জিতেই সুপার কাপে অভিযান শুরু করল মোহনবাগান। শনিবার ফতোরদা স্টেডিয়ামে তারা ২-০ গোলে হারিয়ে দিল চেন্নাইয়িন এফসি-কে। দু’টি গোলই করলেন অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার জেমি ম্যাকলারেন। ইস্টবেঙ্গল যে দিন ডেম্পোর কাছে আটকে গেল, সে দিনই জিতে শুরুতেই বাড়তি সুবিধা পেয়ে গেল মোহনবাগান।
তিন বিদেশিকে দিয়ে প্রথম একাদশ সাজিয়েছিলেন হোসে মোলিনা। টম অলড্রেড, আলবের্তো রদ্রিগেস এবং ম্যাকলারেনকে রেখেছিলেন। শুরুতে চেন্নাইয়িন একটি ফ্রিকিক পেলেও বাগানের রক্ষণ তা বিপন্মুক্ত করে। মোহনবাগান চেষ্টা করছিল লম্বা বলে খেলতে। বাঁ দিক থেকে শুভাশিস বসুর একটি ক্রস ধরে ফেলেন চেন্নাইয়িনের গোলকিপার নওয়াজ়।
এর পর মোহনবাগান চেষ্টা করতে থাকে দুই প্রান্ত কাজে লাগানোর। ডান দিক থেকে মনবীর সিংহ এবং বাঁ দিক থেকে লিস্টন কোলাসো আক্রমণ করতে থাকেন। মিনিট দশেক পরেই জোরে বৃষ্টি নামে। বেশ অনেক ক্ষণ বৃষ্টি চলার কারণে মাঠের কিছু জায়গায় জল জমে যায়। ফলে মোহনবাগান ফুটবলারদের পাস খেলতে সমস্যা হচ্ছিল। তবে চেন্নাইয়িনের তুলনায় আক্রমণ তাদেরই বেশি হচ্ছিল।
বেশি চোখে পড়ছিল মনবীরকে। চোট সারিয়ে ফেরা এই ফুটবলার নিজেকে প্রমাণ করতে মরিয়া ছিলেন। চেন্নাইয়ের রক্ষণ ভেঙে বার বার বক্সের কাছাকাছি চলে যাচ্ছিলেন। তবু গোল আসছিল না। ভাল একটি সুযোগ এসেছিল ৩১ মিনিটে। মাঝমাঠে বল পেয়েছিলেন সাহাল সামাদ। তিনি চেন্নাইয়ের বক্সের দিকে দৌড়তে থাকেন। প্রায় গোল করেই ফেলেছিলেন। শেষ মুহূর্তে তাঁকে আটকে দেন প্রীতম কোটাল। বল অনিরুদ্ধ থাপার কাছে যায়। তাঁর থেকে বল কেড়ে নেন বিগ্নেশ।
চার মিনিট পরে গোলের সুযোগ পেয়েছিল চেন্নাইয়িন। মন্দার রাও দেসাইয়ের নেওয়া কর্নার ক্লিয়ার করেছিলেন আলবের্তো রদ্রিগেস। ফিরতি বল যায় লালডিনলিয়ানার কাছে। তাঁর থেকে বল পেয়ে জিতেশ্বর সিংহ শট নিয়েছিলেন। নিশ্চিত গোল বাঁচান বিশাল কাইথ।
৩৮ মিনিটে এগিয়ে যায় মোহনবাগান। লালডিনলিয়ানাকে কাটিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন লিস্টন। তিনি পাস দেন ম্যাকলারেনকে। অসি স্ট্রাইকার অর্ধেক সুযোগ থেকে গোল করেন।
দ্বিতীয়ার্ধেও শুরু থেকে দাপট বজায় রাখে মোহনবাগান। ম্যাকলারেনকে বেশি সক্রিয় লাগছিল। কখনও অনিরুদ্ধ, কখনও লিস্টনের সঙ্গে পাস খেলে ওঠার চেষ্টা করছিলেন। বিদেশি ছাড়া খেলতে নেমেও বাগানকে আটকানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছিল চেন্নাই।
ম্যাকলারেন দ্বিতীয় গোল করেন ৬৭ মিনিটে। শুভাশিস লম্বা পাস দিয়েছিলেন মনবীরের উদ্দেশে। বাঁ প্রান্ত ধরে দৌড়ে বক্সে বল ভাসান মনবীর। সেই বল আটকাতে গিয়ে ম্যাকলারেনের সামনে থাকা ডিফেন্ডার পিছলে পড়ে যান। চলতি বলে বাঁ পায়ের শটে গোল করেন ম্যাকলারেন।
৭৫ মিনিটে আবার এগিয়ে যেতে পারত মোহনবাগান। বক্সের কাছে বল পেয়েছিলেন মনবীর। নিজে গোল না করে লিস্টনকে পাস দেন। সেটি আটকে দেয় চেন্নাইয়ের রক্ষণ। ফিরতে বল মনবীরের কাছে এলেও গোলমুখ তত ক্ষণে বন্ধ করে দিয়েছিল চেন্নাই। মনবীর পাস দেন অনিরুদ্ধকে। সেই শটে গোল হয়নি। দশ মিনিট পরে জেসন কামিংসও বাঁ পায়ের বাঁকানো শটে গোল করতে গিয়েছিলেন। তবে দুর্বল শট অনায়াসে ধরে নেন নওয়াজ়। শেষ দিকে চেন্নাই একটি সুযোগ পেলেও গোল করতে পারেনি।

