বিয়ে করতে রাজি ছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ি। কথাটা শুনলে হয়ত চট করে হজম হবে না। তাহলে?
তাহলে একটু ধৈর্য ধরতে হবে।
অটলবিহারী বাজপেয়ী (Atal Bihari Vajpayee) রাজনীতি না করলেও কবি হিসেবে পরিচিতি পেতেন হিন্দি কবিতার জগতে। একটি মানুষ যাঁর কবি মন, স্বভাবে কোমল অথচ কর্তব্যে কঠিন ব্যক্তিত্ব। নেতৃত্ব দেওয়ার সহজাত গুণ। ধীর স্থির অথচ বলিষ্ঠ। সব কিছু ছাড়িয়ে সিনেমা পাগল একটা মানুষ, দেশ বিদেশের সিনেমা নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা মারতে পারা একটা মানুষ। এমন মানুষের একটা নিজস্ব আকর্ষণ ক্ষমতা তো থাকবেই।
হলে কি হবে দেশ, কবিতা আর সিনেমার বাইরে আর কোনও কিছুর প্রবেশাধিকার নেই এই অটল দুনিয়ায়।
তবু ঘটেছিল। যে ঘটনার কথা শুরুতেই বলা হয়েছে, সেই ঘটনা ঘটেছিল। ঘটেছিল বিদেশের মাটিতে।
কার্গিল যুদ্ধে পাকিস্তানকে পর্যুদস্ত করার পর পড়শীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টায় কোনওদিন কম গুরুত্ব দেন নি বাজপেয়ী। দিল্লি-লাহোর বাস চালু হয়েছে। মৈত্রী প্রয়াস চালিয়ে গেছে ভারত। এমনই একটা সময়ে একদিন পাকিস্তানের মাটিতেই বাজপেয়ীর কাছে এল বিবাহ প্রস্তাব। সে দেশের এক মহিলা সাংবাদিক কোনও রাখঢাক না করেই সরাসরি অটলবিহারীকে বললেন, ‘আপনি তো এখনও অবিবাহিত, আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই।’ বিস্মিত বাজপেয়ী মহিলার দিকে তাকালেন। তাঁর চোখে প্রশ্ন, কৌতূহল, কিছুটা হয়ত কৌতুকও। মহিলা বললেন, আমি আপনাকে বিয়ে করব পরিবর্তে আপনি আমাদের কাশ্মীর দেবেন।’
ধীরে কথা বলা বাজপেয়ী, একটি পংক্তি শেষ করে দীর্ঘ বিরতির পর আর একটি পংক্তি শুরু করা বাজপেয়ী সেদিন সময় নষ্ট করেননি উত্তর দিতে। নরম গলায় সেই মহিলাকে বলেছিলেন, ‘আমি আপনাকে বিবাহ করতেই পারি তবে যৌতুকে আমার সমগ্র পাকিস্তান চাই’।
বলা বাহুল্য ‘সম্বন্ধ’ আর এগোয়নি।