১৯৩১ জনগণনা আসামে বাঙালি ৩৯,০৫,৫৮১জন অসমীয়া ১৯,৯২,৮৪৬জন, পার্বত্য ১২,৫৩,৫১৫জন। সুরমা উপত্যকা (কাছাড় ও শ্রীহট্ট ) সেখানে বাঙালি ২৮,৪৮,৪৫৪,জন অসমীয়া ৩৬৯২জন , ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা বাঙালি ১৯,০৫,৫৮১জন অসমীয়া ১৯,৭৮,৮২৩ জন ।
অথচ ১৯৫১ সালে স্বাধীনতা ভারতে অনুষ্ঠিত সেন্সাস রিপোর্টে দেখা গেল ৪০ লক্ষ বাঙালি কমে ১৭ লক্ষ আর ২০ লক্ষ অসমীয়া বেড়ে ৪৯ লক্ষ হয়ে গেল ?
১৯৪১ এ যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য জনগণনা হয়নি । ১৭ বছর পরে অসমীয়া বৃদ্ধি হলো অথচ বাঙালি বৃদ্ধি হলো না আসামে ?
বিস্মিত সেন্সর সুপার স্বয়ং তিনি তাঁর রিপোর্টে লিখেছিলেন এ নিয়ে রিপোর্টের কিছু অংশ আছে আমার কাছে।
এখন যেখানে D ক্যাম্প সেই গোয়ালপাড়াতে ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের সময় ৩০০ বাঙালি প্রাইমারি স্কুল ছিল সেখানে আজ বাঙালি স্কুল নেই সব অসমীয়া স্কুলে পরিণত হয়েছে।
একটু পিছনে যদি যাই ১৯১১ আসামে মোট জনসংখ্যা ৩৮ লক্ষ ৩৯ হাজার এর মধ্যে অসমীয়া জনসংখ্যা ৮লক্ষ ৩৫ হাজার বাঙালি ১৭লক্ষ ৫৮ হাজার , অন্যান্য পার্বত্য জনজাতি ১০ লক্ষ ২১ হাজার
এবার যদি ১৯৯১ সালে আসি সেখানে দেখা যাচ্ছে অসমীয়া ১,২৯,৫৮,০৮৮ শতকরা অনুপাত ৫৭.৮১% বাঙালি ৪৮,৫৬,৫৩২ জন শতকরা অনুপাত ২১.৬৮% একবার ভাবুন অনুপাত ও জনসংখ্যা বাঙালি বৃদ্ধি হয়নি।
বাঙাল খেদাও আন্দোলনে সময় গৌহাটির অলিগলিতে শোনা যেত :- আলি কুলি বাঙালি
নাক চ্যাপ্টা নেপালী
কোর পড়া আহালী
কুকুর পোয়ালি ॥
যার মানে (আদিবাসী কুলি , বাঙালি আর নেপালী কোত্থেকে এল সব কুকুরের বাচ্চারা )।
আসলে আসামে বাঙালির কফিনে পেরেক পোঁতা হয়েছিল ১৯৩৮ সালে। আসামে যখন মুসলীম লীগ সরকার চালু ছিল তখন বিধানসভায় বাঙালি প্রতিনিধি বেশি রেখেও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু গোপীনাথ বরদলৈকে আসামের মুখ্যমন্ত্রী/প্রধানমন্ত্রী করেন। বাঙালি নেতা অরুণকুমার চন্দ তাঁর নাম প্রত্যাহার করে নেন । কিন্তু অলিখিত শর্ত ছিল এবছর ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা হতে মুখ্যমন্ত্রী হলে আগামীবার সুরমা উপত্যকা হতে করতে হবে এবং পালা করে করতে হবে। ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে সেই শর্ত উপেক্ষিত হল। বাঙালি তাঁর অধিকার থেকে বঞ্চিত হলো। দেশবিভাগের আলোচনা যখন চরম মাত্রা পেয়েছে ঠিক তখন গোপীনাথ বরদলৈর পরামর্শে ইংরেজ সরকার গণভোটের সময় শ্রীহট্ট কে বেছে নিল। ভূভারতে এমন দৃষ্টান্ত নেই । কোন প্রদেশের একটি জেলাকে গণভোটের জন্য বেছে নেওয়ার যৌক্তিতা কি ছিল ? হ্যাঁ তাঁর পর থেকে আসামের বাঙালিরা প্রতিটাদিন এক করুন ইতহাসের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে ।
সৌমেন ভৌমিক