ধর্মের বিভেদ না মানলে সীমান্ত বিভাজনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন অরুণ কুমার

ধর্মের বিভেদ না রাখতে চাইলে সীমান্তের বিভাজনের প্রয়োজন কী? এনআরসি, সিএএ-জনিত বিতর্কের মাঝে এই প্রশ্ন জনতার হাতে তুলে দিলেন জম্মু ও কাশ্মীর স্টাডি সেন্টারের অধিকর্তা (মার্গদর্শক) অরুণ কুমার। প্রেক্ষাগৃহে সমবেতদের করতালি স্বাগত জানাল ওই প্রশ্নকে। নানা যুক্তি-সহকারে তিনি প্রতিষ্ঠিত করলেন একটা সরল সত্য। তা হল, এক রাষ্ট্র, এক সংস্কৃতির ভারতে এনআরসি, সিএএ-র প্রয়োজনীয়তা প্রশ্নাতীত।

অরুণ কুমার বলেন, কেবল ভাষা, ধর্ম একটা রাষ্ট্রের পরিচয় হতে পারে না। আমাদের প্রধান এবং মূল পরিচয় আমরা ভারতবাসী। যাঁরা এ ব্যাপারে ধর্মের দ্বিচারিতার কথা তুলছেন, তাঁদের উদ্দেশ্যে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের নির্যাতিত নির্যাতিত ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তখন কে প্রতিবাদ করেছিলেন? ১৯৫৬-তে পাকিস্তান ইসলামি রাষ্ট্র হয়ে গেল। শুরু হয়ে গেল ওদেশের অন্য ধর্মাবলম্বীদের গোলামির জীবন। এর পর বিভিন্ন পর্যায়ে দীর্ঘ আলোচনা এবং সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে সংশ্লিষ্ট আইন প্রনয়ন হয়েছে। নাগরিক আইনের রূপায়ণ তাই আমাদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব।

‘বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে ভারতের রূপান্তর’ শীর্ষক আলোচনার বক্তা হিসাবে পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি
কেন্দ্রে অরুণবাবু এই বক্তৃতা দেন। ‘ভারত বিকাশ পরিষদ’ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন নন্দলাল সিংহানিয়া। তিনি বলেন, মকর সংক্রান্তির পূন্য তিথিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এই দিন কেবল লক্ষ লক্ষ পূন্যার্থী গঙ্গাসাগরে পূন্যস্নান করেন না, দেশের নানা স্থানে কোথাও পোঙ্গল, কোথাও বিহু নামে বিভিন্ন সনাতন আচার পালন করেন। আজ নাসা যে সব সিদ্ধান্তে আসছে বহু আগে তুলসিদাস লিখে গিয়েছেন, ‘হনুমান চালিসা’য় লেখা হয়েছে। স্বামী বিবেকানন্দর আদর্শ মেনে এগিয়ে চলেছে এই পরিষদ।

উদ্যোক্তা সংগঠনের অন্যতম কর্মাধ্যক্ষ ঘনশ্যাম শুক্লা বলেন, আমাদের ১৮টি শাখার ৬৫০ সদস্য নানাভাবে সমাজসেবার কাজে রত। খন্ন্যানের কাছে একটি গ্রাম এই কারণে অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের প্রাক্তন মহানির্দেশক দীনেশ বাজপেয়ী। তিনি বলেন, বিশ্ব মানচিত্রে অতীতের ভারতের অবস্থান ছিল অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক স্থানে। চিন বা প্রতিবেশী কোনও দেশ তো বটেই আজকের পশ্চিমী উন্নত রাষ্ট্রগুলোও অনেক কিছু শিখেছে এ দেশ থেকে। ভারতকে আবার জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন নিতে হবে।

আলোচনার শুরুতে অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ‘ঋতম’-এর দিকনির্দেশ করেন। তিনি বলেন, আপাতত ১৫টি ভাষায় দৈনিক দেড়শর ওপর খবর ও ভাষ্য থাকছে এতে। এর মধ্যে বাংলায় প্রতিদিন থাকছে কমবেশি ৩৫টি খবর। সমবেতদের তিনি ‘ঋতম’-এর নিয়মিত শরিক হওয়ার আবেদন করেন।

এ দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শহরের আমন্ত্রিত মান্যগন্যরা। অনুষ্ঠানের শুরু ও শেষে পরিবেশিত হয় ‘বন্দেমাতরম‘ এবং জনগণমন অধিনায়ক গান।

ছবি
অশোক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.