগুলি প্রায় সবই এই আদিবাসী সম্প্রদায়ের! ঔরঙ্গজেবের আমলে এরা ধর্মান্তরিত হয়েছিলো, অন্যান্য মুসলিম সমাজের সাথে কিছু আচার পার্থক্য রেখে এরা চলে, টুপি পড়েনা, উর্দুর বদলে হিন্দি, তাদভী ভাষায় বেশি কথা বলে, চার বিবাহ সাধারণত নেই!
গত এক দশক ধরে এদের বেশ কিছু ধীরে ধীরে নিজের পিতৃপুরুষের সংস্কৃতিতে অর্থাৎ হিন্দুত্বে ফিরতে শুরু করেছে, যেই সংখ্যাটা চোখে পড়ার মত। সব তো স্বাভাবিকই আছে, অসুবিধাটা কোথায় হোলো? হয়েছে, খুব অসুবিধা হয়েছে!
মহারাষ্ট্রের যে ধানু বিধানসভা অঞ্চলে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি রাজ্যটির একমাত্র সিপিআইএম বিধায়ক- বিনোদ নিকোলের বিধানসভা,বরাবরই এই লোকটা মানুষগুলির নিজের ধর্মে ফিরে আসার বিরোধিতা করেছে। রাজ্যতে কংগ্রেসের সরকার আসার পর সেই কাজে অফিসিয়াল সুবিধা অতিরিক্ত পেয়েছে! আসলে মহারাষ্ট্রে কৃষক লং মার্চ থেকে শুরু করে আদিবাসী তথা দলিতদের হিন্দু বিরোধী দেখাতে এই মুসলিম আদিবাসী সম্প্রদায়কে এরা সারাজীবন ব্যাবহার করে এসেছে, স্বাভাবিক আদিবাসীর মত দেখতে বলে অনেক মানুষও দীর্ঘ্যদিন ফাঁদে পা দিয়ে তাদভী ভিলদের আদিবাসী সমাজের মানুষই ভেবেছে! এদের এই মুখোশের খেলা নষ্ট হতে শুরু করে এই বনবাসী সমাজ আবার দ্রুত হিন্দুত্বে ফিরতে শুরু করায়।
এই কাজে এরা কাউন্টার এক্টিভিটি শুরু করে, সন্ধ্যার পর তাদভী গ্রামে ছোট ছোট মিটিং করে এদের হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে আবার উস্কানো শুরু করে, কংগ্রেস সরকার আসার পর গত ছয় মাস তো যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলতে থাকে, সাথে আর্থিক সাহায্য হিসেবে বাড়তি পাশে পায়ে খৃস্টান মিশনারিদের! শুধু তাই নয়, গত ফেব্রুয়ারি মাসেই পালঘর পুলিশ একটি রেইডে ২২ জন অবৈধ বাংলাদেশী মানুষকে আটক করে,অর্থাৎ অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশী মুসলিম দের একটি অংশ ঐ অঞ্চলে বিভিন্ন স্থানে কর্মরত। আবার এই উত্তর পশ্চিম মহারাষ্ট্রের এই অঞ্চলগুলোতে মাওবাদীদের বেশ ভালো প্রভাব আছে।
এমনই এক বিষাক্ত বায়ুর পরিবেশে রাতের বেলা দুই গেরুয়া বস্ত্রধারী সন্ন্যাসী সেখানে উপস্থিত হলে অশিক্ষিত মানুষগুলোকে সামান্য উস্কে এই বর্বরতা ঘটানো তো স্বাভাবিকই ছিলো, বাড়তি সুবিধা ছিলো লকডাউনের কারণে পুলিশের সংখ্যা এমনিতেই কম থাকা। এই প্রসঙ্গে ওঠা সব সন্দেহগুলো আরো মান্যতা পায় দুটো তথ্যে। প্রথমতঃ প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে যে পাঁচ জনকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে , তারা সবাই CPIM লোকাল কমিটির প্রভাবশালী নেতা এবং আরো উল্লেখ্য যোগ্য তাদের জন্য উকিল নিয়োগ থেকে শুরু করে জামিনের ব্যবস্থা করা সব কাজ যিনি করছেন, সেই সিরাজ বালসারা খ্রীষ্টান মিশনারী ঘনিষ্ঠ একটি NGO এর কর্তা।