‘অন্ত্র ছিঁড়ে নিয়েছিল, কিন্তু আদালত তামাশা দেখছে’, কান্নায় ভেঙে পড়লেন নির্ভয়ার মা

আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে বার বার দেরি হওয়াটা ভারতের আইনি ব্যবস্থার ‘অকার্যকরতা’কেই তুলে ধরছে। সোমবার তৃতীয়বারের জন্য নির্ভয়া কাণ্ডের চার আসামির ফাঁসির আদেশে দিল্লির এক আদালত স্থগিতাদেশ জারি করার পর নির্ভয়ার মা আশা দেবী এমনই মন্তব্য করলেন। এদিন রায় ঘোষণার পর আদালত থেকে বেরিয়ে আশা দেবী বলেন, গোটা বিশ্ব দেখছে ভারতে বিচার কীভাবে পিছিয়ে যাচ্ছে। বিচার ব্যবস্থা অপরাধীদের সমর্থন করছে।

আশা দেবী আরও বলেন, এখনও পর্যন্ত প্রত্যেকবারই তিনি আশাহত হয়েছেন। এরমধ্যে আসামিদের ফাঁসি হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। নির্ভয়ার থেকে খারাপ আর কোনও মামলা হতে পারে না। তাও, বিচার পাওয়ার জন্য লড়াই করেই যেতে হচ্ছে। বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন আশা দেবী। বলেন, ওরা ওর অন্ত্র ছিঁড়ে নিয়েছিল, কিন্তু আদালত বসে বসে তামাশা দেখছে’। প্রসঙ্গত ২০১২ সালের ১৬ডিসেম্বরের রাতে এতটাই নির্মমভাবে নির্ভয়ার উপর অত্যাচার চালানো হয়েছিল যে অন্ত্রনালি তার দেহের বাইরে বেরিয়ে এসেছিল।

নির্ভয়ার বাবা বদ্রীনাথ সিং স্ত্রীর দুঃখ ভাগ করে নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আশা দেবী নির্ভয়ার মা। কেউ তাঁর বেদনা বুঝতে পারে না। এমনকি তিনি বাবা হলেও তাঁর পক্ষেও আশাদেবীর যন্ত্রণা পুরোপুরি বোঝা সম্ভব নয়। তিনি জানান, বারবার করে তিনি আশা দেবীকে ভরসা দেন যে তাঁরা একদিন না একদিন ন্যায়বিচার পাবেন। কিন্তু, সন্তানের জন্য মা যে কষ্ট অনুভব করছে, তা ভুলে থাকা কঠিন।

সোমবার, দিল্লির একটি আদালত ২০১২ সালের এই গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামির ফাঁসি কার্যকর করার আদেশ স্থগিত করে। মঙ্গলবার ভোর ৬টাতেই এই চার আসামির ফাঁসি হওয়ার কথা ছিল। অতিরিক্ত দায়রা বিচারক ধর্মেন্দ্র রানা বলেন, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাবে না কারণ আসামিদের অন্যতম পবন গুপ্তের প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দের বিচারাধীন রয়েছে। কাজেই তাদের সমস্ত আইনি বিকল্প শেষ হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.