জাতীয় কংগ্রেস, ভারতীয় কংগ্রেস, ইন্দিরা কংগ্রেস, সোনিয়া কংগ্রেস, রাহুল কংগ্রেস সব মিলিয়ে কংগ্রেসের কঙ্কালসার চেহারা দিল্লির বিধানসভা নির্বচনের পর। আরও ভয়াবহ রদপ ধারণ করেছে। সর্বভারতীয় কংগ্রেস এখন আঞ্চলিক দলে পরিণত। বামন হয়ে চাদে হাত দেওয়া অর্থাৎ বিজেপির সঙ্গে টেক্কা দিতে গিয়ে অতল তলে তলিয়ে যাচ্ছে। সর্বোপরি যে দলের স্রষ্টা ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি এবং দীনদয়াল উপাধ্যায়ের মতো স্বনামধন্য ব্যক্তি, পাশাপাশি যে দলের চালক আদবানীজী, অটলজী, সুষমাজী, অরণ জেটলি, বিষ্ণুকান্ত শাস্ত্রী, মনোহর পারিকর, অনন্ত কুমার, মোদীজী, অমিতজীর মতো দেশভক্তরা, এছাড়া দেশের নানা প্রান্তে। ছড়িয়ে আছেন বা ছিলেন, দলের অগণিত কার্যকর্তা যাদের নিরলস পরিশ্রম এবং আর এস এস-এর মতো দেশপ্রেমী সংগঠনের অনুপ্রেরণা দলের মধ্যে বিরাজমান, সেই দলকে টেক্কা দিতে কুড়িটি দল একত্রিত হয়েও কিছু করতে না পারার লজ্জা এদের কুরে কুরে খাচ্ছে। এদিকে আপের সবকিছু ফ্রিতে পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতিকে প্রশ্রয় দিয়ে কংগ্রেস ও সিপিএমের জামানত বাজেয়াপ্ত হলো। একটু ভাবুন, আপের । ক্ষমতা দখলের পিছনে রয়েছে কেজরির। কলঙ্কিত রাজনীতি। আগামীদিনে দিল্লিবাসী বুঝবে ‘কত ধানে কত চাল’? পাঁচ বছরের জন্য পুনরায় দিল্লিবাসীকে সেবার নামে প্রথমেই ইমামভাতা ও মোয়াজ্জেম ভাতা বাড়িয়ে দিয়ে শুরু হলো কেজরির তোষণের রাজনীতি। ভাবছি, দিল্লিতে হিন্দুদের অস্তিত্ব আগামীতে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? কারণ, কংগ্রেসের সংখ্যালঘু ভোটাররা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য আপকে ভোট দেয়েছে। মনে রাখা ভালো, কেজরি দলের প্রতীক হলো ঝাটা আর তা দিয়ে হিন্দু সাফাই হবে এটা নিশ্চিত। কেন্দ্রীয় সরকার কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বিলুপ্ত করেছে এবং সারাদেশের মানুষ বাহবা দিলেন যা কংগ্রেসের সত্তুরের রাজনীতিতে করা সম্ভব হয়নি। আজ। কেজরির দয়ায় দিল্লিতে পুনরায় সেই ৩৭০ ধারা চালু হলো বলে মনে হয়। ফ্রি’তে দরিদ্র ও সাধারণ মানুষেরা সুবিধে পেতে থাকলে হতকুঁড়ে হয়ে যাবে। তাদের কর্মক্ষমতা লোপ পাবে। আগামীতে চাকরি, ঘর-বাড়ি, পাত্র-পাত্রী, বিদেশ ভ্রমণ ইত্যাদি চাইবে একটি ভোটের বিনিময়ে। এক সময় রাজ্য দেউলিয়ার খাতায় নাম লেখাবে। মোদীজী দেশকে ঋণমুক্ত করার চেষ্টা করছেন, দেশকে স্বনির্ভর করার চেষ্টা করছেন, আর কিছুরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শুধুমাত্র সংখ্যালঘুদের সুবিধে দিচ্ছেন। জনগণের করের টাকায়। সবকিছু ফ্রিতে দেওয়ার রাজনীতি করে বিধানসভায় জয়ী হবার টার্গেট রাখছেন। কেজরি এবারের নির্বাচনে সেই নজির গড়লেন আর কেজরির পরোক্ষ মদতেই কিন্তু শাহিনবাগের ঘটনা ঘটল, যা তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করল দিল্লিবাসী।
প্রসঙ্গত, এনডিএ বা বিজেপি দল দেশকে যেমন সঠিক দিশা দেখাতে পারে তেমনি সঠিক নিরাপত্তা দিতে পারে। সেই দলের ক্ষতি করার জন্য কংগ্রেস, সিপিএম, সপা, বসপা, আপ ও তৃণমূল উঠে পড়ে লেগেছে। এই আঞ্চলিক দলগুলি আরএসএস ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নিন্দা ও সমালোচনা করতে পারে কিন্তু জামাত ও মিমের মতো দেশবিরোধী সংগঠনগুলির সমালোচনা করতে বুক কঁপে এদের, ভয় পায় অবিজেপি দলগুলি। এটা ভাবার বিষয়। আসাদুদ্দিন ওয়েসির সিএএ বিরোধী সভায় কলেজ ছাত্রীমুখে পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান বুঝিয়ে দিল মিম দলটি যেন তেন প্রকারেণ ভারতকে টুকরো করতে চাইছে। এবার দেখতে হবে, কংগ্রেস, সিপিএম, সপ, বসপা, তৃণমূল দলগুলির নেতারা কতটা সোচ্চার ওই দেশদ্রোহী বক্তব্যের বিরুদ্ধে ? দেখব, ডান-বামের মদত পুষ্ট কবি, সাহিত্যিক ও কলাকুশলীরা রাস্তায় নামেন কিনা। আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ও দৈনিক সংবাদপত্রে নজরে এলো যে হলদিবাড়ি হুজু সাহেবের মেলায় গিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী আর চ্যাড়াবান্দা উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান একটা পুস্তিকা উদবোধন করে তোষণের রাজনীতি করলেন। মুখ্যমন্ত্রীর হুবহু নকল করে চলেছে টিএমসি দলের নেতা ও মন্ত্রীরা। তবে মুখ্যমন্ত্রী ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা প্রণবানন্দজী মহারাজের ১২৫তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গিয়ে অনুশোচনার সুরে বললেন, তিনি মুসলমান তোষণ করেন না, তিনি মানবতাকে তোষণ করেন। এতদিন তিনি বলে আসছিলেন যে ‘আমি মুসলমান তোষণ করি। পিকের শেখানো বুলি আওড়াচ্ছেন বলে মনে হলো! বিষয়টি কিছুই না বিষয়টি হলো আগামী পুরসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে হিন্দু ভোটের রাজনীতি করলেন।
অবিজেপি দলগুলির কাছে আবেদন তোষণের রাজনীতি বন্ধ করে সমন্বয়ের রাজনীতি করুন আর গঠনমূলক চিন্তা করুন। কারণ, বিরোধীদেরও কিন্তু বড়ো ভূমিকা রয়েছে দেশ ও দশের জন্য।
রাজু সরখেল