২৫শে মার্চ ১৮৯৮ স্বামী বিবেকানন্দ নীলাম্বর মুখোপাধ্যায়ের বাগানবাড়িতে ব্রহ্মচর্যব্রতে দীক্ষা দেন মিস মার্গারেট নোবলকে এবং তাঁর নামকরণ করেন ‘নিবেদিতা’।
১৮৯৮ সালের ২৮শে জানুয়ারি ‘মম্বসা’ নামক জাহাজে কলকাতা বন্দরে এসে পৌঁছান মার্গারেট। তাঁকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ স্বয়ং। প্রথমে তিনি উঠলেন চৌরঙ্গী অঞ্চলে একটি হোটেলে। এখানে থাকাকালীন তিনি বাংলা ভাষা আয়ত্ত করা এবং এ দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সম্বন্ধে ধারণালাভ করার কাজে মগ্ন হয়ে পড়েন।
স্বামীজি তাঁকে বুঝিয়ে দিতেন যে ভারতবর্ষের সেবা করতে গেলে ভারতবর্ষকে ভালোবাসতে হবে। ইতিমধ্যেই মার্গারেট নোবলকে জনসাধারণের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য ১১ই মার্চ স্টার থিয়েটারে একটি বক্তৃতার আয়োজন করলেন স্বামীজি। তিনি স্বয়ং ঐ সভায় সভাপতির আসন অলঙ্কৃত করেন। মার্গারেটকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় স্বামীজি বলেন, “ইংল্যান্ড আমাদের আর একটি উপহার দিয়েছে–মিস মার্গারেট নোবল।”
ওই সভায় স্বামীজি মার্গারেটের বক্তৃতা শুনে খুবই খুশি হন এবং স্বামী রামকৃষ্ণানন্দকে এক পত্রে লেখেন, “আমার বিশ্বাস বাগ্মিতায় সে শীঘ্রই মিসেস বেসান্তকে ছড়াইয়া যাইবে।”
১৭ই মার্চ হল সেই দিন যাকে মার্গারেট নোবল উল্লখ করেছেন “day of days” বলে। ওই দিন তিনি শ্রীশ্রী মাকে প্রথম দর্শন করেন। মা প্রথম দর্শনেই তাঁকে আপন করে নিলেন। নাম দিলেন ‘খুকি’। মার্গারেট নোবলের সেই সময় মনে হলো শ্রীশ্রীমায়ের আদর অভ্যর্থনায় তিনি যেন হিন্দুসমাজভুক্ত হলেন। আর শ্রীশ্রীমা তাঁকে সাদরে গ্রহণ করায় স্বামীজি হলেন নিশ্চিত। তাঁর পর ২৫শে মার্চ শুক্রবার সকালে স্বামীজি এসে মার্গারেট নোবেলকে নীলাম্বরবাবুর বাগান বাড়িতে নিয়ে গেলেন। দিনটি ছিল “the day of announciation”। মঠের ঠাকুরঘরে স্বামীজি মার্গারেটকে দিয়ে সংক্ষেপে শিবপুজো করিয়ে তাঁকে ব্রহ্মচর্যব্রতে দীক্ষিত করলেন। দীক্ষাকালে স্বামীজি মার্গারেট নোবলের নতুন নাম দিলেন ‘নিবেদিতা’।
সৌমেন ভৌমিক