গরু মাংসভোজী নয়, তৃণভোজী

ম্যাড কাউ রোগ (bovine spongiform encephalopathy, সংক্ষেপে BSE) মনে আছে? কেন হয়েছিল? কারণ গরুকে মৃত ভেড়া, গরু, কুকুর, বিড়াল, শূকর প্রভৃতির মাংস ও হাড় উচ্চ তাপে গুঁড়ো করে খাওয়ানো হয়েছিল, এখনো খাওয়ানো হয়। তার মধ্যে প্রায়ন প্রোটিন থাকে। সেই প্রোটিনের কারণে এই ম্যাড কাউ রোগ হয়। তৃণভোজী গরুকে মাংসাশী করানো হলে, দুধে ও জিনে তার কী কী প্রভাব পড়ে, কেউই জানে না। পরিবর্তিত জীনের খাবার আমেরিকাতে পশুকে খাওয়ানো হয়। তার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব কী, তা কেউ জানে না। কাজেই টাকা দিয়ে যখন দুধ আমদানি করা হবে, ভারত কেন মাংসভোজী, পরিবর্তিত জীনের শস্যভোজী গরুর দুধ কিনবে? সেই দুধ খেলে দীর্ঘমেয়াদি মানুষের উপর কী কী প্রভাব পড়বে, তার উত্তর প্রথমে বের করা হোক। বিদেশ থেকে দুধ না এনে, দুধের চাহিদা কমাবার ব্যবস্থা করুক ও দেশেই দুধ উৎপাদন বাড়াক।

দীর্ঘমেয়াদি দুধের চাহিদা কমাবার জন্য, নতুন আইন করে প্রত্যেক মহিলার জন্য এক সন্তান নীতি চালু করুক। দ্বিতীয় সন্তান তারাই নিতে পারবে, যাদের বার্ষিক আয় কম করে দশ লক্ষ। আর তৃতীয় সন্তান নিতে চাইলে সরকারকে কুড়ি লক্ষ টাকা জরিমানা দিক বা বার্ষিক আয় পঞ্চাশ লক্ষ টাকা করুক। সন্তানের জন্ম দিলে তাকে মানুষও করতে হয়। কৃষিভূমি, ঊর্বরতা শক্তি ও চাষের জন্য প্রয়োজনীয় মিষ্টি জল ক্রমশঃ কমবে। চাইলেই গরু পোষা যাবে না, কারণ আজকাল দুনিয়া ব্যাপী দুগ্ধজাত দ্রব্য ও মাংসের চাহিদা বেড়ে যাওয়াতে, প্রায় ৪০% উৎপাদিত শস্য পশু খাদ্য হিসাবে বা জৈব-ডিজেল উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়। হিসাব করে দেখা গেছে পোল্ট্রিতে এক কিলো গোমাংস উৎপাদন করতে প্রায় ১২-১৬ কিলো শস্য ও ১৫৫০০ লিটার জল লাগে। কাজেই দুধ সহ সব খাবারের চাহিদা কমানোর সব ব্যবস্থা সরকারের করা উচিত।

মৃণাল মজুমদার

মতামত লেখকের ব্যক্তিগত

আনন্দবাজারে প্রকাশিত লেখার (আমিষ খায় মার্কিন গরু, তাই দুধও আমিষ, মত সঙ্ঘের) বিজ্ঞানসম্মত সমালোচনা করে লেখক এই লেখাটা লিখেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.