তৃনমূল সরকার ক্ষমতায় আসার আগে নিয়ম করে বাম সরকারের সূরা নীতির সমালোচনা করতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছড়া কেটে কেটে তিনি বলতেন, রাম রাজ্য দুধ-ঘি পাওয়া যেত,আর বাম রাজ্যে শুধুই মদ। ওটাই ঢুক ঢুক করে খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে বাম সরকার। সকলের ধারণা হয়েছিল,মমতা ক্ষমতায় এলে এরাজ্যে মদ বিক্রির ওপর ব্যাপক কড়াকড়ি শুরু হবে।
কিন্তু যারা ভয় পেয়েছিলেন তারা কিছুদিনের মধ্যেই আশ্বস্ত হলেন, না এই সরকার আর যাই হোক মদ বিরোধী নয়। মদ মুক্ত বাংলার পরিবর্তে এরাজ্যকে মদে ভাসিয়ে দেবার জন্য একটার পর একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে। সম্প্রতি তেমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়ে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিল মমতা সরকার।
সরকার
সিধান্ত নিয়েছে রাজ্যের সমস্ত স্টার হোটেলে এখন থেকে সারারাত মদ পাওয়া
যাবে। আগে এই তারকা যুক্ত হোটেল গুলিতে রাত ১২টা পর্যন্ত মদ বিক্রি হতো।
এখন ভোর চারটার সময় হাত পাতলেও মদ পেতে পারেন আপনি। সেইসঙ্গে বার খোলার
জন্য আগে যে লাইসেন্স ফি নেওয়া হতো তা কমিয়ে অর্ধেক করে দেওয়া হয়েছে। আগে
দিতে হতো ৫ লক্ষ টাকা,এখন দিতে হবে ২.৫০ লক্ষ টাকা। উদ্দেশ্য মদ ব্যবসায়ীরা
যাতে উৎসাহিত হতে আরও বেশি বেশি করে মদের বার খোলার জন্য এগিয়ে আসে।
মমতা সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাস্তার ধারে মদের দোকানের বিক্রিবাট্টার সময় অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। আগে রাত আটটা পর্যন্ত মদ বিক্রি করা যেত,সেই সময় বাড়িয়ে এখন রাত ১১ টা করা হয়েছে। আগে ছুতোয় নাতায় মদের মদের দোকান বন্ধ করে রাখতে হতো, এখন ৩৬৫ দিন দোকান খোলা। সেই সঙ্গে রাজ্যজুড়ে ঢালাও মদ বিক্রির লাইসেন্সও দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন সর্বত্র একটু দূরে দূরে গজিয়ে উঠতে পেরেছে মদের দোকান।
আর পাড়ায় পাড়ায় তরুণ সমাজের মধ্যে মদ পানের প্রবণতাও ভয়ঙ্কর ভাবে বেড়েছে। সন্ধ্যের পর রাস্তার ধারে ধারে বাইক দাঁড় করিয়ে তরুণদের মদ খাওয়ার দৃশ্য এখন অতি পরিচিত। ফলে নিরাপত্তা জনিত সমস্যাও মাথা চাড়া দিচ্ছে। যদিও এর সুফল পাচ্ছে মমতা সরকার। ফুলে ফেঁপে উঠছে সরকারি কোষাগারে। বাম আমলে মদ থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হতো মাত্র ১০০০ কোটি টাকার কিছু ওপরে। আর এখন মদ থেকে সরকারি কোষাগারে ঢুকছে ১১০০০ কোটি টাকার ওপর।