করোনার মধ্যেও তৃণমূলের তোলাবাজি! দক্ষিণ দিনাজপুরে রেশনের কুপন দিয়ে ৫০ টাকা করে তুলছে পঞ্চায়েত সদস্য, অভিযোগ বিজেপি সাংসদের

লকডাউনে (lockdown)ঘরবন্দি অসহায় মানুষদেরও নিস্তার নেই দক্ষিণ দিনাজপুরে। তাদের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে রেশনের কুপন বিলি নিয়েও তোলাবাজি করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল(Tmc) পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। ভিডিও প্রকাশ করে কড়া নিন্দা করেছেন বিজেপি (Bjp)সাংসদ। রাজ্য সরকারের দেওয়া রেশনের কুপন বিলিতে ৫০ টাকা করে তোলা নেওয়ার অভিযোগ স্থানীয় এক তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। বংশীহারী ব্লকের গাঙ্গুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এমন ঘটনায় রীতিমতো আলোড়ন পড়েছে।

দীর্ঘ লকডাউনে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে রাজ্য জুড়ে বিনামূল্যে রেশনের চাল, আটা এবং গম দেওয়ার কথা ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। ঘোষণার পর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকেই ডিজিটাল কার্ডধারী উপভোক্তারা বিনামূল্যে রেশন নিতে শুরু করেন। কিন্তু যাঁদের ডিজিটাল কার্ড নেই তাঁদের কি হবে এই নিয়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। জেলাশাসকের অফিস ঘেরাও করে লকডাউন ভেঙেই চলে সেই বিক্ষোভ। দরিদ্র ওই সমস্ত মানুষদের কথা ভেবে রাজ্য সরকার একটি কুপন দেওয়ার ব্যবস্থা করে। ১০ তারিখের পর থেকে ওই কুপন দেখিয়ে আগামী ছয় মাসের জন্য বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী পাবেন গরিব মানুষরা সেই নির্দেশিকা জারি করা হয় প্রশাসনের তরফে।

সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী জেলার ১ লক্ষ ৪১ হাজার ১৫৯ জনকে কুপন দেওয়ার কাজ শুরু করে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের তরফে সমস্ত ব্লকের বিডিওর কাছে কুপন পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ সেই কুপন বিলিকে ঘিরেই তৃণমূলের নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে উঠেছে টাকা তোলার অভিযোগ । শুধু তাই নয় একতরফা ভাবে শাসক দলের নেতৃতাদের দিয়েই চলছে জেলাজুড়ে ওই কুপন বিলির কাজ, বলে অভিযোগ। সরকারি ওই কুপন বিলি কেন দলের নেতা কর্মীদের দিয়ে বিলি করা হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। গাঙ্গুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যা ২১৯ নং বুথের কল্পনা ওঁরাও ওই কুপন বিলি করতে ৫০ টাকা করে তুলছেন বলে অভিযোগ বিজেপির। এমন ভিডিও এদিন প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন পড়ে জেলাজুড়ে।

বৃহস্পতিবার বালুরঘাটে সাংবাদিক বৈঠক করে ওই ভিডিও প্রকাশ করেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। সাধারণ মানুষের বর্তমান কঠিন পরিস্থিতিতেও শাসক শিবিরের “এমন নোংরা রাজনীতি এবং তোলাবাজি”কে ধিক্কার জানিয়েছেন তিনি। এটা শুধু বংশীহারিতেই নয়, জেলাজুড়েই চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে জেলা শাসকের কাছে অভিযোগও জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাংসদ।

তোলাবাজির ওই ঘটনা অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত ওই তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন ভিডিও ভাইরাল হতেই খানিকটা অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল শিবির।

জেলা তৃণমূল সভাপতি অর্পিতা ঘোষ জানিয়েছেন, ভিডিওর সত্যতা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কুপন তৃণমূলের বিলি করার বিষয় নেই। প্রশাসন করবে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন তিনি।

জেলা শাসক নিখিল নির্মল জানিয়েছেন, আমাদের জেলায় লক্ষাধিক কুপন বিলি করা হবে। ইতিমধ্যে বিডিওদের ওই কুপন পাঠানো হয়েছে। তাঁদের স্টাফ অথবা পঞ্চায়েত স্টাফরা বিলি করতে পারেন। টাকা তোলার বিষয়টি খোজ নিয়ে দেখছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.