করোনা কি বিশ্বব্যাপী গৃহযুদ্ধ লাগিয়ে দেবে? মদ বিক্রি বন্ধ করে সরকার নেশামুক্ত সমাজ বানাক

১৪-২৮ দিন গৃহবন্দী থাকার কারণে,মানুষ একাকিত্বে, ভবিষ্যতের অনিশ্চিয়তার ভয়ে, ডিপ্রেশনে মনোকষ্টে ভুগছে!

অনেকের ঘরে শান্তি নেই। কারণ অনেক বিবাহিত স্বামী স্ত্রী রা এই সুযোগে কাছে পেয়ে, চাওয়া পাওয়ার হিসাব করছে, একে অপরের উপর ক্ষোভ ঝাড়ছে ! যারা পরিবারের অর্থ উপার্জনকারী, তারা আর্থিক চিন্তায় ব্যস্ত! চাকুরী হারাবে কিনা, পরে কি করে আয় করবে, সংসার চালাবে , অসুখ হলে চিকিৎসার টাকা কোথায় পাবে,কোন হাসপাতালে যাবে , কি করে হাসপাতালে যাবে, বাঁচবে কিনা, যাদের ছেড়ে যাবে, তাদের কি করে চলবে– এ নিয়েই ভাবে! তাই এরা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। তাই সামান্য কথাকাটাকাটি ও ঝগড়া ডিভোর্সের বা আত্মহত্যার কারণ হতে পারে অনেক ফ্যামিলি তে ! খুব কম মডার্ন ফ্যামিলি তেই একে অপরকে সঠিক ভাবে বোঝে!সম্পর্কের, দায়িত্ব কর্তব্যের গভীরতা নেই! একে অপরকে বোঝার জ্ঞান ও নেই!

অনেকে ডিপ্রেশন কাটাতে, ভয়ে মদ খেয়ে সব ভুলে থাকতে গিয়ে নিজেদের চরম ক্ষতি করছে!! জানেই না কি করে এই সময় কাটাবে! কারণ ৩ বছর বয়স থেকে রুটিন মাফিক জীবন কেটেছে! পরিবারের কাউকেই আসলে চেনেনা! সকালে বেরিয়ে যেত, রাতে এসে টিভি দেখে ঘুমাতো! আর মহিলারা ঘরের কাজ করে বাকি সময় টা নিজেদের মত কাটাতো!ফেসবুক হোয়াটস্যাপ নিয়ে পরে থাকতো! কাজেই ২৪ ঘন্টা X ১৪ বা ২৮ দিন অন্যকে চোখের সামনে মেনে নেয়া কঠিন হচ্ছে! ৯৫% ফ্যামিলি মেম্বারের কোনো কমন হবি নেই!, যে পরনিন্দা পরচর্চা হোক, আর গান গাওয়া কি ডিবেট করা কি ধ্যান করা ….! বাইরে গিয়ে যে বসে থাকবে, তার উপায় নেই! বন্ধু দের সাথে আড্ডার উপায় নেই! বাস্তব জগতে অনেকের বন্ধু ও নেই , জ্ঞাতি গুষ্ঠি বা অন্য রিলেটিভ দের সাথে সম্পর্ক কেবল জন্ম বিয়ে শ্রাদ্ধ উপলক্ষে – দেখাতে বা কর্তব্য পালন করতে !

TV মিডিয়ার মনোবিদ রা মানুষ কে নেগেটিভ ভাবে ম্যানিপুলেট করতেই প্রোগ্রাম সেট করে! এই সময় কি করে নানা প্রোগ্রাম এর মাধ্যমে মানুষ কে গণ ডিপ্রেশন থেকে রেহাই দেবে, তার বিদ্যা, যোগ্যতা ও ইচ্ছা তাদের নেই!

