মেয়েদের কি বাবামায়ের সম্পত্তির উপর অধিকার থাকা উচিত?

যে ছেলেমেয়ে নিজের আয়ে বিয়ে করে ও মা বাবার দায়িত্ব নেয়,তার কেবল সম্পত্তির উপর অধিকার হোক।আর সন্তান যদি বিকলাঙ্গ বা কর্ম অক্ষম হয় , তখন তার সম্পত্তি পাওয়া উচিত। মেয়ে দের ইন্ডিয়ান বা হিন্দু আইনে বাবামায়ের উপর কোনো আইনি দায়িত্ব নেই!

মেয়েদেরকে হিন্দু নিয়মে নিঃস্বার্থ ভাবে সব দায়িত্ব ও ঋণ থেকে মুক্ত করে দান করে দেয়া হয়, যাতে তারা সেই পরিবার কে আপন ভাবতে পারে! আর হিন্দুই ধর্মে দান করলেও, দানের জন্য দক্ষিণা দিতে হয়! তাই বাবা মা এক কালীন মেয়েকে কিছু দিয়ে দেয়! এর মানে এই নয়, যে সব সম্পত্তি ছেলে পাবে! হিন্দু ধর্মে মেয়েদের বিক্রি করা হয়না, যা অন্য ধর্মে করা হয়। যে সন্তান বাবা মা কে দেখবে, বা তাদের দায়িত্ব কর্তব্য যেমন ঠাকুর মা ঠাকুর দা কে খাওয়াবে বা বিকলাঙ্গ বা অসহায় ভাই বা পিসি র দায়িত্ব নেবে,সে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে! এটাই আসলে হিন্দু নিয়ম! হিন্দু ফ্যামিলি র বড় ছেলে সব সম্পত্তি দেখাশোনার দায়িত্ব পায়, মালিক হয়না। আর সেই বড় ছেলে বাবার ভূমিকা নেয়। সবাইকে ভরন পোষণ দেয়া ও তাদের কে দেখা শোনার দায় বড় ছেলের উপর বর্তায়। যে ফ্যামিলি তে হিন্দু সামাজিক নিয়মে দায়িত্ব পালন হয়, তাদের ফ্যামিলি তে কোনো সমস্যা হয়না! আমাদের বংশের যা ইতিহাস জানি , সব সম্পত্তি আমার বাবা র ছিল , কারণ তার পূর্বপুরুষ বাড়ির বড় ছেলে ছিল। কিন্তু বংশের সবাই সমান ভাগ পেত। অন্য জেঠাতো ভাইদের চেয়ে বাবা ছোট হলেও, বাবার ঘাড়ে দায়িত্ব বেশি ছিল ও বাবা সেই সম্মান ও পেতো। কোনো দ্বন্দ্ব ছিলোনা। দায়িত্ব ভাগ হতো যোগ্যতা অনুযায়ী। বাবা কে ছোটবেলা থেকে থেকে শেখানো হয়েছে , এই বংশ টিকিয়ে রাখার দায় তার! আর সে সেটা করেছে। প্রত্যেক হিন্দু অবিভক্ত ফ্যামিলি একটা রাজপরিবার, যে নিয়মে আজ ও রাজপরিবার চলে।

সম্পত্তি খন্ড খন্ড করার কোনো মানে নেই! এই জন্য হিন্দু রা বিয়ের দেবার সময় সমান ক্ষমতাশালী বংশ দেখে বিয়ে দিতো! যাতে কন্যার কষ্ট না হয়. বাকিটা ভাগ্য! মেয়েরা বাবা ভাই কে গরিব বানিয়ে গয়না নিয়েধুম ধাম করে বিয়ে করার শখ ছাড়ুক। নিজের আয়ে মেয়ে জামাই ধুমধাম করুক।

আমি হিন্দু নিয়মে কোনো ভুল দেখিনা! কিন্তু সময় পাল্টে গেছে। আজকাল অনেক ছেলে দায়িত্ব পালন করেনা। তারা বা তাদের বৌ রা সম্পত্তির উপর হা করে থাকে! কাজেই নতুন নিয়ম হোক, যে বাবা মা ও তাদের দায়িত্ব কর্তব্যের ভার নেবে, তারাই সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে! ছেলে বা মেয়ে বলে কোনো কথা নয়! মেয়ের বিয়ের সময় বাবা ঋণ করে জামাই বরণ করবে, আবার সেই জামাই মেয়ে সম্পত্তি নেবে, এটা অন্যায়!

বাবা মায়ের দায়িত্ব থাকা উচিত সন্তান দের মেধা অনুযায়ী সমান সুযোগ দিয়ে পড়াশুনা শেখানো, শেষ হলে ১ বছর ভরণ পোষণ দেবে কাজ খোঁজার জন্য! তার পর আলাদা হাড়ি করে দেয়া! যখন নিজের আয়ে সন্তান তার ফ্যামিলির ভরণ পোষণ করতে পারবে, তখন আবার বাড়ি আনা ও এক হাড়ি তে খাওয়া! সন্তান দের আত্মনির্ভশীল করার দায় বাবা মায়ের। বাবা মায়ের অপত্যস্নেহের জন্য অনেক সন্তান অযোগ্য ও অমানুষ হয়!

আমি নারী পুরুষের ভেদ করিনা। ফিজিক্যাল ও হরমোনাল কারণে এদের মেন্টালিটি আলাদা হয়, ক্ষমতা আলাদা হয়। যে যেটা ভালো পারে, তাকে সেই দায়িত্ব দেয়া উচিত।

যদি কোনো মহিলার আমার নীতি মানতে অসুবিধা হয়, যুক্তি দেবেন! আর নারীবাদী হলে পালাউ দেশে যাবেন! পালাউ নিয়ে পরে লিখবো !
মৃণাল মজুমদার , বার্লিন, ০৮.০৩.২০২০

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.