কে ‘খুন’ করেছিল লাল বাহাদুর শাস্ত্রীকে?
প্রশ্ন যথেষ্ট বিতর্কিত। কিন্তু সেই প্রশ্নই তোলা হয়েছে, এবং তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা হয়েছে ‘দ্য তাশকেন্ত ফাইলস’ ছবিতে। সবচেয়ে বড় কথা বিবেক অগ্নিহোত্রি পরিচালিত আসন্ন মুক্তি ‘দ্য তাসকেন্ত ফাইলস’-এ ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রীর খুনিকে খুঁজেছেন স্বয়ং মিঠুন চক্রবর্তী। মিঠুনই এ ছবির অন্যতম চরিত্রাভিনেতা। যে মিঠুন কিছুদিন আগেও অতি অসুস্থ বলে খবর ছিল, চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন বলেও জানা গিয়েছিল। যাই হোক, মিঠুনের এই কামব্যাক জেনে আশা করা যায় অধিকাংশ বাঙালি তথা ভারতীয়ই খুশি। কিন্তু ভারতীয় ছবির অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনেতা তাঁর থার্ড ইনিঙ-এ নামছেন তুমুল বিতর্কিত সিনেমায়! কেন?
কারণ সরকারি তথ্য অনুযায়ী ‘জয় জওয়ান জয় কিষান’ নেতা শাস্ত্রীর মৃত্যু হয় হৃদরোগে। লোকমুখে প্রচারিত তাঁর গলায় মাংসের হাড় আটকে যাওয়ার গল্প। আসল কথা হল, ভারত-পাকিস্তানের চূড়ান্ত সেনসেটিভ কূটনৈতিক সময় আচমকাই মৃত্যু হয় শাস্ত্রীর।
১৯৬৬ সালের ১১ জানুয়ারি তাশখণ্ডে শাস্ত্রী প্রয়াত হন। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ বিরতিতে ১৯৬৬ সালের ১০ জানুয়ারি জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় তাশখণ্ড চুক্তি সাক্ষরিত হয়। তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আয়ুব খানের মধ্যে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি সাক্ষরিত হয়। কিন্তু ঐতিহাসিক যুদ্ধ শেষের ঠিক পরদিন হঠাৎই মৃত্যু হয় লালবাহাদুর শাস্ত্রীর। তখনকার মতো জানা যায়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। যদিও তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ময়নাতদন্ত হয়নি। এদিকে পরে লালবাহাদুর শাস্ত্রীর পুত্র সুনীল শাস্ত্রী দাবি করেন, তিনি তাঁর বাবার শরীরের বেশ কয়েক জায়গায় নীলচে আঘাতের চিহ্ন দেখেছিলেন। এছাড়াও পিতার শরীরের নিচের অংশে কাটা দাগ দেখেন তিনি। যদিও কংগ্রেস সরকারের আমলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা এগোয়নি। বরং তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্ট হয় বলে অভিযোগ। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ফের একবার লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যু রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা শুরু হয়েছে। এমত আবহাওয়ায় নির্বাচনী মরসুমে মুক্তি পেতে চলেছে মিঠুন চক্রবর্তী অভিনীত, বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত ‘দ্য তাসকেন্ত ফাইলস’।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিককালে বলিউডে রাজনৈতিক সিনেমার ঝড় বইতে শুরু করেছে ৷ ইতিমধ্যে মুক্তি পেয়েছে ‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’, ‘ঠকরে’। সামনেই মুক্তি পাওয়ার কথা বিবেক ওবেরায় অভিনীত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বায়োপিক। আর এক্কেবারে নয়া সংযোজন ‘দ্য তাসকেন্ত ফাইলস’৷ যার পোস্টার ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে। লোকসভা ভোটের আগেভাগে লালবাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যু রহস্য নিয়ে বিতর্ক উস্কে দেওয়া ছবিটিকে নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তর্যা।