মুম্বাই (Mumbai) থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরে পালঘর জেলার (Palghar district) অন্তর্গত ডহালু তহশীলের (Dalu tahasil) গড়চিচলি গ্রাম (Garachichli village)। কোনও বাংলা সংবাদ মাধ্যমে খবরটা নেই। তাই রোমান হরফে পড়ে গ্রামের ভারতীয় উচ্চারণে নামটা একটু গোলমাল হয়ে থাকলেও হতে পারে। গুজরাট সীমান্ত ঘেঁষা মহারষ্ট্রের এই অখ্যাত গ্রামটা হঠাৎ খবরে উঠে এল গতকাল ১৯ এপ্রিল হিন্দী ও ইংরেজী সংবাদ চ্যানেলগুলো ভিডিও ক্লিপিংসহ খবরটার যে যার মতো বিশদ দিলেও বাংলা সংবাদ মাধ্যমগুলোর ঘুম এখনও ভাঙেনি। কেনই বা ভাঙবে? এঁরা তো পেহেলু খান বা মোহাম্মদ আখলাখের সিঙ্গেল সোর্সড কমিউনিটির কেউ নন, নামগুলো যে আরবি ধূলায় ধূসরিত নয়। প্রতিক্রিয়ায় কিছু ঘটলে তখন হয়তো ‘অমানবিক অভাবনীয়’ ইত্যাদি বিশেষণ ভূষিত ঘণ্টাখানেক হলেও হতে পারে। মানুষের গালমন্দ অভিশাপ পরিপাক করার ওষুধ চীন বা আরব থেকে আমদানি করাই আছে।


বারাণসীর অতি পরিচিত ও ঐতিহ্যশালী সাধু সঙ্ঘ হল ‘শ্রীপঞ্চ দশনমা জুনা আখড়া। গত বছর ২০১৮-য় এই জুনা আখাড়াই একজন দলিত শ্রেনীর সাধুকে অত্যন্ত সম্মানজনক মহামণ্ডলেশ্বর পদে অভিষিক্ত করে। এই লকডাউনের বাজারে জুনা আখড়ার মির্জ়াপুর পরিবারের এক মহন্ত রামগিরীজী গুজরাতের বেরাবল সোমনাথের পাশে হঠাৎই দেহ রাখেন। আখড়ার অন্যান্য মহারাজেরা মির্জ়াপুর পরিবারের কিছু সন্তকে গুরুজীকে সমাধি দেওয়ার জন্য খবর পাঠান। সংবাদ পেয়েই খুব স্বাভাবিক শিষ্য হিসাবে প্রিয় গুরুর অন্ত্যেষ্ট্যক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে তৎক্ষণাৎ গুজরাটের বেরাবলের উদ্দেশ্যে একটি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন মহন্ত কল্পবৃক্ষ মহারাজ (৭০ বছর)এবং মহন্ত সুশীল গিরীজী (৩৫ বছর)।


এরপর বিভিন্ন খবর চ্যানেল ও সোশাল মিডিয়ার তথ্যে বিস্তর ফাঁক। অধিকাংশ সংবাদ সংস্থাগুলোর রিপোর্ট অনুযায়ী ওঁদের গাড়ি গড়চিচলা গ্রামের মধ্যে দিয়ে যাওয়া দভাদি খানওয়াল রোডে শ দুয়েক পুরুষ আটকে লাঠি পাথর ইত্যাদিসহ আক্রমণ শুরু করে। ড্রাইভার কোনও মতে পালঘর পুলিস চৌকিতে খবর দিতে পারে। পুলিস নাকি তৎক্ষণাৎ এসে উদ্ধার করার চেষ্টা করে। তাতে দুটি পুলিস ভ্যানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়, একজন পুলিসকর্মীর আঘাতও লাগে। আক্রান্ত দেহগুলিকে পুলিসই হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়


