পুরভোট সম্পর্কিত তৃণমূলের দলীয় বৈঠক সবে শেষ হয়েছিল ৩ মার্চ। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে ৩০ শতাংশ কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৌসুমী দে-র নামে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ করে হোর্ডিং পড়ল শহরের রাস্তায়। বুধবার রাতে নীলরতন সরকার হাসপাতাল এবং আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের গেটের এই হোডিং ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে এই ঘটনার নেপথ্যে পরোক্ষভাবে দলীয় কর্মীদের দায়ী করেন মৌসুমী দে।
পোস্টারের হেডিং এ লেখা হয়েছে, ‘সৌজন্যে কাটমানি, কলকাতা টু মন্দারমনি’। ওই হোর্ডিংয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কাটমানি-সহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ জানানো হয়েছে। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে কাউন্সিলর হয়ে কী ভাবে সম্পত্তি বাড়িয়েছেন, তা তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ধরে ধরে উল্লেখ করা হয়েছে ওই পোস্টারে।
এদিকে হোডিং কান্ড বিষয়ে মৌসুমি দেকে প্রশ্ন করা হলে, এই ঘটনার নেপথ্যে পরোক্ষভাবে দলীয় কর্মীদের দায়ী করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘টানা ১০ বছর ধরে ওই এলাকার কাউন্সিলর রয়েছেন তিনি। তবে এবার মৌখিক ভাবে শোনা গেছে ৫০ নম্বর ওয়ার্ড সংরক্ষিত নয়, অথচ তাকে প্রার্থী করা হতে পারে, তখন থেকেই তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ রকম ঘটনা এই প্রথম নয়। আগেও এ রকম পোস্টার পড়েছিল। গত জুলাই থেকেই মোটামুটি নিশ্চিত যে আমিই টিকিট পাচ্ছি। তারপর থেকেই কুৎসা রটানো শুরু হয়েছে।’
এদিকে মৌসুমী দের এই বক্তব্যের পরই, তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল যে ফের প্রকাশ্যে এল তা বলাই বাহুল্য। যদিও সংরক্ষণের জেরে গোষ্ঠী কোন্দল যে কোন ভাবেই মানা হবে না এমনটা দলীয় বৈঠকে স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল ভবনে বৈঠকে এই বিষয়ে কাউন্সিলরদের কড়া বার্তা দিয়ে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে দল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। পারফরম্যান্স হবে শেষ কথা। সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কেউ যদি মনে করে থাকেন তার পরিবারের লোককে টিকিট দেবে সেটা হবে না। পরিবারের লোকজন নেওয়া হবে কিনা সেটা বিবেচনা করবে দল।’
এরপরে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে কাউন্সিলরদের জানিয়ে দেন যে, ‘কেউ যদি মনে করেন টিকিট না পেলে অন্য দলে যাবেন তারা আজই দল ছেড়ে দিন। দলের কোনও সমস্যা হবে না।’ যদিও তৃণমূল রয়ে গেল তৃণমূলেই। বজায় রইল গোষ্ঠী কোন্দল। এদিন মৌসুমী দে-র বক্তব্যর মধ্যে দিয়ে তা আরও স্পষ্ট হল।