পিটুনি কর সেটা আবার কি ভাবছেন তো ? এই রকম আবার কর হয় নাকি,এই রকম কর ছিল নাকি ? হ্যাঁ ছিল সেই করটা লঘু হয়েছিল এই ভারতবর্ষে এই বাংলাতেই মেদিনীপুর জেলাতে সময় টা ১৯৩০। বাংলার মাটি কাঁপছে সেই সময় মেদিনীপুরের দামাল ছেলেদের দাপটে ।
১৯৩০ সালে ৬ই এপ্রিল ছিল আইন অমান্য আন্দোলনের প্রথম দিন দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন আন্দোলনকারী সত্যাগ্রহীদের উপরে চললো পুলিশের নির্মম অত্যাচার ৫৯ জন নিহত ১৪২৯ জন সত্যাগ্রাহী কারারুদ্ধ হন। কারাদণ্ডে দিক দিয়ে বঙ্গদেশের মেদিনীপুরের স্থান দ্বিতীয় (১৪২৯জন ), প্রথম কলকাতা (২২৮৯জন )।
দাসপুরে ১৯৩০ ৬ই জুন মোহনখালি খালের উপর দিয়ে মানুষের মিছিল যেতে দেখে , সেই মিছিলে অভাবনীয় দৃশ্য দেখে ইন্সপেক্টর অব পুলিশ লোম্যান আতঙ্কিত হয়ে জনতার উপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন গুলিতে ঘটনাস্থলে ১৪ জন নিরস্ত্র মানুষ প্রাণ হারায় ।
নিরস্ত্র মানুষের উপরে গুলি চালিয়ে ক্ষান্ত হলেন না , ম্যাজিস্ট্রেট পেডির নির্দেশে দাসপুরের বাসিন্দাদের উপর ৯৬ হাজার টাকার ” পিটুনি কর ” বসানো হলো এবং আদায়ের জন্য ১৫০ জনের পুলিশের এক বিশেষ ক্যাম্প তৈরি হলো ।
পিটুনি কর নন্দীগ্রাম , সুতাহাটা থানা অঞ্চল থেকে সংগৃহীত হয়েছিল নন্দীগ্রাম থেকে ১৩৩৪৭ টাকা এবং সুতাহাটা থেকে ১৪০০০ হাজার টাকা আদায় করা হয় । পিটুনি কর বাবদ তমলুক মহকুমায় ক্ষয়ক্ষতি হয় ৫০০০০ হাজার টাকা এবং সম্পত্তিজনিত ক্ষতির পরিমাণ ৮৭,১৩৬ টাকা ।কাঁথি মহকুমায় সম্পত্তিজনিত ক্ষতির পরিমাণ ১৮৩৮৩ টাকা। এছাড়া তমলুক মহকুমায় ১৫ টি গ্রামে ৩৩৫০ টাকা , এবং কাঁথি মহকুমার ১২ টি গ্রামে ১৫৩০ টাকা ‘পাইকারি জরিমানা ‘ ধার্য করা হয় ।
পিংলা থানার ক্ষীরাই গ্রামে ১১ ই জুন ১৯৩০ সালে খাজনা বন্ধ আন্দোলকালে প্রায় ৬০০০ লোকের সমাবেশের উপর পুলিশ ৪৬ রাউন্ড গুলি চালায় ঘটনাস্থলে ১০ জন আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়।
এই ভাবে ক্রমশ পুলিশী নির্যাতন ফলে ১৯৩৩ সালের ১৩ ই জুলাই মেদিনীপুরে আইন অমান্য আন্দোলনের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের সমাপ্তি ঘটে।
সৌমেন ভৌমিক