উত্তর ২৪ পরগণার বসিরহাটের একটি স্কুলে জোর করে ৮ বছর আগে সরস্বতী পুজো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এবার পড়ুয়াদের একাংশ ফের ওই পুজো শুরু করতে উদ্যোগী হয়েছে। এ নিয়ে দেখা দিয়েছে উত্তেজনা। শুক্রবার পুজোর অনুকূল পরিবেশ তৈরির দাবিতে বিক্ষোভ দেখায়।
শালিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে চৌহাটা আদর্শ বিদ্যাপীঠ (উচ্চ মাধ্যমিক) স্থাপিত হয় ১৯৬৮ সালে। ওই স্কুলের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র সোমনাথ বিশ্বাস এই প্রতিবেদককে বলেন, “শুরু থেকেই সেখানে সরস্বতী পুজো হত। কিন্তু আট বছর ধরে বন্ধ। ২০১১ সালে স্কুলে নবী দিবস উদযাপনের দাবি করে ছাত্ররা। কর্তৃপক্ষ অনুমতি না দেওয়ায় এক শ্রেণীর ছাত্র সরস্বতী পুজো বন্ধ করে দেয়। ঠাকুর বাইরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করে সোমনাথ। সেই ঘটনায় দু’পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়।
সোমনাথের দাবি, এরপর প্রতিবছর পড়ুয়ারা স্কুলে সরস্বতী পুজো করার চেষ্টা করছে। কিন্তু বেশ কিছু ছাত্র তাতে বাধা দিচ্ছে। বিষয়টি আমরা স্থানীয় ব্লক সভাপতি এবং স্কুল কমিটির সভাপতি তৃণমূলের বিমল মন্ডলকে জানিয়েছি। তিনি আমাদের বলেছেন, পারলে কর। স্কুল কমিটির সদস্য আসাদুল মোল্লা (বুলা)-র সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, রাজনীতিকরা স্কুলের সমস্যায় থাকতে চাই না। কেউ সরস্বতী পুজো করার জন্য নিশ্চিত নিরাপত্তার আশ্বাস দিচ্ছেন না।”
স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিমাংশু শেখর মন্ডলকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, “আমি স্বরূপনগর চারঘাট মিলন মন্দির বিদ্যাপীঠ প্রধান শিক্ষক ছিলাম। গত জুলাই মাসে এই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছি। এই স্কুলে সরস্বতী পুজো করার জন্য আবেদন করেছে। আমি স্কুল ম্যানেজমেন্টকে জানিয়েছি। তারা এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানাননি। শুনেছি হিন্দু-মুসলমান গণ্ডগোলে পুজো বন্ধ আছে। আমি প্রস্তাব দিয়েছি স্কুলের সরস্বতী পুজো এবং নবী দিবস দুটোই যদি শান্তিপূর্ণ ভাবে করা যায় তাহলে ভালো হয়। এর জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখতে হবে। স্কুলে সংখ্যা ১,৭৪৯। এর ৭৫ শতাংশ মুসলমান, ২৫ শতাংশ হিন্দু। পড়ুয়াদের অধিকাংশই ছাত্রী।“
অশোক সেনগুপ্ত