মারা গেল শেষ প্রাণীটিও, আসামের দ্বীপ থেকে চিরতরে বিলুপ্ত গোল্ডেন লেঙ্গুর

দ্বীপে একা একা বসবাস করত সে। তার সঙ্গীরা আগেই চলে গিয়েছিল সব। গাছপালা, চারিদিকে থইথই করছে জল— তার মধ্যেই ধীরে ধীরে একা হয়ে যায়। সেও চলে গেল অবশেষে। সম্প্রতি আসামের উমানন্দ দ্বীপে মারা গেল একটি গোল্ডেন লেঙ্গুর। সে মারা যাওয়ার সঙ্গেই, ওখান থেকে সম্পূর্ণভাবে মুছে গেল এই প্রজাতির বাঁদরের অস্তিত্ব।

ঘন সোনালি লোমে ঢাকা শরীর, তার ফাঁক দিয়েই বেরিয়ে আছে কালো মুখ। গোল্ডেন লেঙ্গুরের এই চেহারার সঙ্গে পরিচিত অনেকেই। কিন্তু এখন এরাই বিপদে পড়েছে। আসামের (Assam) ব্রহ্মপুত্র নদীর (Brahmaputra river) মাঝখানের এই উমানন্দ দ্বীপে এই প্রজাতির লেঙ্গুরের দেখা মিলত। মূলত আসামের পশ্চিমাঞ্চল, ভূটানের (Bhutan) কিছু জায়গাতেই ছিল এদের প্রধান বসবাস। কিন্তু এখন তারা অনেক কমে আসছে। উমানন্দ দ্বীপও ব্যাতিক্রম নয়। ধীরে ধীরে এখান থেকে লেঙ্গুরের সংখ্যা কমতে থাকে। শেষে এর সংখ্যা এসে দাঁড়ায় একটিতে। সম্প্রতি সেই লেঙ্গুরটিও মারা যায়। সেই সঙ্গে উমানন্দ দ্বীপে গোল্ডেন লেঙ্গুর পুরোপুরি মুছে যায়।

মৃত্যুর কারণ এখনও জানা যায়নি। পোস্টমর্টেমও করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা। তবে সেখানকার পরিবেশবিদরা মনে করছেন, সঙ্গী সাথীরা আগেই মারা যাওয়ায় একা হয়ে যায় লেঙ্গুরটি। সেখান থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে সে। তবে আসল কারণ কী, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না।

একে খাবার নেই, থাকার জায়গাও কমে আসছে; তার ওপর রয়েছে চোরাশিকার। এদের সোনালি ঘন লোমের লোভে মানুষ শিকার করেছে। তারই ফল দেখা যাচ্ছে এখন। আজ শুধু ভারত নয়, গোটা পৃথিবীতে এদের অস্তিত্ব গভীর সংকটের মুখে। বেশ কিছু বছর ধরে এদের সংখ্যা কমেছে মারাত্মকভাবে। আজ হাতে গোনা কিছু গোল্ডেন লেঙ্গুরই (Golden legume) বেঁচে আছে। সেখান থেকেও একজন মারা গেল। এই সবটাই হয়েছে মানুষের কাজের জন্য। এইভাবেই হয়তো এরা একা হতে হতে পৃথিবী থেকে মুছে যাবে। আরও বহু প্রজাতি এদের পথ নেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.