আবারও ভরাডুবি কংগ্রেসের। দিল্লির ভোটে কংগ্রেসের জামানত জব্দ। ৭০টির মধ্যে ৬৭টি আসনেই হাত-শিবিরের জানামত জব্দ। আগেও দিল্লি শাসনের অভিজ্ঞতা থাকলেও আপ-এর কাছে ফুৎকারে উড়ল হাত-শিবির। কোনওক্রমে কয়েকটি আসনে জিতে রাজধানীর অলিন্দের রাজনীতিতে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখল গেরুয়া শিবির।
দিল্লিতে পরপর ৩ বার ক্ষমতা ধরে রেখেছিল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের নেতৃত্বে যেমন ভরসা ছিল দলের নেতা-কর্মীদের, ঠিক তেমনই তাঁর উপর আস্থা রেখেছিলেন দিল্লিবাসী। তবে সেসব এখন অতীত। ভোটের প্রচারেও তেমন দাগ কাটতে পারেনি হাত-শিবির। সেভাবে কোনও ইস্যু নিয়েই ভোটারদের সামনে সওয়াল করতে দেখা যায়নি কংগ্রেসকে। উলটোদিকে, ততই প্রচার তীব্র করেছে গেরুয়া শিবির। আপ-কংগ্রেসকে বিঁধে একের পর এক তোপ দেগেছেন বিজেপি নেতারা।
রাজনৈতিক এই তরজার মধ্যে ঢোকেননি অরবিন্দ কেজরিওয়াল। গত ৫ বছরে তাঁর সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরে দিল্লিবাসীর কাছে ভোট চেয়েছেন। কেজরিকে ফেরায়নি দিল্লি। রাজধানীর বাসিন্দারা সমর্থন উজাড় করে দিয়েছেন আম আদমি পার্টির প্রার্থীদের। বিপুল ভোট পেয়ে আবারও দিল্লির মসনদে অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
দিল্লির ভোটের ফল প্রকাশে দেখা যাচ্ছে ৬৭টি আসনেই কংগ্রেস প্রার্থীর জামানত জব্দ হচ্ছে। কোনও নির্বাচনী কেন্দ্রের মোট ভোটের ছয় ভাগের এক ভাগ ভোটও কোনও প্রার্থী না পেলে তাঁর জামানত জব্দ হয়। বিধানসভা ভোটের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনে ১০ হাজার টাকা জমা রাখতে হয়। নির্বাচনী কেন্দ্রের মোট ভোটের ছয় ভাগের এক ভাগের কম ভোট পেলে ওই প্রার্থীর জামানত জব্দ হয়। জামানত জব্দ হলে কমিশনে জমা রাখা টাকা আর ফেরত পান না ওই প্রার্থী। দিল্লির মোট ৭০টি আসনের মধ্যে ৬৭টি কেন্দ্রেই কংগ্রেস প্রার্থীর জামানত জব্দ হয়েছে।
দিল্লিতে মাত্র তিনটি আসনেই তুলনামূলকভাবে বেশি ভোট পেয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থীরা। গান্ধীনগর, বদলি ও কস্তুরবানগরে জমানত জব্দ হওয়ার পরিস্থিতি এড়িয়েছে হাত-শিবির। এদিকে, দিল্লিতে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর পি চিদম্বরমের টুইট, ‘আপ জিতল, ধোঁকাবাজির পরাজয় হল। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন এসে দিল্লিতে বাস করেন। বিভেদ, ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতিকে হারিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। দিল্লির জনতাকে কুর্নিশ। দিল্লির এই রায় ২০২১ ও ২০২২-এর ভোটের আগে অন্য রাজ্যগুলির কাছেও একটি শিক্ষা।’
একইসঙ্গে লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরীও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। অধীর চৌধুরী বলেন, ‘উন্নয়নের এজেন্ডারই জয় হল। অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে শুভেচ্ছা। কংগ্রেসের কাছে এই ভোটে কোনও ইস্যুই ছিল না।’