অন্য সূত্রের দাবি রাস্তাতেই সাধুদের গাড়িটিকে আটকায় পালঘর থানার পুলিস। মুহূর্তে ঘিরে ফেলে শ দুয়েক উন্মত্ত সশস্ত্র জনতার একটি দল। শুরু হয় গণপ্রহার। পরিণাম মৃত্যু। ভিডিও ক্লিপিং-এও দেখা যাচ্ছে ৭০ বছরের বৃদ্ধ সন্ন্যাসীর হাত ধরে পুলিস নিয়ে এসে দাঁড় করাল কিছু মারমুখী ছেলেছোকরা মাঝ বয়সী পুরুষের মাঝে। তারা বৃদ্ধকে পাওয়া মাত্র লাঠিসোঁটা দিয়ে মারা শুরু করল। মাথা দিয়ে দরদর করে রক্ত বইতে লাগল। তারপর মাটিতে ফেলে নিস্পন্দ হওয়া পর্যন্ত মার। ৩৫ বছরের যুবক সাধুটিকেও নির্দয়ভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করল অনেকেই। ব্যতিক্রম বাংলার মিডিয়া। অভিযোগ এই সাধুরা নাকি বাচ্চা চুরি ও অঙ্গ পাচার চক্রে জড়িতঅভিযোগের ভিত্তি একটি গুজব। সাধুরা না হয় সন্দেহভাজন, রেহাই পেল না ৩৫ বছর বয়সী নীলেশ তেলগানে (Nilesh Telgano) নামের গাড়ির চালকও, যে বেচারা লকডাউনের বাজারে পেটের জ্বালায় নেহাতই ভাড়া খাটতে বেরিয়েছিল।


আর এক পক্ষের দাবি পুলিস পথ আটকালে তাঁরা বড় রাস্তা ছেড়ে গ্রামের পথ ধরে বেরিয়ে যেতে গিয়ে আক্রান্ত হন। যদিও খবরে প্রকাশ ঘটনাস্থল খানওয়াল রোডের ওপরেই যা গড়চিচলা গ্রামের পাশ দিয়ে গেছে। আর পুলিস যদি নাই আটকে থাকে, তাহলে বড় রাস্তা ছেড়ে গ্রামের রাস্তা ধরতে যাবে কেন গাড়িটি?
এখন লকডাউনের মধ্যে পুলিসের পথ রোধ করা বা কৈফিয়ত চাওয়ার মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকত্ব নেই; কিন্তু সাধুদের হাত ধরে গাড়ির বাইরে বের করে রাস্তায় টেনে আনাটা কতটা সোশাল ডিস্টেন্সিং বা লকডাউন নির্দেশিকা মেনে হল, সেই প্রশ্ন তোলাই যায়। শুধু তাই নয়, সেখানে শ’ দুই জনতাই বা কোন লকডাউন বিধি মেনে তাঁদের ঘিরে ধরল সেটা তো আরও বড় প্রশ্ন? পুলিস লকডাউন বলে ড্রাইভারসহ মাত্র তিনজন চড়নদারদের গাড়ি আটকাল, কিন্তু দুশো আড়াইশো কি তারও বেশি মানুষের জটলার কাছে তাদের নিয়ম কানুন অসহায়! তার চেয়েও বড় প্রশ্ন মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) সংক্রমণের এই পর্যায়ে সব কিছু যেখানে বন্ধ, সেখানে পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়া এতগুলো লোক, তাও আবার লাঠি পাথর ইত্যাদি হাতে জড়ো হল কীভাবে? যদিও খবরে প্রকাশ উক্ত গাড়িটিতে ভাঙচুর করে উল্টে দেওয়া ছাড়াও দুটি পুলিস পেট্রলিং ভ্যানও জনতার রোষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, একজন পুলিসকর্মীও আহত হয়েছে, আর ১১০ জন গ্রামবাসীকেও নাকি গ্রেপ্তার করা হয়েছে; কিন্তু এতগুলো যদি তবে কিন্তু-র মধ্যে পুরো ব্যাপারটায় পুলিসের সম্পৃক্ততা নিয়ে এখনই ক্লীন চিট দেওয়া যায় কিনা, জানি না। কারও কারও দাবি হাত ধরে বৃদ্ধ সাধুকে জনতার মাঝে এনে দেওয়ার দৃশ্যটা নাকি পুরোনো যেটা কারসাজি করে জুড়ে দেওয়া হয়েছে (যেন আগে এমনটা ঘটে থাকলে সব মাথা ঘামানোর কিছু নেই), যদিও পুলিসের হাত ধরে আসা গেরুয়াধারী ব্যক্তি ও মার খেয়ে রক্তাক্ত ব্যক্তির মুখ ও চেহারায় আশ্চর্য মিল! তাছাড়া ভাইরাল হওয়া ভিডিওর গণপিটুনির সত্যতা যেখানে সরকারি তরফেও স্বীকার করা হয়েছে, সেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে পুরো মারামারিটাই হয়েছে পুলিসের নাকের ডগায়, তাদের নীরব দর্শকের ভূমিকায় রেখে। সুতরাং ড্রাইভার ফোন করায় পালঘর থানার কোটাল সিপাইরা আক্রান্ত মানুষগুলোকে বাঁচাতে দৌড়ে গিয়েছিল, ভিডিও সূত্রে অন্তত সেই দাবি ধোপে টিঁকছে না। অবশ্য দু দিন পরে চলচ্ছবি দুটি ভুয়ো এমন দাবি উঠতেই পারে।


