সাংগঠনিক দিক থিকে ফের পুরনো অবস্থানে ফিরে গেল বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল। দলীয় নির্দেশে অবলুপ্তি ঘটল বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক তৃণমূলের। গোটা জেলায় একটিই মাত্র জেলা কমিটি কাজ করবে। বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি নির্বাচিত হলেন জেলা পরিষদের সহ সভাপতি শুভাশীষ বটব্যাল, কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব পেলেন রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা।
প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচনে জেলায় বিপুল ভরাডুবির পর সাংগঠনিকভাবে জেলাকে বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর এই দু’ভাগে ভাগ করা হয়। দলের তৎকালীন জেলা সভাপতি, বিধায়ক অরুপ খাঁকে সরিয়ে বাঁকুড়া জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় বর্ষীয়ান নেতা শুভাশীষ বটব্যালকে ও বিষ্ণুপুরের দায়িত্ব পান মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা। এরপর হারানো জমি পূনঃরুদ্ধারে নেমে পড়েন নবনিযুক্ত দুই জেলা সভাপতি। সাফল্যও মিলতে শুরু করে। লোকসভা ভোট পরবর্তী সময়ে বিজেপিতে নাম লেখানো দলীয় কর্মীরা ফের দলে ফিরতে শুরু করেন।
এই অবস্থায় ফের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই দুই জেলা কমিটিকে এককরে দিল তৃণমূল। এর পিছনে ঠিক কি কারণ রয়েছে তা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি নন দলের জেলা শীর্ষ নেতৃত্বের কেউই। সদ্য জেলা সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া শুভাশীষ বটব্যাল ও কার্যকরী সভাপতি শ্যামল সাঁতরা দু’জনেই ‘দল যে দায়িত্ব দেবে তা অক্ষরে অক্ষরে পালন’ করার কথাই জানিয়েছেন।
লোকসভা ভোটে জেলার দু’টি কেন্দ্রই হাত ছাড়া হয় শাসক দলের। সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে একেবারে প্রথম স্থানে উঠে আসে বিজেপি। এই প্রথম লোকসভা ভোটে বিপুল সাফল্য গেরুয়া শিবিরের। আর আগামী কয়েক মাসের মধ্যে জেলার তিন পুরসভায় ভোট।
একদিকে তৃণমূল ঐ তিন পৌরসভা নিজেদের দখলে রাখতে মরিয়া, অন্যদিকে লোকসভা ভোটের ফলাফলে উজ্জীবিত বিজেপিও শাসক দলের কাছ থেকে পৌরসভা গুলি ছিনিয়ে নিতে উঠে পড়ে লেগেছে। বাম শিবিরও পিছিয়ে নেই। শাসক বিরোধি আন্দোলন তীব্র করেছে তারাও। এই পরিস্থিতিতে আগামী পুরভোটে জেলায় ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা প্রবল থেকে প্রবলতর। ঠিক সেই মুহূর্তে বিজেপিকে আটকাতে একটি মাত্র জেলা কমিটি গঠন করে কৌশলী চাল দিল শাসক শিবির। এমনটাই মনে করছেন জেলা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।