রাজ্যসরকার এই সুযোগে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নালিশ করেই যাচ্ছে! কেন্দ্র কিছু দিচ্ছেনা! কেন্দ্র কেন দেবে? নিজেরা কেন আত্মনির্ভশীল নয়?কেন বাংলা কেন্দ্র কে দেয়না? আসলে ভিখারিরা অন্যের টাকায় জীবন ধারণ করে বলে, ভিক্ষা পাওয়া টাই তাদের অধিকার ভাবে! কেন বাংলা সব দিকে আত্মনির্ভশীল হয়নি! কেন বাংলায় সব কিছু উৎপাদন হয়না? মমতা শো বিসনেস করছে লক্ষণ রেখা এঁকে দিয়ে! মুখ্যমন্ত্রীর কাজ কি? প্রশাসনের সব কাজ মুখ্যমন্ত্রী একা করলে, বাকিদের ঋণ ও ট্যাক্স এর টাকায় সরকার পুষবে কেন? তার পুলিশ স্ট্রেসে ভুগে,অন্যায় ভাবে জনগণকে পেটাচ্ছে, কারণ পুলিশ ও মানুষ, তারাও অন্যদের মত মনের কষ্টে ভয়ে ভুগছে! কিন্তু তারা তাদের ডিউটি করতে বাধ্য! নিজে করোনা আক্রান্ত হতে পারে জেনেও! আর এদের কোনো সঠিক শিক্ষা কোনো সরকার দেয়নি! কি করে কথায়, আচরণে, বুঝিয়ে , প্ল্যান করে মানুষ কে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়- শেখেনি! এদের কে এমন ট্রেনিং দেয়নি! আর এদের অনেকে তো ১০ ক্লাস পাশ ও করেনি! জ্ঞান অর্জন করার কোনো সময় সুযোগ ও নেই! আর লক ডাউন বলতে কি বোঝায়, কার কি অধিকার, কে কি কেন করতে পারবে ও পারবেনা, সেটা পুলিশ বা জনগণ কে সরকার জানায় নি! অপদার্থ সরকার। আর আছে কি দরকার??? সরকার এর কেন এই সব সমস্যা ( খরা , বন্যা, ভূমিকম্প, মহামারী, রায়ট, গৃহযুদ্ধ ….) সমাধানের নির্দিষ্ট প্ল্যান করা নেই? যখন সমস্যা ছিলোনা, তখন কেন আগাম ভেবে প্ল্যান করেনি? কেন এই সব সমস্যা সমাধান এর প্লানের স্ট্রেস টেস্ট করেনি? সরকার কি জানে সিস্টেম রেলেভান্ট জব, বাহন, কারখানা কি ও কেন? সেটা কি জনগণ ও পুলিশ কে জানিয়েছে? আজ পার্টি র তোলাবাজ রা কোনো দায়িত্ব নিচ্ছেনা! আমাকে বললে আমি ২৪ ঘন্টায় প্ল্যান ও কমুনিকেশন প্লাটফর্ম ফ্রিতে বানিয়ে দেব!

কাজেই সব জনরোষ সরকার এর উপর যে কোনো মুহূর্তে পরতে পারে. আর তার পরিনাম ভয়াভহ! সব নেতা দলদাস গণধোলাই খেয়ে মরবে তখন! ডাক্তার স্বাস্থ্যকর্মী পুলিশ রা ভয়ে সব ছেড়ে দিতে পারে! বিরোধী দল গুলো কোনো দায়িত্ব নেয়না, কেবল দোষ ধরে! আগুনে ঘি দেয়! আর কি কেন্দ্র, কি রাজ্য সরকার, বিরোধী দল কে সাথে নিয়ে কোনো সমস্যা সমাধান করেনা! এরা সম্মান পায়না বলেই আরও সরকার বিরোধী হয়! মনে রাখবেন এমন পরিস্থিতি পূর্বে কখনো হয়নি! কাজেই কি হবে, পরেই জানা যাবে! কি হতে পারে ও তার সমাধান কি হবে, তা ভাবাই এখন কর্তব্য, আর সেই জন্য এই লেখা! আমার অনুমান যদি ১০০% ভুল হয়, আমি সুখী হবো!

সমাধান

সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির সবাই ১৫ মিনিট প্রায়ানাম করুন, ৩০ মিনিট ফ্রিহ্যান্ড এক্সারসাইজ করুন! যাতে স্ট্রেস মুক্ত হন! সন্ধ্যাবেলা রিপিট করুন!সবাইকে নিয়ে সারাদিন ও আগামী ৩ সপ্তাহের প্ল্যান করুন! নিজেদের মধ্যে খোলা মনে কারো দোষ না দিয়ে আলোচনা করুন! যে যার নিজের দোষ স্বীকার করুন, অন্যের দোষ না খুঁজে! অতীতের ভুল থেকে শিখুন! এতদিনের প্লানে , কাজের পদ্ধতিতে কি ভুল ছিল, ঠিক কি হবে, তা নিয়ে আলোচনা করুন! অতীতের সুখের দিনের কারণের স্মরণ করুন!

