ইন্দ্রেশ কুমার কাশীতে বিশ্বের প্রথম নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসের নামাঙ্কিত মন্দির উৎসর্গ করলেন

বারাণসী: নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসের ১২৩ তম জন্মবার্ষিকীতে বিশ্বের প্রথম নেতাজির মন্দিরের উদ্বোধন ও উৎসর্গ করার সময় প্রবীণ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রচারক এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক ইন্দ্রেশ কুমার বললেন যে এই মন্দিরটি দেশের মানুষকে আগামী দিনে অনুপ্রাণিত করবে মাতৃভূমির সেবার জন্য এগিয়ে আসতে ।

এই অনন্য মন্দিরের উদ্বোধন ও উৎসর্গীকরণ অনুষ্ঠানে পাতালপুরী মঠের মহন্ত বালাক দাসজিও উপস্থিত ছিলেন। এ উপলক্ষে উপস্থিত অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যে উল্লেখ্য এই মন্দিরের ভাবনার অন্যতম মূল রূপকার বিশাল ভারত সংস্থার সভাপতি ডাঃ রাজীব শ্রীবাস্তব, মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চের জাতীয় আহ্বায়ক বিরাগ পাচপুরে , নাগপুরের প্রবীণ সাংবাদিক সুশমা পাচপুরে , বিএইচইউ থেকে প্রফেসর আর এন পাঠক প্রমুখ।

এ উপলক্ষে জনসমাবেশে জনতাকে সম্বোধন করে ইন্দ্রেশ কুমার বলেন যে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস একজন একনিষ্ঠ দেশপ্রেমিক ছিলেন এবং সিঙ্গাপুরের প্রবাসে তিনিই প্রথম ভারত সরকার গঠন করেছিলেন যাকে তখন বেশ কয়েকটি দেশ স্বীকৃতি দিয়েছিল। নেতাজি পোর্ট ব্লেয়ারে ভারতের প্রথম স্বাধীন মাটিতে পা রাখেন এবং আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের নামকরণ করেছিলেন ‘শহীদ স্বরাজ দ্বীপ সমুহ’।

জাতীয় সুরক্ষা সচেতনতামূলক ফোরাম (এফএনএএস) – যার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ইন্দ্রেশ কুমার, প্রতি বছর ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে “শহীদ-স্বরাজ দ্বীপ সমুহ নানান যাত্রা” কর্মসূচীতে এই দ্বীপগুলিতে পরিদর্শন করেন। এই দ্বীপপুঞ্জের নাম বদল করে আজাদ হিন্দ সরকার ১৯৪৮ সালের ৩০ শে ডিসেম্বর – ইন্দ্রেশ কুমার বলেন ।

কাশী, ভারত এবং ভারতের বাইরে বিশ্বের কাছে মন্দির শহর হিসাবে বিখ্যাত। এখানে যে সমস্ত পর্যটক ধর্মীয় সফরে আসেন তারা এখন এই মন্দিরে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ‘দর্শন’ করতে পারবেন বলেন ইন্দ্রেশ কুমার।

অধ্যাপক রাজীব শ্রীবাস্তব, যিনি নেতাজি সুভাষ বসুর আদর্শের প্রতি নিবেদিত এবং বোসের মন্দির থাকার এই ধারণাটি প্রধান রূপকার , তিনি বলেন যে নেতাজির ছয়ফুট উঁচু এই মূর্তিটি ১১ ফুট উঁচু সোনার প্রলেপের শামিয়ানার নীচে একটি কালো গ্রানাইট খোদাই করে তৈরী করা হয়েছে। রমন ভারতবংশী ও রণধীর কুমার এই মূর্তির নিয়মিত পূজা ও আরতি করবেন।

শ্রীবাস্তব আরও বলেন যে এই মন্দিরটি ভারতকে নেতাজির স্বপ্নের দেশ হিসাবে গড়ে তুলতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দিকে কাজ করার জন্য সমস্ত লোকের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

মন্দিরটি সকাল ৭ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত সকলের কাছে দর্শনের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

প্রফেসর শ্রীবাস্তব, যিনি তাঁর বিশাল ভারত সংস্থার মাধ্যমে বেশ কয়েকটি সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রম পরিচালনাও করেছেন, তিনি মন্দিরের গঠন শৈলী বিশদে ব্যাখ্যা করে বলেন , “মূর্তিটি কালো গ্রানাইট দিয়ে তৈরি হলেও মন্দিরের সিঁড়িটি লাল এবং বেদীটি সাদা। লাল বিপ্লবের প্রতীক এবং শান্তির প্রতীক সাদা। বিপ্লব ছাড়া শান্তি হতে পারে না। কালো ক্ষমতার প্রতীক। স্বর্ণ ইতিবাচক শক্তি উৎপাদন করে। “

“নেতাজির এই মন্দির দেশপ্রেমের চেতনা জাগ্রত করবে। গর্ভবতী মহিলা যদি মন্দিরে গিয়ে দর্শন করেন তাহলে দেশপ্রেমিক শিশু জন্মগ্রহণ করবে” শ্রীবাস্তব বলেন।

“দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি দরকার যা কেবল নেতাজীর ধারণা থেকেই আসতে পারে। মন্দিরে, শুধুমাত্র সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকীতে নয়, প্রতিদিনই তাঁর স্মরণ করা হবে” এবং শ্রীবাস্তব আরও বলেন যে ভবিষ্যতে মন্দিরটির সম্প্রসারণ করা হবে এবং তিনি লামাহিকেই বেছে নিয়েছেন কারণ এই স্হান মুন্সী প্রেমচাঁদের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.