মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকারের উদাসীনতায় বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকদের অবস্থা দিন প্রতিদিন খারাপ হচ্ছে। এমনটাই অভিযোগ রাজ্য সিটু (CITU) নেতৃত্বের। লকডাউন পরিস্থিতি ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজের নিজের রাজ্যে ফিরতে শুরু করেছিলেন। কিছু সংখ্যক শ্রমিকরা ফিরতে পারলেও, বেশিরভাগ শ্রমিকই রয়ে গিয়েছেন ভিন রাজ্যে। অসহায় হয়ে তারা এখন মুখাপেক্ষী সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলির। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, কেবল মৌখিক আশ্বাস দিয়ে নিজের দায় সেরেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। নামকাওয়াস্তে ভিন রাজ্যে আটকে পড়া পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকদের জন্য একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হলেও তা কোনওভাবেই কাজে আসছে না।
পরিস্থিতি দেখে নিজেদের উদ্যোগেই একটি হেল্প লাইন নম্বর চালু করে সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু। গত কয়েক দিনে সেই হেল্পলাইন নম্বরে কয়েক হাজার ফোন এসেছে বলে দাবি রাজ্য কমিটির নেতা আসাদুল্লাহ গায়েনের(Asadullah Gayen)। সাংগঠনিকভাবে যতদূর সম্ভব সাহায্য করা হচ্ছে ওই ভিন রাজ্যে আটকে থাকা শ্রমিকদের। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকারের থেকে কোনওরকম সাহায্য মিলছে না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। রাজ্য সিটু নেতৃত্বের অভিযোগ, নবান্নে বৈঠকের পর বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী তো ফেসবুক লাইভে দেখাচ্ছেন। আর সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের নিয়ে হাসপাতাল বাজার ইত্যাদি জায়গায় গিয়ে নিজের কাজের ফিরিস্তি পেশ করছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাঁর প্রশাসন ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে আছে এমন কঠিন পরিস্থিতিতে। সিটু নেতৃত্ব জানিয়েছে, কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, বিহার ও ওড়িশা সহ আরও বেশকিছু রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের কয়েক হাজার শ্রমিক সহায় সম্বলহীন অবস্থায় আটকে রয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে সিটু নেতা আসাদুল্লাহ গায়েনের (Asadullah Gayen) অভিযোগ, “আমাদের হেল্পলাইনে ভিন রাজ্যের শ্রমিকরা প্রতিমুহূর্ত ফোন করছেন। চালাচ্ছে তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা। কাজকর্ম তো হারিয়েইছেন। বাড়ি ফিরে আসতে না পেরে সেখানে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন তারা। জুটছে না ন্যূনতম খাবারটুকু।” অভিযোগের সুরে তিনি আরো বলেন, “তারা ভিডিও করে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে নিজেদের অসহায়তার কথা প্রমাণ হিসেবে পাঠিয়েছেন। আমরা সাংগঠনিকভাবে তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রচার সর্বস্ব হয়ে গিয়েছে। তারা কাজের থেকে বেশি আত্মপ্রচারে ব্যস্ত। শ্রমিকদের কোনওরকম সাহায্য তো দূরঅস্ত খোঁজখবরটুকুও নেওয়া হচ্ছে না।”