বাঙালির মনে লেগেছে।
কিছুদিন আগে মমতা-রাজ্যে কে বা কারা বিবেকান্দের মূর্তি ভেঙেছিল। তখনও নিশ্চয়ই বাঙালির মনে লেগে ছিল তবে সেই মন খারাপ প্রতিবাদের ভাষা হয়ে এতটা ফুটে ওঠেনি সোশ্যাল মিডিয়ায়। গতকাল ট্রাম্পের বক্তৃতার পর থেকে যতটা হচ্ছে। বামপন্থীদেরও খুব মনে লেগেছে। লাগারই কথা। বিবেকান্দের নামের উচ্চারণে ভুল! খারাপ লাগারই কথা। তবে এই তো সেদিন, যখন দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীজির মূর্তিতে আমেরিকান ইংরাজিতে অপশব্দ লেখা হল তখন তাঁরা রা কাটেন নি। মনে লেগেছিল নিশ্চয়ই। তবে মনের কথা মুখে আনেননি। বুক ফাটে তবু মুখ ফোটে না ভাব করে তাঁরা তখন সম্ভবত চুপ থাকাই শ্রেয় মনে করেছিলেন।
ট্রাম্প স্বামীজি সম্পর্কে কি বলেছেন তা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে, ঘরে ঘরে উচ্চারণ নিষ্ঠ বাঙালি সমাজ ট্রাম্পের ভুল উচ্চারণ নিয়ে ‘আমাদের ছেলে বিজয় সিংহ’ মার্কা দর্প নিয়ে নিজেদের স্বাক্ষর রাখতে শুরু করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
‘এই মানুষটির সামনে শ্রদ্ধাশীল হয়ে দাঁড়ালে আমি তাঁর মধ্যে ঈশ্বরকে দেখতে পাই। নিজেকে মুক্ত মনে হয়।’
বিবেকানন্দ সম্পর্কে এই কথাগুলি বলেছেন ট্রাম্প। তিনি সেই দেশ থেকে এসেছেন যে দেশের মানুষকে ভাই ও বোন সম্বোধন করে স্বামীজি ধন্যবাদ দিয়েছিলেন অমন একটা ধর্ম মহাসভা আয়োজন করার জন্য। শিকাগো থেকে ফিরে এসে ছিলেন আবার সেই বাঙালি সমাজে, যে বাঙালি সমাজ একদিন বলেছিল বেলুড় মঠে ‘ফস্টিনষ্টি’ হয়। সেই গোত্রের বাঙালি আজও আছেন। যাঁরা জানেন না একজন বিদেশির উচ্চারণ নিয়ে মস্করা করা টা আসলে বিপ্লব নয়, অসভ্যতা।
ট্রাম্প বিবেকানন্দ বলতে গিয়ে বলেছেন, বিবেকানমন। শুধু বিবেকানন্দ নয়। সচিন তেণ্ডুলকরকে বলেছেন সুচিন, কোহলিকে বলেছেন কোলি, চায়েওয়ালা বলতে গিয়ে বলেছেন, চিওয়ালা, শোলে বলতে গিয়ে বলেছেন শোজে্।
এগুলো তাঁর অজ্ঞানতা নয়, নিতান্তই জিভের জড়তা।
বাঙালি বড় তো হচ্ছে, বেড়ে উঠবে কবে?