পশ্চিমবঙ্গ-সহ ভারতের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি বাংলাদেশি হিন্দু শরণার্থীরা! অবিলম্বে তাঁদের মুক্তির কথা জানিয়ে দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতে কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারের থেকে রিপোর্ট তলব করল। কত জন বাংলাদেশি হিন্দু এ রাজ্যের কারাগারে আটক রয়েছেন, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে বাংলাদেশি হিন্দু শরণার্থীদের ভারতে আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের নিজস্ব আইন কী ভাবে বাস্তবায়িত করার পরিকল্পনা করেছে, তা আদালতে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রকে।
শুধু বাংলাদেশ নয়, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান থেকে ভারতে আসা হিন্দুদের নানা অজুহাতে ভারতের বিভিন্ন জেলে আটকে রাখা হয়েছে, এমন অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন গোপাল গয়ালির নামে এক ব্যক্তি। তাঁর পক্ষের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারির বক্তব্য, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দুদের কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। নিম্ন আদালতে জামিন পাচ্ছেন না তাঁরা। অবিলম্বে যেন তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়, সে ব্যাপারে হাই কোর্টের হস্তক্ষেপের আবেদন করেন মামলাকারী।
শুক্রবার হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। মামলাকারীর বক্তব্য, ভারতের নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪-র আগে এ দেশে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান, শিখ এবং পার্সিদের নাগরিকত্ব প্রদানের কথা বলা হয়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সেই কথা জানিয়েছিল কেন্দ্র। শুধু তা-ই নয়, ওই আইনে আরও বলা হয়, ওই সব বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা হিন্দু শরণার্থীদের বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের করা যাবে না।
শুনানিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, এ ব্যাপারে কেন্দ্রকে জানাতে হবে, তারা ওই আইন বাস্তবায়িত করার জন্য কী পরিকল্পনা করেছে। পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে বন্দি বাংলাদেশি হিন্দুদের সম্পর্কে রিপোর্ট দিতে বলেছে আদালত। রাজ্য এবং কেন্দ্র— দুই সরকারকেই দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

