দোলে রঙ খেলার পর রিঠা ব্যবহার করুন, সাবান নয়। প্রতিটি গাঁয়ে সাবানের বিকল্পে কয়েকটি রিঠা গাছ লাগান।


প্রতি বছরই দেখি, ক্ষতিকর রঙ ও আবীরে দোল খেলে, দেহত্বকে রাসায়নিক দূষণ ঘটিয়ে, অতঃপর কড়া ক্ষার/সাবান মেখে স্নান করে ফেরেন গরীব মানুষ, এমনকি ধনী মানুষটিও। এভাবে দেহত্বক আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অথচ হাতের কাছেই রিঠা ফলে রয়েছে, গ্রামবাসী ছুঁয়েও দেখেন না। রিঠার পাকা ফলের শাঁস আমাদের চুলের পক্ষে একটি অনন্য সাধারণ পরিপুষ্টি, ভেষজ পণ্য। রিঠার নাম হয়তো অনেকেই শুনেছেন, ইংরেজিতে বলে Soapberry বা Soapnut, বোটানিক্যাল নাম Sapindus saponaria, এটি লিচু পরিবারের একটি গাছ (Family: Sapindaceae)। পাতাগুলি alternate, লম্বায় 15–40 সেন্টিমিটার, বৈশিষ্ট্যে pinnate, তাতে 14-30 টি leaflet থাকে, প্রান্তীয় লিফলেটটি (terminal leaflet) প্রায়ই অনুপস্থিত। এদের পুষ্পবিন্যাসকে বলা হয় প্যানিকল, তা বেশ বড়সড়, তাতে ছোটো মাখন-সাদা ফুল। এদের ফল চামড়া-গাত্রের মতো একটি ড্রুপ, যার ব্যাস ১-২ সেন্টিমিটার; ফল হলদে রঙের, পাকলে কালচে বাদামী।
প্রতিটি গ্রামের পতিত জমিতে কয়েকটি রিঠা গাছ লাগান, তার ফল সংগ্রহ করে সারা গ্রামের প্রয়োজন মেটান। খুব সহজেই রিঠার চারা বানানো যায়; বীজ থেকে চারা তৈরি হবে, গুটি কলম করেও করা যায় চারা।


রিঠার পাকা ফল ফাটিয়ে, কালো বীজ সরিয়ে, থেঁতলে উষুম গরম জলে ভিজিয়ে রাখুন। ১২/১৪ ঘন্টা জলে ভেজানোর পর তার সামান্য ভেজা শাঁস-জল কোনো পাত্রে নিন। তা ভালো করে কচলে মাথা ও গায়ে মাখুন, প্রয়োজনে গা কচলানোর জন্য ধুঁধুলের শুকনো খোসা নিন। গা-হাত-চুল কেচে পরিস্কার করে, হয়ে উঠুন রূপবান-রূপসী। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে, চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে রিঠার জুড়ি নেই। সাবান ব্যবহার করে ত্বকের নানান সমস্যা ডেকে আনবেন না। প্রকৃতির মাঝে বাঁচতে শিখুন। সুন্দর/সুন্দরীর গোপন কথা হোক রিঠা!

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2907739129264516&id=100000853728528

ড. কল্যাণ চক্রবর্তী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.