অনেক দিন পর আবার পরলাম #সূর্যদেবের_বন্দী বা Prisoners of the sun. সেই কোন ছোট্ট বেলায় এই টিনটিন থেকেই প্রথম #কোয়ারেন্টাইন শব্দ শিখে ছিলাম। উক্ত কমিক্সে ইয়োলো ফিভারের জন্য একটি জাহাজকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়। যদিও তখন এবং এখনও যদি কোনো জাহাজে কোনো সংক্রামক রোগ দেখা যায় তাহলে সেই জাহাজ কে কোয়ারেন্টাইন করা হয় । আগে জাহাজে হলুদ জ্বর মহামারী শুরু হলে হলুদ পতাকা তোলা হত। ইয়োলো ফিভারের অধিকাংশ ক্ষেত্রে লক্ষণসমূহ হলো জ্বর, ক্ষুধামন্দা, বমিভাব, মাংসপেশিতে ব্যথা (বিশেষ করে পিঠে), ও মাথাব্যথা।লক্ষণগুলো সাধারণত পাঁচ দিনের মধ্যে সেরে যায়।কারো কারো ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো উন্নতি হওয়ার একদিনের মধ্যে পুনরায় জ্বর হতে পারে, পেটব্যথা শুরু হয় ও যকৃৎ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে জন্ডিস হতে পারে ও শরীর হলুদ হয়ে যায়। এইজন্য এই রোগের নাম পীতজ্বর রাখা হয়েছে। জন্ডিস হলে রোগীর রক্তক্ষরণ ও কিডনি ফেইলিওরের সম্ভাবনা বাড়ে।
প্রতিবছর দুই লক্ষ লোক পীতজ্বরে আক্রান্ত হয় ও প্রায় ত্রিশ হাজার মৃত্যুবরণ করে।প্রায় নব্বই শতাংশ রোগীই আফ্রিকার। দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকায় এই রোগের প্রাদুর্ভাব অনেক বেশি হলেও এশিয়াতে খুব একটা দেখা যায় না। ১৯৮০ সাল থেকে পীতজ্বর রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।এর জন্য জলবায়ুর পরিবর্তন, লোকজনের অধিক ভ্রমণ, শহরে বসবাসের প্রবণতা ও পর্যাপ্ত টিকার ব্যবস্থা না থাকাকে দায়ী করা হয়। সপ্তদশ শতাব্দীতে দাস বাণিজ্যের ফলে এই রোগ আফ্রিকা থেকে দক্ষিণ আমেরিকায় ছড়িয়ে যায়।সপ্তদশ শতাব্দী থেকে আমেরিকা, আফ্রিকা ও ইউরোপে বেশ কয়েকবার মহামারী দেখা দেয়।অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে পীতজ্বরকে অন্যতম ভয়ানক সংক্রামক ব্যাধি হিসেবে গণ্য করা হত।১৯২৭ সালে সকল ভাইরাসের মধ্যে ইয়েলো ফিভার ভাইরাসকেই প্রথমবারের মতো পৃথক করা সম্ভব হয়েছিল।
হ্যাঁ , টিনটিন অবশ্যই সাদা সভ্যতার প্রতীক মানে রেসিস্ট। টিনটিনের বহু কমিক্সে পৃথিবীর নানা প্রাচীন জাতি ও তাদের সভ্যতা, নিয়ম, বিচার , সংস্কৃতিকে বিকৃত করে দেখানো হয়েছিল। তাই নিয়ে বিস্তর ঝামেলা , বিতর্ক হয়। তবুও এই টিনটিন ছোট বেলায় আমাকে ছোট ছোট জিনিস শিখিয়ে ছিল। যেমন -#সোভিয়েতে_টিনটিন, ওই ছোট বেলায় আমাকে কমিউনিজমের অসাড়তাকেও বুঝতে শিখিয়েছিল।
©দুর্গেশনন্দিনী