এ রাজ্যে বামপন্থাকে পুনরুজ্জীবিত করতে শেষ পর্যন্ত দিল্লির ছাত্রনেত্রীর ওপরই ভরসা করতে হল বর্ষীয়ান বাম নেতাদের। গত 13 ফেব্রুয়ারি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে দিল্লির বামপন্থী নেত্রীকে দিয়ে সভা করার পরিকল্পনা করেও SFI-এর রাজ্য শাখা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি না পাওয়ায় তাকে সামনে রেখেই আন্দোলনে নামতে হল বিমান বসু ,সূর্যকান্ত মিশ্র এর মতন বর্ষীয়ান নেতৃবৃন্দকে ।
তথ্য অনুযায়ী, এ রাজ্যের বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের উদ্যোগে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এনআরসি, সিএএ বিরোধী সভা করার জন্য ঐশী ঘোষকে মুখ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের সভার অনুমতি না দিলে তার প্রতিবাদে বর্ষীয়ান বামপন্থী নেতারা এবং বাম মন ভাবাপন্ন একদল প্রতিষ্টিত ব্যক্তিদের নিয়ে কলেজস্ট্রিট থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিল করেন তারা।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং জাতীয় জনগণনাপঞ্জি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কলকাতাসহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে মিছিল ও জনসভা করে রীতিমতো সংবাদের শিরোনামে। একদা 34 বছর শাসন ক্ষমতায় থাকা বামপন্থীরা সেভাবে জনমানসে প্রভাব ফেলতে পারেনি। একইভাবে পিছিয়ে পড়েছে শতাব্দী প্রাচীন রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের পশ্চিমবঙ্গ শাখা। বাম এবং কংগ্রেস যৌথভাবে মাঠে নেমেও শাসক দল তথা মুখ্যমন্ত্রীর মত আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। সম্প্রতি জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সংর্ঘষের কিছু ঘটনায় সংবাদ শিরোনামে চলেআসে বামনেত্রী বাংলাভাষী ঐশী ঘোষ। তাকে মুখ করে কলকাতার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নতুন করে আন্দোলন করতে উদ্যোগী হয় বামপন্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহিরাগতদের রাজনৈতিক সভার অনুমতি বাতিল করলে রাস্তায় নামে প্রবীণ বাম নেতারা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, একদা শাসন ক্ষমতায় থাকা বামপন্থীরা কেন্দ্রের বিরোধিতায় রাজ্যের শাসক দল তথা মুখ্যমন্ত্রীর জনসভা আর মহামিছিলের কাছে অপাংক্তেয় হয়ে পড়েছে। সেই কারণে দিল্লি থেকে নেত্রী এনে, এ রাজ্যে সাংগঠনিক পুনরুজ্জীবনে উদ্দ্যোগী হয়েছে প্রবীন বাম নেতৃবৃন্দ। এ দিকে নিজেদের মৌরসিপাট্টা বজায় রাখতে স্বাভাবিকভাবে শাসক দল ন্যায়-নৈতিকতার প্রসঙ্গ তুলে এই আন্দোলনকে পিছিয়ে দিতে তৎপর হয়েছে। এই খানেই জমে উঠেছে NRC-CAA বিরোধীদের বিরোধিতার দ্বন্দ্ব।
2020-02-14