বুধবার ভোর থেকে গঙ্গাসাগরে শুরু পুণ্যস্নান। তবে অন্যবারের মতো এবার হাড়কাঁপানো শীতে মকর স্নান হচ্ছে না। বরং গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার গঙ্গাসাগরে ঠান্ডার দাপট বেশ কম। খানিকটা মনোরম পরিবেশেই সাগরে পুণ্যলাভের আশায় ডুব দিচ্ছেন লাখো-লাখো পুণ্যার্থী। বুধবার ভোর ২.৫০ মিনিট থেকে গঙ্গাসাগরে শুরু হয়েছে পুণ্যস্নান। পুণ্যস্নান চলবে বৃহস্পতিবার ভোররাত পর্যন্ত।
প্রায় ৩০-৪০ লক্ষ মানুষের ভিড়ে জমজমাট গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণ। কপিলমুনির আশ্রমে উপচে পড়া ভিড়। এরাজ্যে তো বটেই ভিনরাজ্য থেকে লক্ষ-লক্ষ পুণ্যার্থীর ভিড়ে থিক-থিক করছে পুণ্যভূমি গঙ্গাসাগর। বুধবার ভোররাত থেকে গঙ্গাসাগরে শুরু হয়েছে পুণ্যস্নান। কপিলমুনির আশ্রমে পুজো দিয়ে গঙ্গায় স্নান সারছেন পুণ্যার্থীরা। যে কোনওরকম দুর্ঘটনা এড়াতে পাঁচ হাজার পুলিশকর্মী, ১২০০ সিভিল ডিফেন্স স্বেচ্ছাসেবী এবং পাঁচ হাজার স্বেচ্ছাসেবী সাগরমেলা প্রাঙ্গণে মোতায়েন রয়েছেন। রাখা হয়েছে হেলিকপ্টার পরিষেবাও। একইসঙ্গে নিয়মিত মেলার উপর নজরদারি চালাচ্ছে একাধিক ড্রোন। গঙ্গায় ঘুরছে অসংখ্য স্পিডবোটও।
গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণের কোথাও এখন তিলধারণের জায়গা নেই। বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, ছত্তীশগড়-সহ একাধিক রাজ্য থেকে প্রতি বছরের মতো এবারও লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর ভিড় গঙ্গাসাগরে। এক কথায় গঙ্গাসাগর এখন যেন মিনি ভারত। বহু ভাষাভাষির মানুষের মিলনক্ষেত্র হয়ে উঠেছে বাংলার এই পুণ্যভূমি।
ভিড় এড়াতে মঙ্গলবার সন্ধে থেকেই গঙ্গাসাগরে স্নান সারতে শুরু করেছেন পুণ্যার্থীরা। উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা এক বৃদ্ধ দম্পতিও স্নান সেরেছেন মঙ্গলবার সন্ধেয়। পুণ্যস্নানের পুণ্যলগ্ন শুরুর আগেই স্নান সেরে নেওয়া প্রসঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন, পুণ্যস্নান শুরুর সঙ্গে-সঙ্গে গঙ্গাসাগরে উপচে পড়বে ভিড়। অত ভিড়ে বৃদ্ধ বয়সে স্নান সারতে অসুবিধা হবে। আর তাই কপিলমুনির আশ্রমে পুজো দিয়েই আগেভাগেই সাগরে স্নান সেরেছএন ওই দম্পতি।
বুধবার ভোর থেকেই গঙ্গাসাগরের পাড় লোকে লোকারণ্য। লক্ষ-লক্ষ পুণ্যার্থীর ভিড়ে জমজমাট পুণ্যভূমি গঙ্গাসাগর। প্রবল উৎসাহে মানুষ সারছেন পুণ্যস্নান। প্রতি বারের মতো মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নানে গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণে কড়া পুলিশি প্রহরার ছবিটা এবারও একই রয়েছে। কোনওরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মোকাবিলায় সতর্ক রয়েছেন পুলিশকর্মীরা। সাগরে ক্রমাগত টহল দিচ্ছে স্পিডবোট। বুধবার দিনভর গঙ্গাসাগরে চলবে পুণ্যস্নান।