অথচ, নেই সঠিক পরিসংখ্যান। নেই আগাম বিপদ নির্ণয় করার কোন রূপরেখা। আর,বিপদ চিহ্নিত হলেও ওই সংবেদনশীল অবস্থাতে কীভাবে মা ও গর্ভস্ত ভ্রূণ বাঁচানো যায় তা জানা নেই অনেকেরই। আশঙ্কা থাকছে দুই প্রাণ নিয়ে।

ফলে, উদ্বেগে প্রসূতি বিষয়ক চিকিৎসকগণ। সময়ের সঙ্গে তা বাড়ছে কারণ, আক্রান্তের সংখ্যা ক্রম বর্ধমান। বিশেষত উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে। সমাধান সূত্রের খোঁজে গবেষণায় নেমেছেন দেশ বিদেশের হাতে গোনা কিছু চিকিৎসক। যাদের মধ্যে অন্যতম হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ মোহন মল্লিকার্জুনা রাও এডুপুগান্টি।

বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা সিটি ভেটেরান্স হসপিট্যালে হৃদরোগ বিভাগে কর্মরত। এছাড়াও তিনি সম্মানজনক আমেরিক্যান কলেজ অফ কার্ডিওলজির সহ আরো একাধিক হৃদরোগ চিকিৎসক সংগঠনের ফেলো। তিনি এই সংবেদনশীল বিষয়ে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, ভারতেও চিকিৎসক সমাজকে সচেতন করতে সক্রিয়।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, বর্তমানে মহিলারা পেশার তাগিদে দেরিতে ও বেশি বয়সে মাতৃত্বের দিকে যাচ্ছেন। এ ছাড়া কায়িক শ্রম কমেছে। বসে থেকে কাজের প্রবণতা বেড়েছে। অনেকেই বয়স ও উচ্চতা অনুপাতে বেশি মোটা। কেউ কেউ নিয়মিত ধূমপায়ী। দক্ষিণ ভারতে এক সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে প্রতি এক লাখ প্রসূতির মধ্যে ৪০০০ মহিলার এইরকম হৃদরোগ আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে।

কলকাতার বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, “এই মহিলারা গর্ভবতী হলে ঝুঁকি বেশি থাকে। ফলে বাড়তি সতর্ক থাকা জরুরি। শহরাঞ্চলে এইরকম দেরিতে এবং বেশি বয়সে মা হতে চাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।” এ নিয়ে একমত মোহনের আরো বক্তব্য, ” সঠিক সময় চিহ্নিত করলে মা এবং গর্ভস্থ সন্তান বাঁচানো সম্ভব।”

কী অভিনব কাজ করেছেন মনিপালের কস্তুরি মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তনী মোহন?

মোহন মল্লিকার্জুন রাও দাবি করেছেন যে গবেষণায় একটি বিশেষ অ্যালগোরিদম তৈরি করেছেন। যার সাহায্যে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থাকা প্রসূতিদের কীভাবে চিকিৎসা করে মা ও সন্তান বাঁচানো যায়। এমনকি ওই প্রসূতিদের অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করে বাঁচানোর কৌশল রপ্ত করেছেন। মোহনের গবেষণা ভারতের কার্ডিওলজিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার সম্পাদিত ইন্ডিয়ান হার্ট জার্নাল সম্প্রতি প্রকাশিতও হয়েছে।

সব মিলিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো এ দেশের প্রসূতি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা মানছেন যে বর্তমানে গর্ভাবস্থায় হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা বাড়ার সঙ্গে এ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোও অত্যন্ত জরুরি।।।

শ্রীরূপা পত্রনবিশ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.