বিশ্বকাপ জেতার পরই দুঃসংবাদ! বাড়ি ফেরার জন্য ছটফট করছেন অলরাউন্ডার, কী হয়েছে ম্যাচ জেতানো ক্যাচ ধরা আমনজ্যোতের?

তৃতীয় বারের চেষ্টায় লরা উলভার্টের ক্যাচটা তালুবন্দি করে রবিবার রাতে ১৪০ কোটি মানুষকে স্বস্তি দিয়েছিলেন আমনজ্যোৎ কৌর। দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক বিশ্বকাপ ফাইনালে শতরান করার পরও ব্যাট তোলেননি! একার হাতে ট্রফি ছিনিয়ে যাওয়ার সংকল্পে দৃঢ় উলভার্টকে সাজঘরে ফিরতে বাধ্য করার সময়ও আমনজ্যোৎ জানতেন না পারিবারিক উদ্বেগের কথা। বিশ্বজয় করার পর তিনি জেনেছেন ঠাকুমা ভগবন্তী কৌরের হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা।

মহিলাদের এক দিনের বিশ্বকাপের মাঝেই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন ভগবন্তী। বাড়ির কেউ তা জানতে দেননি বিশ্বকাপার মেয়েকে, পাছে তিনি বিচলিত হয়ে পড়েন। পারফরম্যান্সে প্রভাব পড়ে। বাড়ির সকলে ক’দিন ধরে যখন মোহালির হাসপাতালে দৌড়ঝাঁপ করছিলেন, আমনজ্যোৎ দৌড়োচ্ছিলেন বিশ্বকাপ জয়ের লক্ষ্যে। ২৫ বছরের ব্যাটিং অলরাউন্ডার বিশ্বকাপে ১৪৬ রান করেছেন। নিয়েছেন ৬ উইকেট। দেশকে বিশ্বকাপ দেওয়ার পর জানতে পেরেছেন ঠাকুমার অসুস্থতার কথা।

ছোট থেকেই ঠাকুমার ন্যাওটা আমনজ্যোৎ। এক মুহূর্তও ঠাকুমাকে কাছছাড়া করতে চান না। ভারতীয় অলরাউন্ডারের বাবা ভূপিন্দর সিংহ বলেছেন, ‘‘মোহালির ফেজ় ফাইভে আমাদের বাড়ির ঠিক পাশের পার্কে ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলত আমনজ্যোৎ। প্রায়দিনই ঠাকুমার সঙ্গে যেত খেলতে। বাড়ির বারান্দা থেকে বা পার্কে বসে নাতনির খেয়াল রাখতেন মা। ও ছোট থেকেই মায়ের ছায়াসঙ্গী। ওর শক্তি। ব্যবসার কাজে আমি বালোঙ্গি গেলে মায়ের কাছেই থাকত আমনজ্যোৎ। মা-ই ওর সব সামলাতেন। গত মাসে মা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আমরা কেউ আমনজ্যোৎকে জানাইনি। বাড়ির কেউ চাইনি বিশ্বকাপের সময় ওর মন ক্রিকেট থেকে সরে যাক।’’ ভূপিন্দর আরও বলেছেন, ‘‘মায়ের চিকিৎসার জন্য বিশ্বকাপের সময় বেশ কয়েক দিন বেশ ব্যস্ত ছিলাম। হাসপাতালে যাওয়া-আসা করতে হয়েছে। কঠিন এই সময়ে আমনজ্যোতের বিশ্বকাপ জয় আমাদের ক্ষতে খানিকটা হলেও প্রলেপ দিল।’’ ভূপিন্দর জানিয়েছেন, পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলা শুরু আমনজ্যোতের। তাঁর ক্রিকেটার হওয়ার সবচেয়ে বড় সমর্থক ছিলেন ঠাকুমাই।

ফাইনালের পর ঠাকুমার অসুস্থতার কথা জেনেছেন আমনজ্যোৎ। চাইছেন যত দ্রুত সম্ভব মোহালি ফিরে ঠাকুমার কাছে যেতে। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা ক্রিকেটের সব ফরম্যাটে বিশ্বের সর্বত্র আধিপত্য বিস্তার করতে চাই। এখানে থাকা সকলকে, আমার পরিবার, কোচদের অভিনন্দন। ফাইনাল দেখতে দলের সকলের পরিবার এসেছে মুম্বইয়ে। আমার পরিবারের সকলে বাড়িতে টেলিভিশনেই খেলা দেখেছে। ঠাকুমার শরীর ভাল নেই। তাই ওরা কেউ আসতে পারেনি।’’ মুম্বইয়ে আনুষ্ঠানিকতার পর্ব মিটলেই মোহালির উদ্দেশে রওনা দেবেন আমনজ্যোৎ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.