করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর্মীদের নিম্নমানের পোশাক দেবার প্রতিবাদ করায় অন্যায়ভাবে আটক ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. ইন্দ্রনীল খান

বিশিষ্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. ইন্দ্রনীল খাঁ পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য দেওয়া নিম্নমানের পিপিই দেওয়ার বিষয়টা উত্থাপন করেন। যদিও রাজ্যের স্বাস্থ্যবিভাগ ঘটনার কথা স্বীকার করেছে, মহেশতলা থানা তাঁকে গ্রেপ্তার করে এবং জিনজিরা বাজার ফাঁড়িতে তাকে বেআইনিভাবে সারারাত আটক রাখা হয়।

রবিবার ২৯ মার্চ রাত সাড়ে নটায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরেরদিন দুপুর দুটো পর্যন্ত তাঁকে আটক রাখা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো এফআইআর বা আটকের আদেশ দেখায়নি পুলিশ। তাঁর চলভাষ আটক করা হয়, যদিও তার কোনো তথ্য রাখা হয়নি। তাঁর তত্ত্বাবধানে থাকা পীড়িত ক্যান্সার রুগীদের পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়ায়। পুলিশকর্তরা বলেন যে উপরের নির্দেশে এসব করা হয়েছে।

টুইটারে ডা. ইন্দ্রনীল খান লেখেন (১, ২ ও ৩ নং ছবি) কীভাবে স্বাস্থ্যকর্মীদের যথাযথ মানের চিকিৎসা সামগ্রীর পরিবর্তে রেনকোট দেওয়া হয়েছে। তারপরেই তাঁকে আটক করে হেনস্তা করা হয়।

তারপর তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রশংসা করে এক টুইট (৪ নং ছবি) করার পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ডা. ইন্দ্রনীল খাঁর আটক এবং/অথবা চার্জশীট দেওয়াকে কড়া ভাষায় নিন্দা করেছে চিকিৎসকদের যৌথ মঞ্চ

ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. ইন্দ্রনীল খাঁ শুধু কোভিড-১৯ বিশ্বমারীতে আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য মানসম্মত ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পোশাকের (পিপিই) দাবি জানিয়েছিলেন। তিনি সামাজিক গণমাধ্যমে নিম্নমানের পোশাক সরবরাহের প্রতি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। যখন মানসম্মত উপকরণের পরিবর্তে চিকিৎসকদের বর্ষাতি দেওয়া হয়, তিনি এবং চিকিৎসকদের যৌথ মঞ্চের সবাই তাঁর প্রতিবাদ করেন।

নিম্নমানের পোশাক দেওয়ার প্রতিবাদ করায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা, আটক করা, চার্জশীট দেওয়া চলবে না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুসারে ছোঁয়াচে রোগীদের চিকিৎসা করার সময় ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পোশাক ব্যবহার করতে হবে। কোভিড-১৯ বিশ্বমারীর সময়ে এই নির্দেশিকা অবশ্যমান্য। একজন অনিরাপদ স্বাস্থ্যকর্মী বহু সাধারণ মানুষের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেন।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক ইতোমধ্যেই জানিয়েছে যে ইতোপূর্বে সরবরাহকৃত ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পোশাক মানসম্মত ছিল না।

বৃহত্তর জনস্বার্থে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ ভুল হতে পারে না। কিন্তু একজন সতর্ক নাগরিক এবং স্বাস্থ্যকর্মীকে তাঁর মতামত প্রকাশের জন্য চার্জশীট দেওয়া প্রশাসনের পক্ষে দুঃখজনক।

ডা. ইন্দ্রনীল খাঁকে নিগ্রহে যুক্ত সবাই অবিলম্বে তাঁর বিরুদ্ধে সবরকম অভিযোগ তুলে নিন এবং সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে, যাঁরা দিনরাত এক করে মানজাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন, নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করুন।

চিকিৎসকদের যৌথ মঞ্চ

পশ্চিমবঙ্গ

(ডিওপিএ, ডব্লুবিডিএফ, এসএসইউ, এএইচএসডি, এইচএসএ, ডিওএফওডি, এনডিএ)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.