পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশ থেকে দুই হিন্দু কিশোরীকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে কিছুদিন আগে। তারপর থেকে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। এর মধ্যে শোনা যায়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বিষয়টি নিয়ে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। অপহরণে জড়িত একজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। কিন্তু সুষমা এতে খুশি নন। কারণ অপহৃত দু’জন এখনও বাড়ি ফেরেনি। তিনি মঙ্গলবার টুইটারে লিখেছেন, ন্যায়বিচারের স্বার্থে দুই কিশোরীকে অবিলম্বে তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

একটি সূত্রে জানা যায়, সিন্ধু প্রদেশের একটি প্রভাবশালী পরিবার মেয়েদু’টিকে অপহরণ করেছিল। তাদের ধর্মান্তকরণ করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই বিয়ের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। তারপরে নানা মহলে ক্ষোভ দেখা যায়।

সুষমা টুইটে সেই ঘটনার উল্লেখ করে লিখেছেন, মেয়েদু’টির বয়স যে কম, তা নিয়ে তো কারও সন্দেহ নেই। রবীনার বয়স ১৩ আর রিনার বয়স ১৫। নয়া পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীও নিশ্চয় বিশ্বাস করেন না যে, তাদের এখনই অন্য ধর্মে দীক্ষিত হওয়া বা বিবাহ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো বয়স হয়েছে।

পাকিস্তানের পুলিশ গত রবিবার ওই ঘটনায় জড়িত এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। অভিযোগ, সে দুই কিশোরীর বিয়েতে সাহায্য করেছিল। স্থানীয় মিডিয়ার খবর, দু’টি মেয়ে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের আদালতে আবেদন জানিয়েছে যাতে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়।

গত রবিবার সুষমা স্বরাজ ও পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরীর মধ্যে অপহরণ নিয়ে টুইটারে তর্ক শুরু হয়। সুষমা পাকিস্তানে ভারতীয় হাইকমিশনে হিন্দু কিশোরীদের অপহরণ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। ফাওয়াদ চৌধুরীর বক্তব্য ছিল, এটা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়। স্বরাজ টুইটারে লেখেন, আমি একটা রিপোর্ট চেয়ে পাঠাতেই পাকিস্তানের মন্ত্রী ঘাবড়ে গিয়েছেন। ফাওয়াদ পালটা লেখেন, সুষমা যেন নিজের দেশেও সংখ্যালঘুদের পক্ষে দাঁড়ান।

হোলির ঠিক আগে রবীনা ও রিনাকে অপহরণ করা হয়। তাদের ‘বিবাহের’ ছবি ভাইরাল হতেই পাকিস্তানে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁরা ইমরান খানকে মনে করিয়ে দেন, গত বছর ভোট প্রচারের সময় তিনি বলেছিলেন, ক্ষমতায় এলে নাগরিকদের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবেন।

পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের মধ্যে হিন্দুদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। তাঁদের বেশিরভাগ সিন্ধু প্রদেশে বাস করেন। স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে, সিন্ধের উমরাওকোট জেলাতেই প্রতি মাসে জোর করে অন্তত ১৫ টি মেয়ের বিয়ে দেওয়া হয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.