১৪ই ফেব্রুয়ারি ‘১৯ তারিখ কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় জম্মু শ্রীনগর জাতীয় সড়কের ওপর অবন্তীপোরার কাছে লেথপোরাতে পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ মদতে ইসলামী জঙ্গিগোষ্ঠী জৈশ-ই-মহম্মদের আত্মঘাতী আক্রমণে আমাদের CRPF এর ৪০ জন জওয়ান শহীদ হন। বিকেল ৩-১৫ মিনিট নাগাদ যখন CRPF কনভয় যাচ্ছিলো তখন ৩০০ কেজি বিস্ফোরক ভর্তি একটি গাড়ি এসে ধাক্কা মারে কনভয়ের একটি গাড়িতে আর সাথে সাথে ঘটে বিরাট বিস্ফোরণ। ঘটনার পর জৈশ-ই- মহম্মদ ঘটনার দায় স্বীকার করে বলে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী ইসলামিক নেতা বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর বদলা নিতেই তাদের এই কাজ। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য ২০১৬ সালে ভারতীয় সেনা বুরহান ওয়ানিকে এনকাউন্টারে মারে। জৈশ কমান্ডার সাজ্জাদ ভাট ছিলো ঐ আক্রমণকারি গাড়িটির মালিক, ভারতীয় সেনা অবশ্য এই ঘটনার পরে চিরুনি তল্লাশি করে আর এক জৈশ জঙ্গি সহ সাজ্জাদ কে এনকাউন্টারে মেরে দেয়।আপামর বিশ্ব এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তান এই ঘটনার জন্য বেশ কোনঠাসা হয়ে পরে।
পাকিস্তানের এই ইসলামী জঙ্গি গোষ্ঠী গুলো বরাবর ভারতে জঙ্গি কার্যকলাপ চালিয়ে এসেছে; এদের মূল উদ্দেশ্য ভারতে জঙ্গি কার্যকলাপ চালিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের উদ্দেশ্য সাধিত করা।
এই ঘটনার ১২দিনের মাথায় ভারতের বায়ুসেনা পাকিস্তানের ভিতর আকাশ পথে ৮০ কিমি প্রবেশ করে বালাকোটে ওদের জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় এবং ৩০০ জন জঙ্গি নিহত হয়।ভারতের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোও পুলওয়ামা ঘটনার নিন্দা করতে বাধ্য হলেও বালাকোটে ভারতীয় সেনার এয়ারস্ট্রাইক কে তারা কিছুতেই স্বীকৃতি দেয় না বরং এই সময় ভারতের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দেশের সেনা বাহিনী কে বিশ্বাস না করে পাকিস্তান কে বিশ্বাস করতে থাকে আর পাকিস্তানের সুরে সুর মিলিয়ে বিবৃতি দিতে থাকে যা আপামর ভারতবাসী ভীষণ খারাপ ভাবে নেয়। গোটা ভারত এই সময় সরকারের সিদ্ধান্তের পাশে দাঁড়ায় এবং সরকারের সাহসী পদক্ষেপের তারিফ করে।সারা দেশে এক অভূতপূর্ব জাতীয়তাবাদী আবহের বাতাবরণ তৈরি হয়ে যায় যা গত লোকসভা ভোটে দ্বিতীয়বার মোদী সরকার বিপুলভাবে ফিরে আসার পিছনে একটা বড় কারণ হিসেবে মনে করে রাজনৈতিক মহল।
এর আগেও দেখেছি মুম্বাই হামলা থেকে শুরু করে আরও অনেক জঙ্গি কার্যকলাপ আর এগুলোর সব কটাতে হাত আছে পাকিস্তানের ইসলামী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর; কিন্তু সেই সময়ের সরকার ঐ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে সাহস করতো না কারণ তাদের মুসলিম ভোট বেরিয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কা করতো আর তার সুযোগ বরাবর নিয়েছে পাকিস্তানের ইসলামী জঙ্গিগোষ্ঠী গুলো। গত ৬বছরে ভারতে বড়সড় জঙ্গি কার্যকলাপ সেভাবে করতে পারে নি পাকিস্তানের ইসলামী জঙ্গিগোষ্ঠী গুলো যেটা প্রায়শই করতো আগের সরকারের আমলে। মোদি সরকারের আমলে উরি আর পুলওয়ামা তে যে দুটো সন্ত্রাসী আক্রমন করেছে ওরা,তার জবাব সাথে সাথে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক আর এয়ার স্ট্রাইকের মাধ্যমে দিয়ে দিয়েছে আমাদের সেনা যেটা সম্ভব হয়েছে আমাদের বর্তমান সরকারের কড়া মনোভাবের জন্য। বর্তমান মোদি সরকার কখনো পাকিস্তানের মদতপুষ্ট ইসলামী জঙ্গিগোষ্ঠী গুলোকে রেয়াত করবে না তা প্রমাণ করে দেখিয়ে দিয়েছে। ভারতের সার্বিক অখন্ডতা বজায় রাখতে পাকিস্তানের এই সব ইসলামী জঙ্গি গোষ্ঠী গুলোকে চিরতরে শেষ করে দিতে আগামী দিনেও বর্তমান সরকার ব্যবস্থা গ্ৰহনে বদ্ধপরিকর।
সাত্যকি সিনহা