ক্রমেই আতঙ্ক বাড়াচ্ছে মারণ করোনা। দেশজুড়ে বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এরাজ্যেও করোনার সংক্রমণ রুখতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। আগেই ৩১ মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের সব সরকারি, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যে সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এবার ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যের সব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বেড়েই চলেছে আতঙ্ক। এরাজ্যে ইতিমধ্যেই ৫৯ জনের করোনা সংক্রমণের পরীক্ষা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত রাজ্যে কারও করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েনি। সোমবার নবান্নে করোনা মোকাবিলায় প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকেই করোনা মোকাবিলায় একাধিক পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার।
সোমবার বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানান। করোনার সংক্রমণ রুখতে রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আপাতত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিও ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে। তবে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বাচ্চাদের জন্য চাল-ডাল তাদের বাড়িতে পাঠানোর বন্দোবস্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের ৩ লক্ষ ২৪ হাজার মানুষের স্ক্রিনিং করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরই পাশাপাশি আরও ৫ হাজার মানুষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে করোনা মোকাবিলায় ২০০ কোটি টাকার তহবিল গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার করোনা নিয়ে নবান্নে বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অযথা করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। তবে গুজবে কান দেবেন না। আত্মসন্তুষ্টি থাকা ঠিক নয়।’ এদিন ইতালি, আমেরিকা-সহ একাধিক দেশের করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খতিয়ান পেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
করোনার সংক্রমণ রুখতে ইতিমধ্যেই কল সেন্টার চালু করেছে রাজ্য সরকার। কল সেন্টারে ইতিমধ্যেই ৫ হাজার ফোন এসেছে। করোনা নিয়ে কেউ জানতে চাইলে তাঁকে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। করোনার সংক্রমণ রুখতে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকেও জমায়েত এড়াতে অনুরোধ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সিনেমা হল, রিয়েলিটি শোগুলিও ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখতে আবেদন জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।