গ্রামবাসীদের বিশদ নাম পরিচয় ইত্যাদি, মানে ঐ কারা করেছে, সেই আভাসটা কোনও খবরে দেওয়া নেই। যে দুটি ভিডিও করোনার গতিতে ছড়িয়েছে, তাতে হামলাকারীদের বেশভূষা দেখেও তেমন কোনও বিশেষ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় না, যদিও প্রশ্ন জাগে, নিরস্ত্র নিরীহ দুই গেরুয়াধারীর বিরুদ্ধে কাদের এত আক্রোশ থাকতে পারে! আর অস্ত্র হিসাবে প্রস্তরখণ্ড ব্যবহারে কারা সিদ্ধহস্ত? তবে ঐ অঞ্চলে বেশ কিছু চার্চের উপস্থিতি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের আধিপত্য ইঙ্গিত করছে। ভারত সরকার যখন মুসলিম সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে, তখন ঘোলা জলে মাছ শিকার করতে খ্রিস্টান সম্প্রসারণবাদও থেমে নেই। শুধু কাজটা যে অহিন্দুদের সেই অনুমান মনে হয় করাই যায়
আরও একটা খটকা লাগে। ওঁদের সন্দেহ করে আক্রমণ করার কারণটা কী হতে পারে? একটা ভুল তাঁরা করেছিলেন ঠিকই। অন্তরাত্মা যতই ডাকুক, লকডাউনের মধ্যে এক রাজ্য ছেড়ে অন্য রাজ্যে যাওয়ার জন্য অতটা ব্যাকুল না হলেও পারতেন। কিংবা তৃতীয় দাবি অনুযায়ী প্রশাসন অনুমতি না দেওয়ায় তাঁরা গ্রামের পথ না ধরে নাসিক ফিরে গেলেও পারতেন। কিন্তু শুধু এই জন্যই কি? বাচ্চা চুরির গুজবের উৎস কী? শিশু চুরি, মানুষের বৃক্ক ও অন্যান্য অঙ্গ পাচার ইত্যাদির খবর যে ভুয়ো, তা তো জেলা শাসক কৈলাস শিণ্ডের গ্রামবাসীর কাছে গুজবে কান না দেওয়ার আবেদনেই পরিষ্কার। তাহলে এইসব রটল কীভাবে?

আচ্ছা মনে পড়ছে, ১৯৮২-র ৩০ এপ্রিল বিজন সেতুর কথা? তিলজলা থেকে ট্যাক্সি নিয়ে একটি সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ১৭ জন আনন্দমার্গী সন্ন্যাসী, যাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন সন্ন্যাসিনী। বালিগঞ্জ স্টেশনের ওপর নির্মিত এই বিজন সেতুর ওপর ও আরও কয়েকজনকে বালিগঞ্জ স্টেশনের আশপাশে রেল লাইনের ধারে পিটিয়ে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল। আনন্দমার্গীরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে নিজেদের মতাদর্শ হয়তো প্রচার করতেন, তবে বোমা মেরে বিধর্মী বা কোনও প্রকার ব্যক্তি হত্যার তালিম দিতেন বলে তাদের নিন্দুকেরাও অভিযোগ তোলেনি। হ্যাঁ, তাঁরা হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে সেবামূলক কাজের দ্বারা গ্রামেগঞ্জে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পাচ্ছিলেন, যা তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের পছন্দ ছিল না। পিটিয়ে মাটিতে ফেলে তারপর পুড়িয়ে মারার মতো হাড় হিম করা ঘটনাটি ঘটে প্রকাশ্য দিবালোকে। তবু কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। মাত্র একজন বিচারক নিয়ে তৈরি তদন্ত কমিশন গঠন নামক প্রহসন দ্বারা নারকীয় হত্যাকাণ্ডটির নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। একজন আক্রান্ত সন্ন্যাসিনী মার খেলেও কোনওক্রমে অগ্নিদগ্ধ হওয়া থেকে প্রাণে বেঁচে যান।


