পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষকে বলেছিলাম সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপি এক। মানুষ আমাকে বিশ্বাস করেনি। এখন বুঝতে পারছে। মালদায় ভাগাভাগি করে লোকসভার একটা আসন বিজেপি এবং একটি আসন কংগ্রেস পেল। উত্তরবঙ্গের সবকটি আসন বিজেপি পেয়ে গেল। কি করে হয়? বুধবার দুপুরে পুরাতন মালদার ছোট-সূর্যাপুর এলাকায় তৃণমূলের কর্মী সম্মেলনে যোগ দিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গে আমরা জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় করেছি, মেডিকেল কলেজ করেছি। স্কুল-কলেজ তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু ওরা কি করছে? ওরা তো ভোটে জিতে চলে গেছে। ওরা শুধু দাঙ্গা লাগাতে জানে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা বলেছিলাম কংগ্রেসের ভোট বিজেপি পাবে এবং সিপিএমের ভোট বিজেপি পাবে। সেটাই হয়েছে। সারা বছর আমরা কাজ করবো। আর ওরা ফল নেবে। তৃণমূল এই কাজ করে না। খাল কেটে কুমির আনার চেষ্টা কখনোই করে না তৃণমূল।
পুরাতন মালদার সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছোট-সূর্যাপুর এলাকায় তৃণমূলের কর্মী সম্মেলনে এদিন দুপুরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেন, মালদা কখনো তৃণমূলকে একটিও আসন দেয়নি। প্রতিবছর নির্বাচনের সময় এখানে থেকে প্রচার করে যাই। আজ পর্যন্ত কেন আমরা জিততে পারলাম না? কোথায় দুর্বলতা রয়েছে? মালদার মানুষ কেন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এটাও দেখতে হবে। অথচ যাদের জেতাচ্ছে তাদের যজ্ঞেও লাগে না , হোমেও লাগে না। নিজেদের মধ্যে ভুল সংশোধন না করলে হাজার মিটিং করে কিছু হবে না। মালদায় দীর্ঘদিন ধরে আসছি। কোথায় যায়নি? সাবিত্রী মিত্রের এলাকায় গিয়েছি। ভুতনিতে সেতু ছিল না। সেতু বানিয়েছি। তারপরও আমরা জিততে পারলাম না মানিকচকে। মালদার নেতারা কবে ঐক্যবদ্ধ হবে। এখনো বলছি আমার সম্পদ হচ্ছে বাংলার মানুষ। এদের জন্য দলটা তৈরি হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন , মৌসম নূরের সভায় হাজার হাজার মানুষ হয়েছে। কিন্তু লোকসভায় ওকে জেতানো যায়নি। কেন এরকমটা হচ্ছে? আমি যে কোনও সময় ১০ জন নেতার সঙ্গে বসতে পারি। কিন্তু যতক্ষণ না পর্যন্ত মালদা পুনরুদ্ধার হচ্ছে। ততক্ষণ আমি কোনও নেতার সঙ্গে বসবো না।
মমতা ব্যানার্জির আক্ষেপ, মুশিদাবাদের মত জেলাকে পুনরুদ্ধার করেছি। মালদা কেন হবে না? কি কারণ বলুন তো। কোথাও কি কোন বোঝাপড়ার অভাব রয়েছে? কংগ্রেস ছেড়ে মৌসুম নূর বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ওকে উত্তর মালদার তৃণমূলের প্রার্থী করানো হয়েছিল। যে মেয়েটা মানুষের জন্য কাজ করছিল। তাকে জিততে দেওয়া হলো না। আর যে কাজ করে না সেই বিজেপি প্রার্থী জিতে গেল।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পুরসভার নির্বাচনকে সামনে রেখে ইংরেজবাজার এবং পুরাতন মালদা পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা নেতাদের। সভামঞ্চে নেতাদেরকে ধমক দিয়ে মমতা ব্যানার্জি বলেন, তোমরা নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বন্ধ করো। মানিকচক বিধানসভা কেন্দ্রে সাবিত্রী আর গৌড় মন্ডলের এত কেন ঝগড়া হয়। আমি কিছু বুঝবো না। মালদায় ভালো ফল করতে হবে। ইংরেজবাজার পুরসভার ২৯ টি ওয়ার্ডের দায়িত্ব জেলার দলের সাত নেতার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইভাবে পুরাতন মালদা পুরসভার দায়িত্ব প্রাক্তন এবং বর্তমান চেয়ারম্যান বিভূতি ঘোষ এবং কার্তিক ঘোষের ঘাড়ে তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু পুরসভায় নয়, বিধানসভা ভিত্তিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের জেলা নেতাদেরকেও।