আমাদের ভারত, ২৪ মার্চ: ব্রিগেডের মঞ্চই হোক বা দিল্লির যন্তর-মন্তর, নরেন্দ্র মোদির বিরোধিতায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর হাত ধরাধরি এখন অতীত। গোটা দেশেই কার্যত ভেস্তে গিয়েছে মোদি-বিরোধী জোট। শনিবার রাজ্যে এসে, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী যে নজিরবিহীন ভাষায় সিপিএম থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে একহাত নিয়েছেন, তাতেই বিরোধী জোটের এই অবলুপ্তি স্পষ্ট হয়েছে। শনিবারই আবার উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসকে দেখা গিয়েছে, সরাসরি সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টির ঘর ভাঙাতে।
নেহরু পরিবারের গড় উত্তরপ্রদেশে মায়াবতীর দল থেকে শনিবার কংগ্রেস ভাঙিয়ে নিয়েছে চার প্রাক্তন বিধায়ককে। তাঁরা হলেন- এতমাদপুরের ডা: ধরমপাল সিং, ফতেপুর সিক্রির ঠাকুর সুরজপাল সিং, ব্রিজেশ চাহর এবং খেড়াগড়ের ভগবান সিং কুশওয়াহা। গত বিধানসভা নির্বাচনে হারলেও, জাতপাতের সমীকরণের খেলায় পটু উত্তরপ্রদেশে এই চার নেতাই ছিলেন মায়াবতীর দলে উচ্চবর্ণের মুখ। তাঁদের কংগ্রেসে যোগদানের ফলে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিএসপির উচ্চবর্ণ ভোট কিছুটা কমবে বলেই আশঙ্কা মায়াবতীর দলের। শুধু তাই কংগ্রেসের আগ্রাসন থেকে শনিবার রেহাই পায়নি সমাজবাদী পার্টিও। বরেলির প্রাক্তন সাংসদ কুমার সর্বরাজ সিংকেও সপা থেকে ভাঙিয়ে নিয়েছে কংগ্রেস। তিনিও ছিলেন সমাজবাদী পার্টির উচ্চবর্ণের প্রতিনিধি।
মাস পেরোতেই মোদি-বিরোধী মহাজোটের সম্ভাবনা এইভাবে খানখান হয়ে যাওয়ায় কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা করেছে অন্যতম বিরোধী দল আম আদমি পার্টি। দলের নেতা আশুতোষ বলেন, ‘কংগ্রেস কি উত্তরপ্রদেশে বিরোধীদের হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছে? নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার বদলে কংগ্রেস কেন বাকি বিরোধীদের সঙ্গে অন্য খেলা খেলছে?’
উত্তরপ্রদেশে যখন এই পরিস্থিতি, তখন বাংলায় মালদার চাঁচলের জনসভায় দাঁড়িয়ে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধি শনিবার রীতিমতো চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন দুই বিরোধী দল সিপিএম এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যা কার্যত বিরোধী ঐক্যের দফারফা করে ছেড়েছে। বিজেপি নেতারা গোড়া থেকেই বিরোধীদের এই জোটের তীব্র সমালোচনা করে এসেছেন। এই জোটকে তাঁরা ‘স্বার্থের জোট’ বলেছেন। সেই জোট এইভাবে অবলুপ্ত হওয়ায়, স্বভাবতই হাসি চওড়া হয়েছে মোদি-শাহদের মুখে।