যাইহোক, সেই পুরোনো ইতিহাস কেন মনে পড়ল জানেন? আনন্দমার্গী সন্ন্যাসীদের বিরুদ্ধেও বাচ্চা চুরির গুজব রটেছিল। কোথাও মিল পাচ্ছেন না?
গত বছর ২০১৯-এর আগস্ট মাসে উত্তর প্রদেশের (Uttar Pradesh) অউরাইয়া জেলাতেও দুজন সাধু গোহত্যার বিরুদ্ধে প্রচার চালানোর অপরাধে গ্রামের গোমাংসপ্রেমীদের দ্বারা নৃশংসভাবে খুন হয়েছিলেন। খবরটা মনে রেখেছি? বস্তুত কতজন জানি? প্রতিক্রিয়া না হলে তো ভেতর পাতার খবরের কোনও অভিঘাতই তৈরি হয় না। সবচেয়ে আশ্চর্য, অন্যান্য যে সব মঠাধীশরা রয়েছেন, তাঁরা কী করছেন? কিংবা রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ, বেলুড় মঠ, গৈড়ীয় মঠ, অথবা অহিংস ইস্কনের পূজ্যপাদ সন্ন্যাসীবৃন্দ –তারাই বা নীরব কেন? কোথায় গেলেন ভারতের চার পীঠের শঙ্করাচার্য্যরা? আধ্যাত্মিক সাধনা কি তাঁদের এতটাই নিস্পৃহ, স্থবির, অচঞ্চল করেছে, যে নিজেদের অনুরূপ পথের অনুসারীদের হত্যালীলায় জ্বলে ওঠা তো দূর, এতটুকু শোকও প্রকাশ করবে না? যত দায় কি নেটিজেনদের – নিজেদের দেওয়ালগুলোয় রক্তাক্ত ছবি টাঙিয়ে রেখে প্রশাসনের চক্ষূশূল হওয়ার? ভারতে যেখানে পরিকল্পিতভাবে হিন্দুরা বারবার আক্রান্ত হচ্ছে, সেখানে নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনরা ভারতে শুধুই ‘সংক্যালঘু’ চিহ্নিতদের বিপদের মিথ্যে গল্প শুনিয়ে বেড়াচ্ছেন; আর বুকার জয়ী অরুন্ধতী রায়রা সারা বিশ্বে কখনও টুইট করে, কখনও টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাতকার দিয়ে রটিয়ে বেড়াচ্ছেন, ভারতে করোনা কোনও সমস্যা নয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নাকি নাজ়িদের ইহুদি গণহত্যার আদলে ভারতের বুকে মুসলিম নির্মূলীকরণের ছক কষছেন! ষড়যন্ত্র, রটনা ও হত্যার মূলে কারা কারা তা বুঝতে অসুবিধা কারোরই হচ্ছে না। কিন্তু না বোঝার ভান করে ন্যাকা সেজে থাকতে হবে। নতুবা মনুষ্যত্বের কলঙ্ক এই ষড়যন্ত্রীদের শাস্তি চাইলে পুলিস প্রশাসন তৎক্ষণাৎ স্বতঃপ্রণোদিত সুয়ো মোটো কেস দিয়ে হাজতে ভরবে, লকডাউনের জমানায় যার মেয়াদ কতদিন কেউ জানে না। মাঝেমধ্যেই এইরকম বাচ্চা চুরির গুজবের জেরে গণপ্রহারে কিংবা মন্দিরে বোমা আছে রচনার জেরে পদপিষ্ট হয়ে গণমৃত্যর খবর পাওয়া যায়। কারা করে এসব রটনা? যারাই করুক দেশ ও সমাজের স্থিতাবস্থা তারা চায় না। গোলমাল বাধিয়ে ধ্বংস, প্রাণহানি বা সুস্থ মানুষকে চিরপঙ্গু করে দেওয়াই তাদের উদ্দেশ্য। আমার আশঙ্কা এমন সব গুজব ও মব লিঞ্চিং-এর ঘটনা আরও বাড়বে, যেখানে প্রচলিত ভিক্টিম কার্ড না থাকায় বিদেহীদের ন্যুনতম মোমবাতি প্রতিবাদটুকুও জুটবে না! লাখ-লাখ কাঁদে বধির আমরা আখলাখে উঠি জ্বলে, ঢাক ঢাক করি একটি চোখকে একটিকে রাখি খুলে

শ্রীপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়

ছবি : শীর্ষ আচার্য

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.