বিনা রোগে কম খরচে কি করে বাঁচা যায়, কি করে জ্ঞান এর ঘাটতি পূরণ করবেন ভাবুনকি করে হারানো সম্পর্ক জোড়া লাগানো যায়, কেন লাগানো উচিত ভাবুন। তারপর কথা বলুন! আপনি মরলে আপনার দায়িত্ব কে পালন করবে, তা নিয়ে ভাবুন।কয়েকটা ফ্যামিলি র সাথে চুক্তি করুন, যে আমরা এই এই শর্তে বৃহৎ ফ্যামিলি ( বা সমবায় ফ্যামিলি) হিসাবে এর পর বাঁচবো! লাইফ স্টাইল ভুল কি ছিল, কি ঠিক, কিভাবে ঠিক করবেন ভাবুন!

বৌ এর থেকে রান্না বান্না ঘরের কাজ শিখুনবউকেও আপনার কাজ ও দায়িত্ব শেখান। বৌ কি করে পাউডার না মেখেও, ডেইলি নতুন ড্রেস না পরেও সুন্দরী ও আকর্ষণীয় হতে পারে, সেই বিদ্যা শেখান। মানে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ডেইলি ১ ঘন্টা ধ্যান ও ব্যায়াম করুন! পরকীয়া, পরনিন্দা, লোভ, নেশা তে কেন পরে তা পর্যালোচনা করে কিভাবে কেন এখন মুক্ত হওয়া দরকার- শিখুন ও শেখান !

এই সুযোগে মদ বিড়ি পরকীয়া মাংস লোভ ছাড়ুন! মদ বিড়ি না খেয়ে রাজ্য সরকাকে ভিখারি করুন। রাজ্য সরকার এর উচিত ছিল মদ বিক্রি বন্ধ রাখা! রাজ্য সরকার কি অযোগ্য ও মানবতা বিরোধী সরকার নয়? না হলে মদ বিক্রি বন্ধ করে এই সুযোগে মানুষ কে নেশামুক্ত হতে সাহায্য করতো! কাউকেই পুলিশের মার খেতে হতোনা! মানুষ কে বোঝাতে পারেনি ও মানুষের আশু সমস্যা সমধান এর কোনো পথ দেখায়নি! মেরে ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে সরকার সবাইকে ভয়ে চুপ করিয়ে রাখতে চায়। ফল মারাত্বক হতে পারে! গণ ডিপ্রেশনে সবাই বিদ্রোহ করতে পারে!

আর ধর্ম ব্যবসায়ী রা যাতে কোনো সুযোগ না পায়, সেটাও দেখুন! ওরা আপনাদের উপর নির্ভর করে রোজগার করে বেঁচে থাকে! আপনাদের কোনো উপকার করে কি? অধ্যাত্বিকতাবাদ অন্য জিনিস! সব ধর্মের সংসার ত্যাগী সন্যাসী/সন্ন্যাসিনী রা সমাজসেবী হয়! ইসলামে কোনো ধর্মীয় পদ আছে কি , যে পদের ব্যক্তি রা সব ত্যাগ করে মানব সমাজের জন্য বাকি জীবন সমর্পন করে? হুজুর ইমাম পীর রা একটা বিয়েতেই সন্তুষ্ট কি? এরা ভোগী না ত্যাগী? যে নিজের ভোগের কথা ভাবে, সে কি সমাজসেবা করতে পারে?কেন এ বছর কেবল ঘট পূজা হবেনা? সেই টাকায় কেন নোঙ্গরখানা খুলে অভুক্ত দের এখন খাবার দেবেনা? কেন দেবতা সেবা না করে এখন পাড়ার লোকদের সেবা করবেনা? পূজা কমিটির লোকেরা এখন পালা করে বাজার দিয়ে আসতে পারে! তাতে রাস্তায় লোক যাবেনা! পাড়ার ভ্যান বা রিকশা সাথে নিক! পুলিশ কে জানিয়ে করুক!

রোগ যাতে না হয়, সেই চেষ্টা করুন, গৃহবন্দী হোন !আবারো ভালো দিন আসবে! ছুটি বলুন আর বনধ বলুন, সময় টা ভালো কাজে লাগান!

মদ বিক্রি বন্ধ করে এই সুযোগে সমাজ কে নেশামুক্ত করুক মমতা!
নতুবা সব নেতারা গণধোলাই খেয়ে মরতে পারে!

মৃনাল মজুমদার (Mrinal Majumdar), বার্লিন (Berlin) ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.