রাজনীতির গলিতে কখন কে কোথায় বাঁক বদলে ফেলে তা বোঝা কঠিন। ঠিক তেমনটাই হল দিল্লিতেও। কেজরিওয়ালের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানকে রাজনীতি মুক্ত করতে কোনো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ডাকা হয়নি। বরং ঐ দিনটিকে দিল্লিবাসীর উৎসবের দিন হিসেবে তুলে ধরতে শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানে শহরের আম জনতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কিন্তু এই রাজনীতি মুক্ত শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অন্য মুখ্যমন্ত্রীদের আমন্ত্রণ না জানানো হলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন খোদ কেজরিওয়াল নিজে। আর তা নিয়েই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা।
“কোন বিরোধী নেতা নন বরং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন দিল্লির আমজনতা।বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান নিয়ে এমনটাই বলেছিলেন আম আদমি পার্টির অন্যতম নেতা মণীশ সিসোদিয়া। কিন্তু এই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদীকে নিজে আমন্ত্রণ জানালেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সূত্রের খবর প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন আম আদমি পার্টির সর্বেসর্বা। তবে ১৬ ফেব্রুয়ারি শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী রামলীলা ময়দানে উপস্থিত থাকবেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু কেজরিওয়ালের এই ধরনের সিদ্ধান্তে জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
আম আদমি পার্টির আরেক নেতা গোপাল রায় বেশ কয়েকটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অন্য কোন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বা রাজনৈতিক নেতাকে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। এটা শুধুমাত্র দিল্লির মানুষের অনুষ্ঠান হবে। বিদায় উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া জানিয়েছিলেন, দিল্লির প্রত্যেক নাগরিক তাদের ছেলে ও ভাইকে প্রাণ ভরে আশীর্বাদ করতে আসতে পারেন। তারা প্রত্যেকেই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানকে রাজনৈতিক না করে দিল্লিবাসীর উৎসবে পরিণত করতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই জন্যেই দিল্লির আমজনতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এই অনুষ্ঠানে। তবে অনুষ্ঠানে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ পেয়েছে খুদে মাফলার ম্যান যে কিনা ভোটের ফল প্রকাশের দিন থেকে ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
কিন্তু এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখা হল অথচ প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ফলে তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। জাতীয় রাজনীতিতে তেমনভাবে নামতে দেখা যায়নি কেজরিকে। শুধু দিল্লির উন্নয়নের উপর নির্ভর করে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরেছেন তিনি। জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ মুখ হয়ে ওঠার চেষ্টা করলেও পরে সে পথ থেকে সরে দাঁড়ান। কিন্তু এত কিছুর মধ্যে কেন প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানালেন তিনি তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে,তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এটা কি শুধুই রাজনৈতিক সৌজন্যতা? নাকি এর পেছনে রয়েছে কোন নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ।